‘মুই একহান ঘর পাইছি এটা মোর দারে স্বপ্নের রাজমহল’ নতুন ঘর পেয়ে খুশি হয়ে কথাগুলো বলেন অসহায় ভূমিহীন মোঃ সবুর বয়াতি।
তিনি আরও জানান, সারাদিন কায়িক পরিশ্রম শেষে এখন আর ফুটপাত বা অন্যের বাড়িতে তোলা কুঁড়ে ঘরে ফিরতে হয় না। এখন প্রতিদিন ফিরতে পারেন নিজ ঘরে। শুধু ঘরই নয়, রয়েছে নিজ নামে দুই শতক জমি, স্বাস্থ্যসম্মত টয়লেট, সুন্দর বারান্দাসহ বসবাসের নিরাপদ সুবিধা।
শরণখোলা উপজেলায় সবুর বয়াতির মত ২০১ টি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবার পেয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেওয়া উপহার স্বপ্নের বাড়ি।
মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারদের বিনা টাকায় ঘর উপহার দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছিলেন। ঘোষণা অনুযায়ী সারাদেশের মতো শরণখোলা উপজেলায় আশ্রয়ণ প্রকল্প-২ এর আওতায় ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারদের মধ্যে প্রথম ও ২য় পর্যায়ে দৃষ্টিনন্দন নতুন এ ঘর হস্তান্তর করা হয়েছে।
বাড়ি পাওয়ার আনন্দে শরণখোলা উপজেলার গোলবুনিয়া গ্রামের সবুর বয়াতি (৭০) এর চোখে ডেকেছে আনন্দ অশ্রুর বান। ঘর পেয়ে কেমন লাগছে জিজ্ঞেস করায় সবুর বয়াতি বলেন, ‘৩৫ বছর আগে মোর বাপ দাদার জাগা ঘর দুয়ার গাঙে বিলীন অইয়া গ্যাছে, হেরপর হইতে মুই মোর বউ, পোলা, মাইয়া ও নাতি লইয়া অন্যের বাড়ির বাগানে পলিথিন ও সুবারি গাছের খোল দিয়া কুরিয়া ঘর উড়াইয়া থাকতাম। মুই স্বপ্নেও কল্পনা হরিনায় যে, মুই জমিসহ ইডের একটা নতুন চকচইক্কা ঘর পামু। মোগো শেখ মুজিবের মাইয়া হাসিনা সরকার মোগো এতো সুন্দর ইটের ঘর দেবে।’
তিনি আরো বলেন, ‘এই বয়সে আইয়া ইডের ঘরে থাকতে পারমু। মুই অনেক খুশি অইছি ঘরহান পাইয়া। এই ঘর মোর জন্য রাজমহল, আল্লার কাছে দোয়া হরি শেখ মুজিবের মাইয়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পিন্নে ও যে স্যারে মোরে অফিসে নিয়া ঘরহান দেছে একজন ভালো মানুষ টিএনও সার হ্যার লইগ্গাও দোয়া হরি যেনো আল্লায় হ্যাগো বেশি দিন বাঁচায়, আর মোর নাহান অসহায় মানুষেরে এই রহম থাহার যাগা দেতে পারে।’
শরণখোলা উপজেলা নির্বাহী অফিসার সরদার মোস্তফা শাহীন বলেন, ভূমিহীন ও গৃহহীনদের জন্য চমৎকার পরিবেশে মানসম্মত টেকসই ঘর নির্মাণ করে দেওয়া হয়েছে। রয়েছে বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা দুই শতাংশ জমি, আধুনিক সুযোগ সুবিধা সম্পন্ন আধাপাকা ঘর, জমির দলিল, খতিয়ান, হাল দাখিলা, পানির ট্যাংক, বিদ্যুৎ সুবিধা, পাকা রাস্তা এবং ভবিষ্যতে ঋণসহ অন্যান্য সুবিধা।
এসব ঘরে আশ্রয় পাওয়াদের অধিকাংশই রাস্তার ধারে ফুটপাত বা কারও বাড়িতে আশ্রয় নিয়ে বসবাস করতেন। তারা এখন প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া ঘর উপহার পেলেন। এর ফলে তাদের জীবনযাত্রার মান উন্নত হবে। পর্যায়ক্রমে প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা অনুযায়ী উপজেলার শতভাগ দরিদ্র জনগোষ্ঠী যাদের জমি ও ঘর নাই, তাদের বসবাসের জন্য বাড়ি করে দেওয়া হবে বলে জানান তিনি।
খুলনা গেজেট/এনএম