সাতক্ষীরা সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের উত্তর পাশের্^ ১৯৭১ সালের বধ্যভূমি সংরক্ষণের দাবীতে জেলা প্রশাসক বরাবর স্মারকলিপি পেশ করা হয়েছে। ‘৭১ সালের বধ্যভূমি স্মৃতি সংরক্ষণ কমিটি সাতক্ষীরা শাখার আহবায়ক বিশিষ্ঠ মুক্তিযোদ্ধা অধ্যক্ষ সুভাষ সরকারের নেতৃত্বে বৃহষ্পতিবার (৩০ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ৯টায় এ স্মারকলিপি পেশ করা হয়। স্মারকলিপি গ্রহণ করেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক কাজী আরিফুর রহমান।
স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয়েছে যে, ১৯৭১ সালে সাতক্ষীরা সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের উত্তর পাশের্^ দীনেশ কর্মকারের জমিতে পাক হানাদার বাহিনী ও তার দোসররা স্কুলে আশ্রয় নেওয়া ভারতগামী শরণার্থীদের উপর অতর্কিত হামলা করে এবং কয়েকশত নারী পুরুষ ও শিশুদের কে নৃশংসভাবে হত্যা করে ও জখম করে মাটি চাপা দেয়। পরবর্তীতে এবং বর্তমানে যথাযথ উদ্যোগের অভাবে সেই স্থানটি সংরক্ষণ করা হয়নি। যার ফলে বর্তমানে সেই স্মৃতিবিজড়িত স্থানটি কতিপয় ব্যক্তির দখলে চলে যায়। স্থানটির সাত শতক জমি এখনও অব্যবহৃত অবস্থায় পড়ে আছে। প্রতিবছর জেলা প্রশাসন, মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সকল রাজনৈতিক দল, মুক্তিযোদ্ধা এবং সাধারণ মানুষ এখানে স্মৃতিচারণ, আলোবাতি প্রজ¦লনসহ বিভিন্ন কর্মসুচি পালন করে আসছে। অথচ গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সমগ্র দেশে ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধকালিন সময়ে সংঘঠিত গণহত্যা/ গণকবর ও বধ্যভূমি চিহ্নিতকরণ ও সরকারের নীতিমালা অনুযায়ী সেখানে স্মৃতিস্তম্ভ/ স্মৃতিসৌধ নির্মাণ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
স্মারকলিপিতে আরো বলা হয়, উক্ত স্থানটি সরকারিভাবে অধিগ্রহণ করতঃ ১৯৭১ সালের গণকবর ও বধ্যভূমি সংরক্ষণ এবং স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ করে শহিদদের প্রতি সম্মান প্রদর্শণ ও মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি সংরক্ষণ করা হোক যা সাতক্ষীরাবাসির একান্ত দাবী। এ ছাড়া প্রতিবছর ১৪ ডিসেম্বর জেলা প্রশাসন, মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সকল রাজনৈতিকদল, সাংস্কৃতিক সংগঠণ, মুক্তিযোদ্ধা এবং এলাকাবাসী এখানে স্মৃতিচারণ ও মোমবাতি প্রজ্জ্বলনসহ বিভিন্ন কর্মসুচি পালন করে আসছে। স্থানীয় মুক্তিযুদ্ধের চেতনার মানুষের একান্ত দাবি, যাতে দীনেশ কর্মকারের ওই স্থান ঝাউডাঙ্গাসহ অন্যান্য বধ্যভূমি চিহ্নিত করে সেখানে স্মৃতিসৌধ নির্মাণ করা হয়।
স্মারকলিপি পেশকালে আরো উপস্থিত ছিলেন ’৭১ সালে বধ্যভূমি স্মৃতি সংরক্ষণ কমিটি সাতক্ষীরা শাখার আহবায়ক অধ্যক্ষ সুভাষ সরকার, সংগঠণের সদস্য সচিব এড. ফাহিমুল হক কিসলু, কাজী রিয়াজ, বিএম আব্দুর রাজ্জাক, এড, ইউনুছ আলী, দৈনিক পত্রদূতের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক ও জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ডের সদস্য সচিব লায়লা পারভিন সেঁজুতি, সাংবাদিক রঘুনাথ খাঁ, অধ্যাপক ইদ্রিস আলী, এড. খগেন্দ্রনাথ ঘোষ, এড. মনিরউদ্দিন, আলী নূর খান বাবুল, জিএম জাহাঙ্গীর আলম, আসাদুল ইসলাম প্রমুখ।
খুলনা গেজেট/ টি আই