মানুষের মধ্যে টিকা ভীতি কাটাতে সারা দেশের মত বাগেরহাটেও ইউনিয়ন পর্যায়ে টিকা দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এজন্য সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছেন জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ। শনিবার (০৭ আগস্ট) সকালে জেলার নয় উপজেলার প্রতিটি ইউনিয়নে ও মোংলা পৌরসভায় করোনা ভ্যাকসিন প্রদান করা হবে। এজন্য টিকাদানের স্থান নির্ধারণসহ সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে।
সকাল ৯টা থেকে বিকেলে তিনটা পর্যন্ত এই টিকাদান কার্যক্রম চলবে। ২৫ বছর বয়সী যে কেউ জাতীয় পরিচয় পত্র নিয়ে আসলে টিকা গ্রহণ করতে পারবেন বলে জানিয়েছেন সিভিল সার্জন ডা. কেএম হুমায়ুন কবির।
বাগেরহাট সিভিল সার্জনের কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, বাগেরহাট জেলার নয় উপজেলা ৭৫টি ইউনিয়নে ৭৫টি অস্থায়ী টিকাদান কেন্দ্রে করোনা ভ্যাকসিন দেওয়া হবে। এর সাথে মোংলা পৌরসভার তিনটি কেন্দ্রেও করোনা ভ্যাকসিন দেওয়া হবে। প্রতিটি কেন্দ্রে টিকাদান কার্যক্রম সম্পন্ন করার জন্য ১৬ জন কর্মী থাকবেন। এদের মধ্যে একজন তদারককারী, ৬ জন টিকাদানকর্মী (স্বাস্থ্য সহকারী) এবং নয় জন স্বেচ্ছাসেবক থাকবেন। তবে মোংলা পৌরসভার তিনটি কেন্দ্রে পৌরসভার নিজস্ব টিকাদানকর্মীরা টিকা প্রদান করবেন। সেখানেও থাকবেন স্বেচ্ছাসেবক টিম। ৭৮টি টিকাদান কেন্দ্রে প্রাথমিক ভাবে ৪৫ হাজার টিকা দেওয়ার কথা রয়েছে। তবে কোন কেন্দ্রে যদি লক্ষ মাত্রার থেকে বেশি টিকার প্রয়োজন হয় সেজন্যও প্রস্তুতি রেখেছে স্বাস্থ্য বিভাগ।
টিকাদান কেন্দ্রের সংখ্যা প্রয়োজনীয় সংখ্যক টিকা ইতোমধ্যে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পৌছে গেছে। সকালেই স্বাস্থ্য বিভাগের ভ্যাকসিন ক্যারিয়ারে টিকাদান কেন্দ্রে এই টিকা পৌছে যাবে। স্বাস্থ্য বিভাগের নির্দিষ্ট কর্মীদের পাশাপাশি ইউনিয়ন পরিষদের গ্রামপুলিশ, পাশ্ববর্তী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের স্কাউট সদস্য, রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবকরা টিকাদান কেন্দ্রে সহযোগি হিসেবে কাজ করবেন।
এর বাইরে জেলা-উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তাগণও টিকাদান কেন্দ্র পরিদর্শনের কথা রয়েছে। অস্থায়ী এই টিকাদান কেন্দ্রে টিকা প্রদানের পাশাপাশি বাগেরহাট সদর হাসপাতালসহ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতে নিয়মিত টিকাদান কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।
বাগেরহাটের সিভিল সার্জন ডা. কেএম হুমায়ুন কবির বলেন, ইউনিয়ন পর্যায়ে টিকা প্রদানের জন্য আমরা সব ধরণের প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছি। সকালে নির্দিষ্ট সময়ে টিকা দান শুরু হবে। ৭৮টি কেন্দ্রে আমরা ৪৫ হাজার মানুষকে ভ্যাকসিন প্রদান করব। তবে যদি কোন কেন্দ্রে নির্ধারিত লক্ষমাত্রার থেকে বেশি টিকা গ্রহিতা আসেন, তাদেরকেও দেওয়ার জন্য আমাদের টিকার মজুদ রয়েছে। এজন্য ৪৫ হাজার টিকার লক্ষ মাত্রার বিপরীতে আমরা ৬০ হাজার ৮০০ সিনো ফার্মার টিকার মজুদ রেখেছি।
তিনি আরও বলেন, ইউনিয়ন পর্যায়ে একদিনের এই টিকাদান কার্যক্রম পরীক্ষামূলকভাবে পরিচালনা করা হচ্ছে। এটি বাস্তবায়নের মাধ্যমে রুট লেভেলে টিকা দানের সম্ভাব্য প্রতিবন্ধকতা আমরা চিহ্নিত করতে পারব। যার ফলে পরবর্তীতে সফলভাবে এই টিকাদান কার্যক্রম সম্পন্ন করা স্বাস্থ্য বিভাগের জন্য সহজ হবে।
এ পর্যন্ত বাগেরহাটে ৪০ হাজার ৫০০ মানুষকে দুই ডোজ টিকা দেওয়া হয়েছে। এক লক্ষ ৭০০ মানুষকে প্রথম ডোজ দেওয়া হয়েছে।
খুলনা গেজেট/এমএইচবি