প্রতারণা করে অর্থ আত্মসাত ও মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের দুই মামলায় গ্রেপ্তার ইশরাত রফিক ঈশিতা ও তার সহযোগী শহিদুল ইসলাম দিদারের ছয়দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। সোমবার ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আশেক ইমাম পৃথক দুই মামলায় শুনানি শেষে রিমান্ডের এই আদেশ দেন।
ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আজ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা প্রতারণার মামলায় পাঁচদিন ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের মামলায় পাঁচ দিনসহ ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন। শুনানি শেষে বিচারক প্রত্যেক মামলায় তিনদিন করে ছয়দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এর আগে রোববার সকালে ইশরাত রফিক ঈশিতা সম্পর্কে অসংখ্য প্রতারণার তথ্য জেনে মিরপুর-১ নম্বর থেকে তাকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)। এ সময় তার সহযোগী শহীদুল ইসলাম দিনারকেও গ্রেপ্তার করা হয়।
পরে দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র্যাবের মিডিয়া সেন্টারে দুজনকে নিয়ে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে চিকিৎসক ঈশিতা সম্পর্কে এসব তথ্য তুলে ধরেন র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন। এ সময় তিনি বলেন, ঈশিতার এই মিথ্যা ও প্রতারণায় ভরা তথাকথিত সাফল্যের গল্প সত্য ভেবে দেশের প্রথম সারির বহুল জনপ্রিয় কিছু গণমাধ্যমও প্রতিবেদন আকারে প্রকাশ করেছে। এসব প্রতিবেদনকে ঈশিতা নিজের জনপ্রিয়তা বাড়ানো ও প্রতারণা কাজে ব্যবহার করতেন।
সংবাদ সম্মেলনে দাবি করা হয়, গ্রেপ্তারের সময় ঈশিতার কাছ থেকে অসংখ্য ভুয়া আইডি কার্ড, ভুয়া ভিজিটিং কার্ড, ভুয়া সিল, ভুয়া সার্টিফিকেট, ভুয়া প্রত্যয়নপত্র, ভুয়া পাসপোর্ট, ল্যাপটপ, ৩০০ ইয়াবা, পাঁচ বোতল বিদেশি মদ এবং মোবাইল জব্দ করেছে র্যাব।
খন্দকার আল মঈন বলেন, ‘ইশরাত রফিক ঈশিতা নামের এই চিকিৎসক নিজের গগনচুম্বী ভুয়া সাফল্য ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার ও নিরাপত্তাবিষয়ক বিভিন্ন সংগঠনের সঙ্গে সম্পৃক্ততার মিথ্যাচার ও বিভ্রান্তিমূলক তথ্য প্রচারে লিপ্ত ছিলেন। এগুলো করে তিনি মূলত সুনাম অর্জন ও সুনামকে ব্যবহার অবৈধভাবে অর্থ উপার্জন করতেন। এসব তথ্য ঈশিতাই জিজ্ঞাসাবাদে আমাদেরকে জানিয়েছে।’
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ঈশিতা ময়মনসিংহে অবস্থিত একটি বেসরকারি মেডিকেল কলেজ হতে ২০১৩ সালে (সেশন ২০০৫-২০০৬) এমবিবিএস সম্পন্ন করেন। ২০১৪ সালের জুনের প্রথম দিকে মিরপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসক হিসেবে যোগদান করেন। একই বছর তিনি একটি সরকারি সংস্থায় চুক্তিভিত্তিক চিকিৎসক হিসেবে নিয়োগ পান। সেখানে চার মাস চাকরি করার পর শৃঙ্খলাজনিত কারণে চাকরিচ্যুত হন ঈশিতা।
খন্দকার আল মঈন বলেন, ‘ইশরাত রফিক ঈশিতা প্রতারণার কৌশল হিসেবে নিরাপত্তা বাহিনীর র্যাংক ব্যাচ ও পদ অর্জনের চেষ্টা চালান। সে ফিলিপাইনে পরিচালিত একটি ওয়েবসাইট (IPC.Phil.com) থেকে ৪০০ ডলারের বিনিময়ে সামরিক বাহিনীর মতো ‘বিগ্রেডিয়ার জেনারেল’ পদটি প্রাপ্ত হন বলে জানান। এ ছাড়া তিনি ইন্টারন্যাশনাল পুলিশ অরগানাইজেশন, কাউন্টার ক্রাইম ইন্টেলিজেন্স অরগানাইজেশন ইত্যাদি সদস্যপদের ভুয়া সনদ তৈরি করে প্রচারণা চালাতেন।’