আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুল থেকে মাত্র ১১ কিলোমিটার দূরেই চলে এসেছে তালেবান মিলিশিয়ারা। পার্শ্ববর্তী শহর চর আসিয়াব দখল করেছে সশস্ত্র গোষ্ঠিটি। এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত দেশটিত ৩৪ প্রাদেশিক রাজধানীর ১৯টিই দখল করে নিয়েছে তালেবান। এছাড়া অনেকগুলো গুরুত্বপূর্ণ শহরও তাদের নিয়ন্ত্রণে এসেছে।
শনিবার চর আসিয়াব শহরে তালেবানের পৌঁছানোর খবরটি নিশ্চিত করেছেন লোগার প্রদেশের আইনপ্রণেতা হোদা আহমাদি। লোগার প্রদেশটি কাবুলের পার্শ্ববর্তী প্রদেশ। এ প্রদেশটিও তালেবানের কাছে পতন হয়েছে।
এর আগে বৃহস্পতিবার একাধিক গুরুত্বপূর্ণ শহর ও প্রদেশের নিয়ন্ত্রণ নেয় তালেবান বাহিনী। পতন হয়েছে কান্দাহার ও হেরাতের। নতুন দখল করা বাকি শহরগুলো হচ্ছে, কালাত, তেরেনকোট, পুল-ই-আলম, ফিরুজ কোহ, কালা-ই-নাও ও লস্করগাহ। যদিও পেন্টাগন মুখপাত্র জন কিরবির দাবি, কাবুল আসন্ন হুমকিতে নেই। তালেবান মূলত কাবুল অবরুদ্ধ করতে চাইছে।
এদিকে বর্তমান পরিস্থিতিতে অবশেষে মুখ খুললেন দেশটির প্রেসিডেন্ট আশরাফ গনি। আজ শনিবার জাতির সামনে ভাষণ দিয়েছেন তিনি।
গত সাত দিনে দেশটির ৩৪টি প্রদেশের ১৯টি দখল করে নিয়েছে তালেবান। এ সময়ের মধ্যে দেশটির প্রেসিডেন্টকে কোনো বক্তব্য দিতে দেখা যায়নি। তবে অবশেষে মুখ খুললেন তিনি।
আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভাষণে আশরাফ গনি তালেবানের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাওয়ার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছেন। সেনাদের তালেবানের বিরুদ্ধে এক্যবদ্ধ করাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছেন তিনি। সেইলক্ষ্যে কাজ চলছে বলে জানিয়েছেন গনি।
এক টেলিভিশন ভাষণে আশরাফ গনি বলেন, তার সরকারের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার ছিলো আফগানিস্তানের জাতীয় নিরাপত্তা বাহিনীকে পুনর্গঠন। যুদ্ধ-সংঘাতের কারণে বাস্তহারা হাজার হাজার মানুষকে সহায়তার উপায় খুঁজা হচ্ছে।
তিনি বলেন, প্রেসিডেন্ট হিসেবে আমি আপনাদের আশ্বস্ত করতে চাই। অস্থিতিশীলতা, সহিংসতা এবং আমার দেশের জনগণের বাস্তুহারা হয়ে পড়া রোধ করার উপায় খুঁজে বের করা হবে। আমরা আন্তর্জাতিক অংশীদারদের সবার সঙ্গে বিস্তারিত আলোচনা করছি। খুব শিগগিরই এর ফল জানিয়ে আপনারা জানতে পারবেন।
সবশেষ খবরে মাজার-ই-শরিফ এলাকায় আবদুর রশিদ দোস্তামের মিলিশিয়া বাহিনীর সাথে তালেবানের প্রবল লড়াই চলছে বলে খবর পাওয়া গেছে। উত্তর আফগানিস্তানে মাজারই শরিফই একমাত্র প্রধান শহর যেটি এখনো সরকারি নিয়ন্ত্রণে আছে।
প্রেসিডেন্ট আশরাফ গানির টিভি ভাষণের কয়েক ঘন্টা আগে ক্রমাবনতিশীল নিরাপত্তা পরিস্থিতিতে কাবুল থেকে আমেরিকানদের তুলে নিয়ে যাবার জন্য মার্কিন মেরিন সেনাদের প্রথম দলটি আফগানিস্তানে অবতরণ করে। মার্কিন নাগরিকদের নিয়ে যাওয়া এবং বিমানবন্দর রক্ষার জন্য মোট ৩,০০০ মার্কিন সেনা কাবুলে আনার পরিকল্পনা করা হয়েছে।
কাবুলের ওপর শিগগিরই সর্বাত্মক আক্রমণ শুরু হবে- এ আশংকার মধ্যে অন্যান্য বিদেশি কূটনৈতিক মিশনগুলোও তাড়াহুড়ো করে তাদের লোকজনকে সরিযে নিচ্ছে।
খুলনা গেজেট /এএ