তালেবান কাবুল দখলের পর প্রথম ২৪ ঘণ্টায় শহরটিকে যতটা নিরাপদ করে তুলেছে, আফগানিস্তানের আগের প্রশাসনের অধীনে রাজধানী এতটা নিরাপদ ছিল না বলে মন্তব্য করেছেন দেশটিতে রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত দিমিত্রি ঝিরনভ। আফগান পরিস্থিতি নিয়ে পশ্চিমা দেশগুলোর উদ্বেগের মধ্যেই সোমবার তিনি এ কথা বলেছেন। খবর রয়টার্সের।
মস্কোর ইখো মস্কভি রেডিও স্টেশনের সঙ্গে কথোপকথনে ঝিরনভ বলেছেন, এখন পর্যন্ত তালেবান যে আচরণে করেছে, তাতে তিনি সন্তুষ্ট। রুশ রাষ্ট্রদূত বলেন, তাদের মনোভাব ‘ভালো, ইতিবাচক ও যথাযথ।’
সোমবার বলেন ঝিরনভ আরও বলেন, ‘গতকাল (গনির) শাসন তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়ে। ওই বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি, ক্ষমতায় কেউ না থাকার সুযোগে লুটেরারা রাস্তায় নেমে আসে’।
তিনি জানান, রোববার প্রথমে তালেবানের নিরস্ত্র ইউনিট রাজধানীতে ঢোকে এবং সরকার ও মার্কিন বাহিনীকে তাদের অস্ত্র জমা দিতে বলে। গানি পালিয়ে যাওয়ার পর এক পর্যায়ে সশস্ত্র মূল ইউনিটগুলো ভেতরে প্রবেশ করে।
তালেবান যোদ্ধারা এখন রাশিয়ার দূতাবাসের বাইরে আছে, তাদের সঙ্গে দূতাবাসের নিরাপত্তা বিষয়ে বিস্তারিত আলাপ হবে বলেও জানিয়েছেন ঝিরনভ।
এদিকে তালেবান আফগানিস্তান দখলের লড়াইয়ে তাদের বিজয় ঘোষণার দুদিন পর সেখানে যেসব ঘটনা ঘটেছে তার জন্য আমেরিকাকে দায়ী করে তীব্র সমালোচনা প্রকাশিত হয়েছে রাশিয়ায় আজকের সংবাদপত্রগুলোতে।
সরকারি সংবাদপত্র রসিইসকায়া গেজেটায় পররাষ্ট্র নীতি বিষয়ক বিশ্লেষক ফিয়োদোর লুকিয়ানফ দেশটির ঘটনাবলীকে একটা ‘চরম বিশৃঙ্খলা’ বলে বর্ণনা করেছেন।
তিনি বলেছেন, ‘আমেরিকার মদতপুষ্ট প্রশাসন তাসের ঘরের মত ভেঙে পড়েছে। আমেরিকানরা ঘরে ফেরেনি, তারা পালিয়েছে।’
এদিকে তালেবান তাদের যোদ্ধাদের নির্দেশ দিয়েছে যেন তারা কারও বাড়িতে প্রবেশ না করে এবং রাস্তায় কোন দূতাবাসের গাড়ি চলাচলে বাধা না দেয়, বিশেষ করে রাজধানী কাবুলে। এই নির্দেশ জারি করেছেন তালেবানের উপনেতা মোলাভি ইয়াকুব।
তালেবান আফগানিস্তানে তাদের কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা শুরু করেছে। সব সরকারি কর্মচারীদের তারা কাজে ফিরতে বলেছে এবং তাদের জন্য সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করেছে। যারা লুটপাটের সাথে জড়াবে ধরা পড়লে তাদের কঠোর শাস্তির হুঁশিয়ারি দিয়েছে তালেবান।
কাবুলের অনেক জায়গায় আজ রুটির এবং ওষুধের দোকান খুলেছে এবং রাস্তা ঘাটে আরও বেশি গাড়ি চলাচল করতে দেখা যাচ্ছে।
কাবুলে একটি টিভি অনুষ্ঠানে দেখা গেছে একজন নারী উপস্থাপক একজন তালেবান নেতার সাক্ষাৎকার নিচ্ছেন। তালেবান বিশ বছর আগে যখন ক্ষমতায় ছিল তখন এটা অকল্পনীয় ছিল। প্রথম সারির টিভি চ্যানেল, তোলো নিউজ তাদের এক নারী সংবাদদাতার ছবি টুইট করেছে, যেখানে দেখা যাচ্ছে তিনি রাস্তায় ঘুরে ঘুরে রিপোর্টিং করছেন।
খুলনা গেজেটে/এএ