একে একে চলে যাচ্ছেন খুলনার ইতিহাসকে বিভিন্ন দিক দিয়ে যারা সমৃদ্ধ করেছেন সেই মানুষ গুলো। গতকাল বিকেলে আমরা হারিয়েছি খুলনার খেলাধুলা জগতের প্রিয় মানুষ আব্দুস সাত্তার কচিকে। যিনি কচি ভাই নামে পরিচিত। যিনি একাধারে ক্রিকেটার ও সংগঠক। তিনি শুধু ক্রিকেট খেলোয়াড় ছিলেন না। তার হাত ধরে অনেক খেলোয়াড়ের জন্ম হয়েছে। তিনি যেমন ছিলেন কোচ তেমনি ছিলেন সংগঠক। তিনি খেলেছেন খুলনা লীগে ঢাকা লীগে এবং বাংলাদেশ জাতীয় দলে।
কর্মজীবনে তিনি খুলনা উন্নয়ন কতৃপক্ষ (কেডিএ)তে চাকরি করলেও তিনি মূলতঃ ছিলেন খেলার মাঠের মানুষ। সারাক্ষণ মাঠে থাকতে ভালোবাসতেন। তাই ক্রিকেট থেকে অবসর নিলে ও কোচ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। খুলনা আবু নাসের স্টেডিয়াম আন্তজার্তিক ক্রিকেট ভেন্যু হিসেবে মর্যাদা লাভ করার পর থেকে তিনি এই ভেন্যুর ম্যানেজারের দায়িত্বে পালন করেন দীর্ঘ কয়েক বছর। তার হাত ধরে এই ভেন্যুর মাঠ প্রাণ ফিরে পায়। তিনি খুলনার মানুষ হিসেবে ক্রিকেটার হিসাবে আবু নাসের স্টেডিয়ামকে নিয়ে অনেক স্বপ্ন দেখতেন।
কতটুকু পেরেছেন বা কতটুকু পারেননি বা কেন পারেননি আজ সেটা থাক। খুলনার বিশিষ্ট ক্রীড়া সংগঠক খুলনা মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের সভাপতি সৈয়দ জাহিদ হোসেন যখন বিসিবির পরিচালক ছিলেন তখন কাছ থেকে দেখেছি সারাক্ষণ এই দুই জন সব বাদ দিয়ে মাঠের উন্নয়ন এবং কিভাবে এই মাঠে বেশি বেশি খেলা হয় সে ব্যাপারে ব্যস্ত থাকতেন। তিনি ছিলেন সবার প্রিয় ওস্তাদ। খুলনায় ফুটবলে ওস্তাদ ছিলেন প্রখ্যাত ফুটবল কোচ মরহুম জহির ভাই। আর ক্রিকেটে ছিলেন কচি ভাই।
আমি ক্রিকেটারদের কথা বাদ দিলাম। খুলনার ক্রীড়া সংগঠক মরহুম অধ্যাপক আবদুর রহমান, মরহুম সাফায়েত ভাই, মরহুম মোস্তফা রশিদী সুজা ভাই, অধ্যাপক জাফর ইমাম স্যার, আজমল আহমেদ তপন, এ্যাড সাইফুল ইসলাম, কাজী শামীম আহসান, কোচ মুনসর ভাই, ফুটবলার শেখ মোহাম্মদ আসলাম, রেফারি মুনসুর আজাদ সংগঠক ও বিভাগীয় ক্রিড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক দারা, জেলা ক্রিড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক মোয়াজ্জেম রশিদী দোজা, ফুটবলার কাজী জসিম উদ্দিন, জোসি, রুমী রিজভী করিম রিংকু, বড় জাহাঙ্গীর, ছোট জাহাঙ্গীর, বুলু এককথায় ফুটবল জগতের উজ্জল তারাগুলো কচি ভাইকে ওস্তাদ বলেই ডাকতেন।
সদা হাসি খুশি এই মানুষটিকে আমরা সাংবাদিকরা নিউজের জন্য কত না জালাতন করেছি। কিন্তু কোন দিন রাগতে দেখেনি। তিনি ছিলেন বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ অধ্যাপক মাজহারুল হান্নান স্যারের খালাতো ভাই। দেশ বিভাগের পর তার পূর্ব পুরুষরা পশ্চিম বাংলা থেকে বাংলাদেশে আসেন এবং খুলনাকে আলোকিত করেছেন।
তিনি চলে গেলেন করোনায় আক্রান্ত হয়ে বড় অসময়ে। গতকাল বিকেলে তার ইন্তেকালের সংবাদ পাওয়ার পর নিজ থেকে কথা বলতে পারছিলাম না। শোকে পাথর হয়ে গিয়েছিলাম।
সবশেষে কচি ভাইয়ের জন্য এই দুনিয়া ও আখেরাতের মালিক মহান আল্লাহর কাছে জান্নাত কামনা করে শেষ করছি।
(ফেসবুক ওয়াল থেকে)
খুলনা গেজেট/ টি আই