খুলনা বিমান বন্দর প্রকল্পের স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করে দ্রুত কাজ শুরুসহ প্রধানমন্ত্রীর কাছে ১৮ দফা দাবি জানিয়েছে বৃহত্তর খুলনা উন্নয়ন সংগ্রাম সমন্বয় কমিটি। শনিবার বেলা ১১টায় খুলনা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এ দাবি জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে সংগঠনের সভাপতি শেখ আশরাফ উজ জামান বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় দক্ষিণ অঞ্চলের উন্নয়নে এখন ধারাবাহিকভাবে যে সকল প্রকল্প বাস্তবায়িত হতে যাচ্ছে সেগুলো আগামীর খুলনাকে সমৃদ্ধ করবে। খুলনার ভৌগলিক সম্ভাবনাকে কার্যকরভাবে কাজে লাগাতে পারলে আগামী ১০/১৫ বছরের মধ্যে খুলনাঞ্চল দক্ষিণাঞ্চলের রাজধানী হিসেবে বাংলাদেশকে একটি উন্নত রাষ্ট্রে পৌঁছানোর ক্ষেত্রে নেতৃত্ব দেবে। ফলে ভাগ্য পরিবর্তন হবে খুলনা উপকূলের প্রায় ৪ কোটি মানুষের।
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, এক সময় খুলনাকে শিল্পের শহর বলা হত। কিন্তু শিল্প সহায়ক নীতির অভাবে খুলনার ভারী শিল্পগুলো কালের বিবর্তনে বন্ধ হতে হতে খুলনা শিল্পহীন নগরী হিসেবে পরিণত হয়েছে। পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পরে খুলনা অঞ্চলের অর্থনীতির উত্থানের অমিত সম্ভাবনা তৈরি এবং খুলনা আবারও শিল্পনগরীতে পরিণত হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হবে। অর্থাৎ এই একটি সেতুই হবে ভবিষ্যত খুলনার উন্নয়নের অন্যতম প্রধান ‘অনুঘটক’। এতদঞ্চলের চলমান প্রকল্প বাস্তবায়ন, বিশ্বমানের ত্রিমাত্রিক যোগাযোগ অবকাঠামো গড়ে তোলা, আকাশ/নৌ/সড়ক পথে বহুমাত্রিক পরিবহনের নিশ্চয়তা, বাণিজ্যবান্ধব পরিবেশ সৃষ্টি, সমুদ্র বন্দর ভিত্তিক সুযোগগুলো সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিত করতে পারলে শুধু জাতীয় অর্থনীতিতে নয় আঞ্চলিক অর্থনীতির রাজধানীতে পরিণত হবে আমাদের খুলনা।
সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে খুলনায় স্বাগত জানানোর পাশাপাশি ১৮ দফা দাবি উপস্থাপন করা হয়। দাবিগুলো হচ্ছে খুলনা বিমান বন্দর প্রকল্পের স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করে দ্রুত কাজ শুরু করা, খুলনা-মোংলা-ভাঙা মহাসড়ক ৪ লেনে উন্নীত করা, রূপসা-তেরখাদা ও দিঘলিয়াকে খুলনা শহরের সাথে সংযোগের জন্য টানেল নির্মাণ, মোংলা বন্দরের সক্ষমতা বৃদ্ধি, অবকাঠামো উন্নয়ন এবং ড্রেজিং ব্যবস্থা অব্যাহত