পবিত্র ঈদ-উল-আজহা উপলক্ষে বাংলাদেশসহ বিশ্বের সব মুসলমানকে শুভেচ্ছা ও মোবারকবাদ জানিয়ে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ঈদ-উল-আজহা সবার জীবনকে করে তুলুক আনন্দময়, মহান আল্লাহ তায়ালার দরবারে আমি এ প্রার্থনা জানাই।
পবিত্র ঈদ-উল-আজহা উপলক্ষে দেওয়া এক বাণীতে তিনি এসব কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, পবিত্র ঈদ-উল-আজহা উপলক্ষে আমি বাংলাদেশসহ বিশ্বের সব মুসলমানকে শুভেচ্ছা ও মোবারকবাদ জানাই। তাদের অব্যাহত সুখ, শান্তি সমৃদ্ধি কামনা করি।
তিনি বলেন, কোরবানি মুসলিমদের জন্য মহান আল্লাহর নৈকট্য লাভের একটি মহৎ ইবাদত। মানবতার সেবায় মুসলমানদেরকে তাদের সময়, প্রচেষ্টা এবং সম্পদ নিয়ে এগিয়ে আসতে সাহায্য করে। ‘কোরবানির পশুকে আল্লাহ তাঁর মহিমার প্রতীক করেছেন’। কোরবানির সে শিক্ষাকে বুকে ধারণ করে মানব কল্যাণে নিজেকে উৎসর্গ করা আমাদের লক্ষ্য হওয়া উচিত।
বিএনপির মহাসচিব বলেন, দেশ এখন এক চরম দুঃসময় অতিবাহিত করছে। করোনার পাশাপাশি চলমান প্রবল বন্যা মোকাবিলায় সরকারের চরম ব্যর্থতায় সারা দেশের মানুষ বিপর্যস্ত, অসুস্থতা ও ক্ষুধার জ্বালায় হাহাকার করছে অসহায় মানুষ। অপরিকল্পিত বাঁধ নির্মাণ ও পাহাড়ি ঢলে সৃষ্ট বন্যায় মানুষের জীবন-জীবিকা বিপন্ন। মানুষের দিন কাটছে জীবন-মৃত্যুর অজানা আশংকায়। এর ওপর স্বেচ্ছাচারী শাসনের কবলে জনগণ অধিকারহীন ও বাকরুদ্ধ। অগণতান্ত্রিক শক্তির দানবীয় উত্থানে রাষ্ট্র ও সমাজে ভয় ও আতঙ্ক আধিপত্য বিস্তার করে আছে। অনির্বাচিত ভ্রুক্ষেপহীন সরকারদের জনগণের জন্য কোনো দায়িত্ববোধ থাকে না। জনগণকে উপেক্ষা করাই যেন তাদের একমাত্র কর্মসূচি।
তিনি বলেন, সরকারের অপরিণামদর্শিতা এবং উদাসীনতা ও সিদ্ধান্তহীনতায় লাখ লাখ বানভাসি মানুষ সহায়-সম্বল হারিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে। সিলেট, সুনামগঞ্জ, হবিগঞ্জ, নেত্রকোণা, কুড়িগ্রাম প্রভৃতি অঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে, অথচ সরকার নির্বিকার। বর্তমান সরকার নিজেদের ব্যর্থতা ঢাকতে নানা ধরনের প্রহসন ও নাটক প্রদর্শন করছে।
মির্জা ফখরুল বলেন, আত্মত্যাগের এক অবিস্মরণীয় ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে মুসলিম বিশ্বে ঈদুল আজহা উদযাপিত হয়ে আসছে। শ্রষ্টার প্রতি নিঃস্বার্থ আত্মত্যাগ ও অনুপম আদর্শের প্রতীকি নিদর্শন হিসেবে বিশ্বের ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা প্রতি বছর পশু কোরবানি দেয়, এর মাধ্যমে মহান আল্লাহপাকের প্রতি নিবেদিত বান্দা হওয়ার প্রেরণা জোগায়। কোরবানির ঈদ বিশ্ব মুসলিমের দ্বিতীয় বৃহত্তম ধর্মীয় উৎসব। যেকোনো উৎসব বিশেষ সম্প্রদায়ের জন্য নয়, উৎসবের রয়েছে একটি সার্বজনীন বৈশিষ্ট্য। উৎসব মানবজাতির এমন এক সাগর তীর যেখানে ধর্ম-বর্ণ-জাতি নির্বিশেষে সবাই সামিল হতে পারে। তাই স্বার্থচিন্তা পরিহার করে মানব কল্যাণ এবং সমাজে শান্তি, ন্যায়, সুবিচার ও সৌহার্দ্য প্রতিষ্ঠায় আমাদেরকে সচেষ্ট হতে হবে। আসুন, আমরা অঙ্গীকার করি-এই ‘ত্যাগের উৎসবের’ দিনে করোনায় বিপন্ন মানুষসহ অসহায়-নিরন্ন মানুষের প্রতি সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেওয়ার।