খুলনা, বাংলাদেশ | ১০ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ২৫ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  সাবেক আইজিপি মামুনের ফের ৩ দিনের রিমান্ড
  অ্যান্টিগা টেস্ট: তৃতীয় দিন শেষে বাংলাদেশ ২৬৯/৯, পিছিয়ে ১৮১ রানে

রূপালীর ধার দেনা মুক্ত হচ্ছে ক্রিসেন্ট

কাজী মোতাহার রহমান

পাকিস্তান জামানায় গভর্ণর জেনারেল খাজা নাজিমউদ্দিনের শাসনামলে শিল্প শহর খালিশপুরে স্থাপিত ক্রিসেন্ট জুট মিল রাষ্ট্রয়াত্ব রূপালী ব্যাংকের দেনার বোঝা মুক্ত হচ্ছে। ব্যাংকের কাছে এ মিলের দেনার ৪ শ’ ৪৩ কোটি টাকা। ইজারা প্রদানের পূর্বে সরকার ঋণমুক্ত করে মিলটি বেসরকারী মালিকানায় হস্তান্তর করবে। ক্রিসেন্ট দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম পাটকল, স্থাপিত ১৯৫২ সালে।

বৈদেশিক মূদ্রার্জন এবং সদ্য স্বাধীন পাকিস্তানে কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে পশ্চিম পাকিস্তানের শিল্পপতি আগা খানের পরিকল্পনার মিলটি স্থাপিত হয়। এর পরিধি ১১৩ দশমিক ৩ একর। ১৯৫৪ সালে উৎপাদন শুরু হয়। ৩ দফায় মোট ১ হাজার ১৩৩ টি তাঁত উৎপাদনে সংযুক্ত হয়।

উৎপাদনের শুরুতেই ৪৯ শতাংশ মালিকানা সরকারের, ৩৪ শতাংশ পাকিস্তানের শিল্পপতি আগা খাঁন গ্রুপের এবং বাকি ১৭ শতাংশের মালিকানা র‍্যালী ব্রাদার্স লিমিটেড এন্ড জেমস মেকলী এন্ড সন্স লিমিটেডের। মিলের বার্ষিক উৎপাদন ২৬ হাজার ৮৮০ মেট্রিক টন।

উৎপাদনের শুরুতেই ১৫ লাখ টাকা মূলধন হিসেবে যোগান দেয় পাকিস্তান আমলের মুসলিম কমার্শিয়াল ব্যাংক, খুলনার শামস ভবন শাখা। স্বাধীনতার পর অর্থলগ্নীকারী এ প্রতিষ্ঠানের নামকরণ হয় রূপালী ব্যাংক।

রাষ্ট্রপতির এক আদেশে ১৯৭২ সালে ব্যাক্তিমালিকানাধীন এ পাটকল জাতীয়করণ করা হয়। কাঁচা পাটের সংকট, বিদেশে নতুন বাজার সৃষ্টি না হওয়া , শ্রমিকের মজুরী বৃদ্ধি, অযৌক্তিক ধর্মঘট এবং বিদ্যুৎ বিল বেশি হওয়ায় ক্রমাগত লোকসানের ফলে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ২০২০ সালের ১ জুলাই এর উৎপাদন বন্ধ ঘোষণা করে।

বিজেএমসি’র এক সুত্র জানিয়েছেন, শ্রমিক সংগঠনগুলোর কাছে সরকারের প্রতিশ্রুতির আলোকে ৯৯ বছরের ইজারা প্রদানের লক্ষ্যে গত ১৭ জুন দরপত্র আহবান করা হয়। খুলনার ক্রিসেন্ট, ইস্টার্ণ , জে জে আই, কার্পেটিং ও দৌলতপুর জুট মিলের জন্য ভারতের মোহন জুট ও প্যাসিফিক ইন্টারন্যাশনাল দরপত্র জমা দেয়।

এ প্রসঙ্গে বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী বীর প্রতীক সাংবাদিকদের জানান, বন্ধ পাটকলের দায়-দেনা সরকার পরিশোধ করবে। বিদ্যুৎ বিল ও কর্মচারীর বেতন পরিশোধ করে ইজারা গ্রহীতার কাছে হস্তান্তর করা হবে ।

বিজেএমসি’র চেয়্যারম্যান মোঃ আব্দুর রউফ এ প্রতিনিধিকে জানান, মিল ও ব্যাংক দুটোরই মালিক সরকার। এসব ক্ষেত্রে ব্যাংকের ঋণের টাকা বুক অ্যাডজাস্টমেন্ট ( সম্পদ দায়ের সঙ্গে সমন্বয়) হয়ে থাকে। এ ক্ষেত্রেও তাই হবে। অর্থমন্ত্রণালয়ের সাথে পাট ও বস্ত্র মন্ত্রনালয়ের বৈঠকের পর এব্যাপারে দ্রুত সিদ্ধান্ত হবে।

রূপালী ব্যাংক, খুলনাস্থ শামস ভবন শাখার উপ-মহাব্যাবস্থাপক মোঃ জাকির ইবনে বোরাক তথ্য দিয়েছেন, ক্রিসেন্ট জুট মিলের কাছে পাওনার পরিমাণ ৪শ ৪৩ কোটি টাকা। টাকা পরিশোধের জন্য মার্চ ও জুন মাসে মিলকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। তিনি জানান, ইজারা গ্রহীতার কাছে হস্তান্তরের পূর্বে অর্থ ও পাট মন্ত্রনালয়ের সাথে বৈঠকের পর মিল দেনামুক্ত হবে। আগামী সেপ্টেম্বরের মধ্যে এ ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে।

 

খুলনা গেজেট/এমএইচবি




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!