রাখা, খুলনায় পাইপলাইনে গ্যাস সরবরাহ নিশ্চিত করা, খুলনা-যশোর মহাসড়ক ৬ লেনে উন্নীত করা, খুলনায় অর্থনৈতিক অঞ্চল বাস্তবায়ন, স্বতন্ত্র ক্যান্সার হাসপাতাল স্থাপন করতে হবে, আমদানি-রপ্তানির সুবিধার্থে মোংলা পোর্টের অদূরে কন্টেইনার স্টেশন স্থাপন, খুলনার পাটকলসহ বন্ধ সকল মিল-কলকারখানা চালুর ব্যবস্থা, সুন্দরবনকে ঘিরে পর্যটন হাব গড়ে তোলা, ভৈরব, রূপসা ও পশুর নদীর নাব্যতা বাড়াতে নিয়মিত ড্রেজিং এর ব্যবস্থা, খুলনায় পূর্ণাঙ্গ টেলিভিশন কেন্দ্র চালু, সরকারি উদ্যোগে খুলনায় বোটানিক্যাল গার্ডেন এবং একটি চিড়িয়াখানা স্থাপন, খুলনা প্রেসক্লাবের বহুতল ভবন নির্মাণে পর্যাপ্ত অর্থ বরাদ্দ, খুলনায় মেরিন একাডেমি ও ক্যাডেট কলেজ প্রতিষ্ঠা, খুলনা আলিয়া মাদ্রাসা ও মহিলা আলিয়া মাদ্রাসাসহ আহসান উল্লাহ কলেজ, হাজী আব্দুল মালেক কলেজ, শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ, দৌলতপুর দিবা-নৈশ কলেজ সরকারিকরণ করা, খুলনা-যশোর-দর্শনা ডবল রেললাইন স্থাপন, খুলনা থেকে রেলযোগে ঢাকা যাওয়ার জন্য খুলনা-গোপালগঞ্জ রেললাইন স্থাপন, মুন্সিগঞ্জ-সাতক্ষীরা-যশোর রেললাইন স্থাপন এবং খুলনা-ঢাকা কালনা সেতু হয়ে সরাসরি রেল যোগাযোগ ব্যবস্থা, শহররক্ষা বাঁধ ও রিভারভিউ পার্ক এবং খুলনায় নভো থিয়েটার দ্রুত বাস্তবায়ন ও ডায়াবেটিক হাসপাতালে পর্যাপ্ত অর্থ বরাদ্দ।
সংবাদ সম্মেলেন উপস্থিত ছিলেন মহাসচিব কাউন্সিলর শেখ মোহাম্মাদ আলী, অধ্যাপক আনারুল কাদির, ইঞ্জিনিয়ার আজাদুল হক, সাবেক সভাপতি আলহাজ্ব শেখ মোশাররফ হোসেন, মকবুল হোসেন মিন্টু, শাহীন জামাল পন, মিজানুর রহমান বাবু, অধ্যাপক মোঃ আবুল বাসার, চৌধুরী মোঃ রায়হান ফরিদ, জোবায়ের আহমদ খান জবা, চৌধুরী মামনুরাজাকিরখুকুমনি, মিনাআজিজুররহমান, স্বপনকুমার গুহ, এ্যাডভোকেটমিনামিজানুররহমান, যুগ্ম মহাসচিব মোঃ মনিরুজ্জামান রহিম, মিজানুর রহমান জিয়া, প্রচার সম্পাদক মফিদুল ইসলাম টুটুল, মামুন রেজা, অধ্যক্ষ রেহানা আকতার, সিলভি হারুন, এ্যাডভোকেট মিজানুর রহমান পান্না, অধ্যাপক মোঃ আযম খান, এ্যাডভোকেট বাবুল হাওলাদার, সরদার রবিউল ইসলাম রবি, রসু আকতার, মোল্লা মারুফ রশীদ, জি এম রেজাউল ইসলাম, সালমা জাহান, জেসমিন জাহান, বিশ্বাস জাফর আহমেদ, মোর্শেদ উদ্দিন, হায়দার আলী, শফিকুর রহমান, বীর মুক্তিযোদ্ধা ইদ্রিস আলী, আসীম আনন্দ দাস, শরীফুল ইসলাম সেলিম, মোখলেছুর রহমান বাবলু, ইসরাত ন্যুয়েরী হোসাইন মুমু, প্রমিতি দফাদার প্রমুখ।
খুলনা গেজেট/এনএম