মিয়ানমারে জান্তাবিরোধী বিক্ষোভে গুলি ও সহিংসতায় অন্তত ১৮ জন নিহত হয়েছেন। আজ রোববার দেশটির বিভিন্ন এলাকায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে সেনা অভ্যুত্থানবিরোধীদের ব্যাপক সংঘর্ষ হয়। অনেক বিক্ষোভকারীকে গ্রেপ্তারও করা হয়েছে। বিক্ষোভ দমনে রাস্তায় নেমেছেন সেনাসদস্যরাও।
দেশটিতে ১ ফেব্রুয়ারি সেনা অভ্যুত্থানের পর শুরু হওয়া বিক্ষোভে এক দিনে নিহতের সংখ্যা এটাই সর্বোচ্চ। এর আগে গতকাল শনিবার পর্যন্ত নিহত হয়েছিলেন তিনজন।
ইয়াঙ্গুনে বিক্ষোভকারীদের ওপর প্রথম স্টান গ্রেনেড ও পরে কাঁদানে গ্যাসের শেল ছোড়ে পুলিশ। এতেও বিক্ষোভকারীদের দমানো না গেলে গুলি চালায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে জানানো হয়, আজ রোববার দেশটির বিভিন্ন স্থানে কারাবন্দী অং সান সু চির মুক্তি এবং সেনাশাসনের অবসানের দাবিতে বিক্ষোভে অংশ নিতে রাস্তায় নেমে আসেন হাজারো মানুষ। বিক্ষোভ ঠেকাতে সকাল থেকেই পুলিশ ছিল মারমুখী। মিয়ানমারের সবচেয়ে বড় শহর ইয়াঙ্গুনে বিক্ষোভকারীদের ওপর প্রথমে স্টান গ্রেনেড, কাঁদানে গ্যাসের শেল ছোড়ে পুলিশ। এতেও বিক্ষোভকারীদের দমানো না গেলে গুলি চালায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
ইয়াঙ্গুনে একটি হাসপাতালের এক চিকিৎসক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেছেন, আহত বেশ কয়েকজনকে হাসপাতালে আনা হয়েছিল। এর মধ্যে একজন চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। তাঁর বুকে গুলি লেগেছিল।
হাসপাতাল সূত্র ও স্থানীয় গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, আজ দাওয়েই, ইয়াঙ্গুন ও মান্দালয় শহরে বিক্ষোভকারীদের ওপর গুলি ছুড়েছে নিরাপত্তা বাহিনী। মিয়ানমারে অনেক বিক্ষোভকারীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বিক্ষোভ দমনে রাস্তায় নেমেছেনে সেনাসদস্যরাও।
এর আগে ২০ ফেব্রুয়ারি দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর মান্দালয়ে বিক্ষোভকারীদের ওপর পুলিশ গুলি চালালে দুজন নিহত হন। এক দিন আগেই ১৯ ফেব্রুয়ারি জান্তা শাসনবিরোধী এই বিক্ষোভে প্রথম মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। মিয়া থোতে থোতে খায়ং (২০) নামের একজন বিক্ষোভকারী রাজধানী নেপিডোর একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। ৯ ফেব্রুয়ারি তিনি গুলিবিদ্ধ হয়েছিলেন।
ইয়াঙ্গুনে রোববার মুখোমুখি অবস্থানে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও বিক্ষোভকারীরা। দেশটিতে ১ ফেব্রুয়ারি সেনা অভ্যুত্থানের পর শুরু হওয়া বিক্ষোভে এক দিনে নিহতের সংখ্যা এটাই সর্বোচ্চ। এর আগে গতকাল শনিবার পর্যন্ত নিহত হয়েছিলেন তিনজন।
রক্তপাতহীন অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ১ ফেব্রুয়ারি মিয়ানমারের নেত্রী অং সান সু চির নেতৃত্বাধীন ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসির (এনএলডি) সরকারের পতন ঘটায় সেনাবাহিনী। গ্রেপ্তার করা হয় সু চিসহ এনএলডির শীর্ষ নেতাদের। এরপর থেকেই দেশটিতে বিক্ষোভ চলছে।
খুলনা গেজেট/ টি আই