হাজারো কণ্ঠে ‘লাব্বাইকা আল্লাহুম্মা লাব্বাইক’ধ্বনির মাধ্যমে পবিত্র হজের আনুষ্ঠানিকতা আগেই শুরু হয়ে গেছে। আজ সোমবার পালিত হবে পবিত্র হজ। এ সময় হজ পালনকারীদের ইসলাম নির্দেশিত বেশকিছু নিয়ম মেনে চলতে হয়। মিকাতের আগে বা মিকাত থেকে ইহরাম বাঁধার পর হজযাত্রীদের সর্বাবস্থায় বারবার তালবিয়া বা লাব্বাইকা আল্লাহুম্মা লাব্বাইক পাঠ করতে হয়।
সৌদিতে বসবাসরত ১৫০টি দেশের নাগরিকসহ ৬০ হাজার হজযাত্রী রবিবার মিনায় অবস্থান করেন। সেখানে তাঁরা পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করেন। তাদের কণ্ঠে ধ্বনিত হচ্ছে- লাব্বাইক, আল্লাহুম্মা লাব্বাইক, লাব্বাইক লা শারিকা লাকা লাব্বাইক, ইন্নাল হামদা ওয়াননি’মাতা লাকা ওয়ালমূলক লা শারিকা লাক। রবিবার ফজরের নামাজ শেষে তারা মিনা থেকে যাবেন আরাফাতের ময়দানে।
করোনা মহামারির মধ্যে কঠোর স্বাস্থ্যবিধি মেনে দ্বিতীয় বারের মতো এবার হজ পালিত হচ্ছে। হজের অংশ হিসেবে হজযাত্রীরা পাঁচ দিন মিনা, আরাফা, মুজদালিফা ও মক্কায় অবস্থান করবেন।
৮ জিলহজ মিনায় সারাদিন এবং ৯ জিলহজ (১৯ জুলাই) ফজরের নামাজ আদায় করে প্রায় ১৫ কিলোমিটার দূরে আরাফাতের ময়দানে সূর্যাস্ত পর্যন্ত অবস্থান করবেন হজযাত্রীরা। এ দিনকে আরাফা দিবস বলা হয়। এদিন মসজিদে নামিরা থেকে হজের খুতবা দেবেন কাবার মসজিদুল হারামের ইমাম ও খতিব শায়খ ড. বানদার বালিলাহ। বাংলাসহ ৯টি ভাষায় অনুবাদ করে প্রচার করা হবে এটি।
হাজিরা মসজিদে নামিরা থেকে দেওয়া হজের খুতবা শ্রবণ, যোহর, আসরের এক আজানের দুই ইকামতে কসরের সঙ্গে আদায় করবেন। তাঁবুতে অবস্থানকারী হাজিরা তাঁবুতে নামাজ আদায় করবেন।
৯ জিলহজ (১৯ জুলাই) সূর্যাস্তের পর আরাফাত ময়দান থেকে হাজীরা রওনা দেবেন প্রায় ৮ কিলোমিটার দূরে মুজদালিফার উদ্দেশে। মুজদালিফায় পৌঁছে তারা মাগরিব ও এশা একসঙ্গে আদায় করবেন। সেখানে রাত যাপন ও পাথর সংগ্রহ করবেন হাজিরা।
১০ জিলহজ ফজরের নামাজ আদায় করে মুজদালিফা থেকে আবার মিনায় ফিরে আসবেন তাঁরা। মিনায় এসে বড় শয়তানকে পাথর মারা, দমে শোকর বা কোরবানি ও মাথা মুণ্ডন বা চুল ছেঁটে হালাল হয়ে মক্কায় কাবা শরিফ তাওয়াফ ও সাফা-মারওয়া সাহী করবেন। সেখান থেকে তাঁরা আবার মিনায় যাবেন। মিনায় যত দিন থাকবেন, তত দিন তিনটি (বড়, মধ্যম, ছোট) শয়তানকে ৭টি করে ২১টি পাথর নিক্ষেপ করবেন।
হজ সম্পাদনে এবার মুসল্লিদের ব্যবহার করতে হচ্ছে স্মার্ট কার্ড। মক্কা-মিনা-আরাফা-মুজদালিফা-মিনায় চলাচলে হাজিদের জন্য রয়েছে তিন হাজার বাস। রয়েছে ৫১টি স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র। ৫৯৪ চিকিৎসক ছাড়াও আছেন আরও ৩০০ স্বাস্থ্যকর্মী। হাজিদের স্বাস্থ্য সুরক্ষাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। করোনা ছাড়া অন্য কোনো রোগ আছে কিনা তাও পর্যালোচনা করা হয়েছে।