যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক সংবাদ মাধ্যম ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল খবর প্রকাশ করেছে যে, কাবুল বিমান বন্দরের প্যাসেঞ্জার টার্মিনালে সোমবার গুলিতে অন্তত পাঁচজন নিহত হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে ওই পত্রিকায় বলা হয়েছে, তিনজনের রক্তাক্ত দেহ মাটিতে পড়ে থাকতে দেখেছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা। তবে কে বা কারা গুলি চালিয়েছে, তা উল্লেখ করা হয়নি ওই সংবাদে।
এর আগে দেশ ছাড়ার হিড়িক পড়ে যায় আফগানদের মধ্যে। কাবুল বিমানবন্দরের দিকে ছুটে যাচ্ছেন হাজার হাজার মানুষ। একে অপরকে ঠেলে ফেলে যে ভাবেই হোক বিমানে ওঠার আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন তাঁরা। কাবুল বিমানবন্দর জনসমুদ্রে পরিণত হয়েছে।
যে সমস্ত ভিডিও প্রকাশিত হয়েছে তাতে দেখা গিয়েছে, রানওয়েতে দাঁড়িয়ে থাকা বিমান ঘিরে রয়েছেন হাজার হাজার মানুষ। তাঁদের একাংশ নিজেদের মধ্যে মারপিঠ করে বিমানে ওঠার চেষ্টা চালাচ্ছেন। কোনও ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, বিমানে জায়গা পেতে প্রাণপন ছুটছেন একাংশ। জনসমুদ্র সরিয়ে বিমান কী ভাবে উড়বে, তা নিয়েও সংশয় তৈরি হয়েছে।
বার্তা সংস্থা এএফপি জানিয়েছে, আফগানিস্তান ছাড়ার জন্য হাজার হাজার মানুষ বিমানবন্দরের একটি ফ্লাইটে ওঠার চেষ্টা করলে ফাঁকা গুলি করেছে মার্কিন সেনারা।
‘এখানে আমার খুব ভয় লাগছে। তারা আকাশের দিকে অনেক গুলি ছুঁড়ছে,’ একজন প্রত্যক্ষদর্শী বলেছেন।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স একজন কর্মকর্তাকে উদ্ধৃত করে বলছে, ‘জনতা নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে। বিশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে আনতেই ফাঁকা গুলি করা হয়েছে।’
সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া অনেকগুলো ভিডিওতে গুলির শব্দ শোনা যাচ্ছে। অনেকগুলো ভিডিও ফুটেজে দেখা যাচ্ছে যে, মানুষজন রানওয়ের দিকে দৌড়ে বিমানে ওঠার চেষ্টা করছে। এই বিমানবন্দর নিয়ন্ত্রণ করছে মার্কিন সৈন্যরা।
জানা যাচ্ছে যে, যুক্তরাষ্ট্রের বিমানগুলোয় কূটনৈতিক কর্মীদের আগে সরিয়ে নিতে অগ্রাধিকার দেয়া হচ্ছে, যা বিশৃঙ্খলা আর বিভ্রান্তি আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।
এদিকে তালেবান কাবুলের নিয়ন্ত্রণ নেয়ার পর যুক্তরাষ্ট্র ও তাদের সহযোগী দেশগুলোর কর্মীরা রাজধানী ছাড়তে শুরু করলেও চীন ও রাশিয়া ইঙ্গিত দিয়েছে যে, দূতাবাস বন্ধ করার কোন পরিকল্পনা নেই।
চীন তাদের নাগরিকদের সতর্ক করে দিয়ে বলেছে, তারা যেন ঘরের ভেতরে থাকে এবং পরিস্থিতি সম্পর্কে সচেতন থাকে। সেই সঙ্গে তারা জানিয়েছে, আফগানিস্তানের বিভিন্ন পক্ষকে তারা অনুরোধ জানিয়েছে যেন তাদের নাগরিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়।
রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় রবিবার সেদেশের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমকে জানিয়েছে, তাদের আফগানিস্তান ছাড়ার কোন পরিকল্পনা নেই।
তালেবানের একটি প্রতিনিধি দল গত জুলাই মাসে চীন সফর করেছেন, যেখানে তারা পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং লির সঙ্গে বৈঠক করেছেন। সেই সময় ওই বৈঠককে রাজনৈতিক শক্তি হিসাবে তালেবানের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি বলে মনে করা হয়েছে।
চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, তারা আফগানিস্তানের ক্ষেত্রে ‘অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ না করার’ নীতি নেবে।
খুলনা গেজেট/এনএম