সাতক্ষীরায় শ্বশুর ও দেবরকে মোবাইল ফোনে বাপের বাড়িতে ডেকে এনে বিয়ের জিনিসপত্র ফেরতসহ ও দু’লাখ টাকা চাঁদা দাবিতে চারদিন আটক রেখে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে তালা উপজেলার ইসলামকাটি গ্রামের আব্দুল হাকিমের মেয়ে শারমিন ও তার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে।
শুক্রবার (২৩ জুলাই) ভোরে পুলিশ যশোরের মনিরামপুর উপজেলার ডাঙ্গা মহিষদিয়া গ্রামের সবেদ আলীকে ইসলামকাটি গ্রামের আব্দুল হাকিমের বাড়ি থেকে উদ্ধার করে।
মনিরামপুর উপজেলার ডাঙ্গা মহিষদিয়া গ্রামের শাওন আহম্মেদ জানান, দু’ বছর আগে তার বড় ভাই যশোরের আকিজ ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউটের ছাত্র সোহাগের সাথে সাতক্ষীরার তালা উপজেলার ইসলামকাটি গ্রামের আব্দুল হাকিমের মেয়ে শারমিন সুলতানার বিয়ে হয়। বিয়ের এক বছর যেতে না যেতেই শারমিন বাপের বাড়িতে যেয়ে আর আসতে চাইতো না। একপর্যায়ে উভয়পক্ষের মধ্যে বসাবসির পরও কোন সিদ্ধান্ত হয়নি। গত ১৮ জুলাই ঈদ উপলক্ষে ভাবী শারমিন তাকে নিয়ে যাওয়ার জন্য বাবাকে (শ্বশুর) মোবাইলে জানায়। সে অনুযায়ি বাবাকে মোটর সাইকেলে নিয়ে ওই দিন দুপুরে ভাবীর বাপের বাড়িতে আসেন তিনি। এ সময় কাবিনের টাকা, বিয়ের সময়কার দেওয়া জিনিসপত্র ছাড়াও নগদ দু’ লাখ টাকা না দিলে তাদেরেকে ছেড়ে দেওয়া হবে না বলে জানান আবু হানিফ সরদারের ছেলে আব্দুল হাকিম সরদার, একই এলাকার আবুল হোসেনের ছেলে খায়রুল, শওকত আলীর ছেলে খায়রুল আলম বাবু, সামাদ শেখের ছেলে ওমর শেখসহ কয়েকজন। এসময় তাদেরকে মারপিটও করা হয়। একপর্যায়ে বাবাকে মোটর সাইকেলসহ হাকিম সরদারের বাড়িতে আটকে রেখে তাকে ২১ জুলাই দুপুরে ছেড়ে দেওয়া হয় দাবিকৃত টাকা ও জিনিসপত্র নিয়ে আসার জন্য।
শাওন আহম্মেদ আরো জানান, বাড়িতে এসে তিনি বিষয়টি কয়েকজনকে অবহিত করেন। ২২ জুলাই তার বড় ভাই সোহাগ ৯৯৯ এ ফোন করে পুলিশের সহায়তা চান। একইসাথে সাতক্ষীরার এক আত্মীয়কে ওই বাড়িতে পাঠানো হলে তাকে ও বাবাকে আবারো লাঞ্ছিত করা হয়। একপর্যায়ে শুক্রবার ভোর চারটার দিকে তালা থানার উপপরিদর্শক প্রীতিশ রায় এর নেতৃত্বে পুলিশ যেয়ে বাবাকে মোটর সাইকেলসহ উদ্ধার করেন। পরে বাবাকে স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা দেওয়া হয়।
এবিষয়ে জানতে চাইলে ইসলামকাটি গ্রামের খায়রুল ইসলাম বলেন, জিনিসপত্র ও কাবিনে উল্লেখিত টাকা দিয়ে উভয়পক্ষের মধ্যে সম্পর্ক বিচ্ছেদ এর সিদ্ধান্ত হলেও সবেদ আলী ও তার পরিবার সিদ্ধান্ত মানছিলেন না। তাই তাদরেকে ডেকে কাবিনের টাকা ও বিয়ের সময় দেওয়া মালামাল ফেরৎ চাওয়া হয়। মারপিটের অভিযোগ অস্বীকার করে তিনি বলেন, শাওন ওইসব মালামলা আনতে বাড়িতে যাওয়ার কথা বলে নাটক সাজিয়েছে।
তালা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মেহেদী রাসেল জানান, এ ঘটনায় সবেদ আলী বাদি হয়ে আব্দুল হাকিম, খায়রুল ইসলামসহ চারজনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরো তিনজনকে আসামী করে শুক্রবার দুপুরে থানায় একটি এজাহার দাখিল করেছেন। তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
খুলনা গেজেট/ টি আই