ক্রিকেট মাঠে ভারত-পাকিস্তানের দ্বিপাক্ষিক লড়াই বন্ধ দীর্ঘদিন ধরে। তবে ক্রিকেট রাজনীতির মাঠে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী দুই দেশের লড়াই জমে ওঠার আভাস মিলছে। আইসিসি চেয়ারম্যান পদে নির্বাচনে ভারতের ক্রিকেট বোর্ডের সভাপতি সৌরভ গাঙ্গুলির পাশাপাশি এবার উঠে এসেছে পাকিস্তানের বোর্ড চেয়ারম্যান এহসান মানির নাম।
আইসিসির পরবর্তী চেয়ারম্যান নির্বাচন নিয়েও ভারত–পাকিস্তান ঠান্ডা লড়াই শুরু হয়ে গেল। কে ক্রিকেটের সর্বোচ্চ নিয়ামক সংস্থার চেয়ারম্যান হবেন, সেটা এখনও প্রধান বিষয় নয়। মূল বিষয়টা হল কীভাবে আইসিসি চেয়ারম্যান নির্বাচন করা হবে। কারণ, এখনও পর্যন্ত যা পরিস্থিতি তাতে ঐক্যমতের ভিত্তিতে নতুন চেয়ারম্যান বেছে নেওয়া সম্ভব নয়। নির্বাচন অবশ্যম্ভাবী। কিন্তু কীভাবে হবে সেই নির্বাচন? সেটা নিয়ে ক্রিকেটের বিগ–থ্রি আর বাকি দেশগুলির মধ্যে দ্বন্দ্ব শুরু হয়ে গিয়েছে।
ক্রিকেটের ‘বিগ থ্রি’ অর্থাৎ ভারত, অস্ট্রেলিয়া এবং ইংল্যান্ড চাইছে শুধু সাধারণ সংখ্যাগরিষ্ঠতার ভিত্তিতে নির্বাচন হোক। কিন্তু পাকিস্তানের নেতৃত্বে অন্য দেশগুলি চাইছে নির্বাচন হোক দুই তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতার ভিত্তিতে। আইসিসির সদস্য দেশ এবং মনোনীত সদস্য মিলিয়ে মোট ভোট দেওয়ার অধিকার আছে ১৭ জনের।
স্পষ্ট করে বলতে হলে, ভারত, ইংল্যান্ড এবং অস্ট্রেলিয়া চাইছে এই ১৭ জনের মধ্যে অর্ধেকের বেশি অর্থাৎ ৯ জনের সমর্থন যিনি পাবেন, তাকেই পরবর্তী চেয়ারম্যান নির্বাচন করা হোক। অন্যদিকে পাকিস্তান–সহ অন্য দেশগুলি চাইছে মোট দুই–তৃতীয়াংশ অর্থাৎ এই ১৭ জনের মধ্যে ১২ জনের সমর্থন পেলে তবেই আইসিসির চেয়ারম্যান নির্বাচন করা হোক। এই নিয়েই মূলত ভারত এবং পাকিস্তানের একটা ঠাণ্ডা লড়াই চলছে। আইসিসির এক আধিকারিক সেকথা স্বীকারও করেছেন।
আইসিসির এক সদস্য একটি সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, সোমবার পরবর্তী সভাপতি নির্বাচনের মনোনয়ন পদ্ধতি ঠিক করার জন্য আইসিসির বোর্ড মেম্বাররা বৈঠকে বসেছিলেন। কিন্তু তাতে কোনও সমাধান সূত্র মেলেনি। তার মূল কারণ হল নির্বাচন পদ্ধতিকে ঘিরে বিসিসিআই এবং পিসিবির দ্বন্দ্ব। আসলে নির্বাচন পদ্ধতি ঘিরে এই বিতর্কের মূল কারণ হল, ঐক্যমতের ভিত্তিতে কোনও একজনকে বেছে নেওয়া সম্ভন হয়নি। এখনও পর্যন্ত এই পদের জন্য লড়াইয়ে আছেন সৌরভ গাঙ্গুলি, ইসিবির চেয়ারপার্সন কলিন গ্রেভস এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেট বোর্ডের প্রেসিডেন্ট ডেভ ক্যামেরুন। এদের মধ্যে কাউকে যদি ঐক্যমতের ভিত্তিতে আইসিসির পদে বসানো যায়, তাহলে সব সমস্যাই মিটে যাওয়ার কথা। কিন্তু সেটা হচ্ছে না। আপাতত যা পরিস্থিতি তাতে আইসিসি নির্বাচন ঘিরে দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীর মধ্যে একটা পরোক্ষ লড়াই চোখে পড়ছে।
খুলনা গেজেট/এএমআর