সরকার পরিকল্পিতভাবে দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে ভেঙে দিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, এই ভয়াবহ বৈশ্বিক মহামারী করোনা ভাইরাসের সময়ে এই সরকার পরিকল্পিতভাবে দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে ভেঙে দিয়েছে। তাদের উদাসীনতা, অযোগ্যতা, ব্যর্থতা ও দুর্নীতি আজকে দেশকে এবং দেশের মানুষের জীবনকে বিপন্ন করে ফেলেছে। জীবিকাকে বিপন্ন করে ফেলেছে।
সোমবার দুপুরে বিএনপির প্রয়াত সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুল আউয়াল খানের প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে এক ভার্চুয়াল স্মরণসভায় তিনি এসব কথা বলেন। আবদুল আউয়াল খান ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে ‘স্মৃতিতে অম্লান’ শীর্ষক এই সভা হয়। গত বছরের ২০ জুলাই করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা যান আউয়াল।
মির্জা ফখরুল বলেন, হাসপাতালগুলোতে বেড নেই, অক্সিজেন নেই, আইসিইউ বেড নেই এবং ঔষধ নেই-এই একটা অবস্থা সরকার সৃষ্টি করেছে। এর ভয়াবহতায় জনগনের জীবন আজকে বিপন্ন। করোনা হবে চিকিৎসা পাবে না, ভুল চিকিৎসা হবে, গরীব মানুষ চিকিৎসার অভাবে রাস্তায় পড়ে থাকবে এটা মেনে নেয়া যায় না।
তিনি বলেন, আমরা সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব দিয়েছিলাম প্রান্তিক মানুষকে যেন তিন মাসের জন্য এককালীন ১৫ হাজার টাকা অনুদান হিসেবে দেয়া হয়। তারা(সরকার) যে সমস্ত কোনো কথাই শুনেনি। পত্রিকাতে এসেছে, ২৮ হাজার কোটি টাকা প্রণোদনা দিয়েছে তার শতকরা ৮৬% ভুয়া। অর্থাৎ তারা যে নামগুলো দিয়েছে সেখানেও তারা আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের নামগুলো দিয়েছে যাতে করে তারা সেই টাকা নিয়ে নিতে পারে। এটা সর্বক্ষেত্রেই হচ্ছে।
সিলেট উপনির্বাচনে দলীয় নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার-হয়রানির অভিযোগ করে মির্জা ফখরুল বলেন, এই নির্বাচনে আমরা অংশগ্রহণ করছি না। অথচ আমাদের নেতা-কর্মীদের অস্থির করে রেখেছে, বাড়িঘর তল্লাশি করছে। নেতা-কর্মীদের হয়রানি করছে, তাদেরকে গ্রেপ্তার করছে।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ১/১১ এর মূল্য লক্ষ্য ছিল বিরাজনীতিকরণ করা- সেটাই হচ্ছে এখন। এখন রাজনীতির বাইরে কিছু শক্তিশালী মহল, কিছু শক্তিশালী দেশ, শক্তিশালী রাষ্ট্র অথবা কিছু শক্তিশালী শক্তি ইন্টারনাল ইনসাইড দি কাউন্ট্রি তারা রাজনীতিকে নির্মাণ করে। এই রাজনীতি ট্র্যাম্পট হয়ে চলে গেছে, যেখানে রাজনীতিবিদদের হাতে আর সেই ক্ষমতা নেই।
তিনি বলেন, আমরা দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে বিএনপিকে ধরে রেখেছি, ধরে রাখার চেষ্টা করেছি, ধরে রাখতে পেরেছি। বিএনপিকে অনেকবার ভাঙার চেষ্টা হয়েছে, অনেকবার বিএনপিকে ধবংস করে দেয়ার চেষ্টা হয়েছে কিন্তু কখনোই ভেঙে ফেলতে পারেনি।কারণ একটাই আমাদের শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান যে দর্শন দিয়েছেন সেটা জনগনের অন্তুরের সঙ্গে একাত্ম হয়ে গেছে।
মির্জা ফখরুল বলেন, সরকারকে হটাতে হবে। এরজন্য বিএনপির দায়িত্বটা বেশি। বিএনপিকেই এর নেতৃত্ব নিতে হবে। হতাশ হওয়া যাবে না। হতাশা ও ব্যর্থতা নিয়ে এগুনো যাবে না। আমাদেরকে অবশ্যই আশাবাদী হতে হবে, জনগণকে সংগঠিত করতে হবে। সভায় প্রয়াত আউয়াল খানের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে তাকে রাজনীতির নক্ষত্র বলে আখ্যা দেন বিএনপি মহাসচিব।
আবদুল আউয়াল খান ফাউন্ডেশনের প্রধান উপদেষ্টা সাবেক হুইপ মনিরুল হক চৌধুরীর সভাপতিত্বে ও আহবায়ক অধ্যক্ষ সেলিম ভুঁইয়ার সঞ্চালনায় সভায় আরও বক্তব্য দেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু, মোহাম্মদ শাহজাহান, শামসুজ্জামান দুদু, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমানউল্লাহ আমান, সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ ও প্রয়াত আবদুল আউয়াল খানের ছেলে আসাদুজ্জামান খান।
খুলনা গেজেট/ টি আই