খুলনা, বাংলাদেশ | ১০ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ২৫ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

সাতক্ষীরায় ভেসে গেছে সাড়ে ৭ হাজার মাছের ঘের, ৫৫ কোটি টাকার ক্ষতি

সাতক্ষীরা প্রতিনিধি

ঘূর্ণিঝড় ইয়াস এর প্রভাবে সাতক্ষীরা উপকূলের চারটি উপজেলার ৭ হাজার ৫৬০টি মাছের ঘের পানিতে ভেসে গেছে। এতে মৎস্য খাতে অন্তত ৫৫ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ভরা মৌসুমে মাছের ঘের ভেসে যাওয়ায় মোটা অংকের আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছেন চাষীরা।

জেলা মৎস্য অফিস সূত্রে জানা গেছে, জেলার শ্যামনগর, আশাশুনি, কালিগঞ্জ ও দেবহাটা উপজেলার ২৭টি ইউনিয়নে মোট ৭ হাজার ৫৬০টি মাছের ঘের ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর আয়তন ৬৭৩৮ হেক্টর। এই খাতে মাছ এবং অবকাঠামোগত সব হিসাব মিলিয়ে অন্তত ৫৫ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

আশাশুনি উপজেলা নির্বাহী অফিসার নাজমুল হোসেন খান বলেন, সে এলাকায় ১ হাজার ৪ শত হেক্টর জমির মাছের ঘের ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। দেবহাটা উপজেলায় ২০০ ঘের পানিতে তলিয়ে আছে।

অপরদিকে শ্যামনগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার আবু জার গিফারী বলেন, ১৬০০ হেক্টর আয়তনের প্রায় ২৫০০ ঘেরের মাছ ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে।

 

কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা খন্দকার রবিউল ইসলাম বলেন, তার এলাকায় ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরুপণের কাজ চলছে। তবে প্রায় সাড়ে তিন হাজার ঘেরের মাছ পানিতে ভেসে গেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার আনুলিয়া ইউনিয়নের বিছট গ্রামের চিংড়ি চাষী নুরুল আলম জানান, ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে প্রতাপনগরের কুড়িকাউনিয়া ও হরিষখালী এলাকার বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে প্লাবিত হওয়ায় লষ্কারি খাজরা গ্রামে অবস্থিত তার ২৫০ বিঘার একটি চিংড়ি ঘের ও ইরিনা ব্রিকস্ নামের ইটভাটা পানিতে তলিয়ে গেছে। একদিন আগেও তার ঘেরে মাছ ধারা চলছিল। বুধবার (২৭ মে) দুপুরের জোয়ারের ওই দুই ভাঙ্গন পয়েন্ট দিয়ে পানি ঢুকে প্লাবিত হয়ে তার সব কিছু শেষ হয়ে গেছে। এতে তার প্রায় কোটি টাকার উপর ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

সাতক্ষীরা জেলা মৎস্য অফিসার মশিউর রহমান জানান, পূর্ণিমার ভরা জোয়ারে বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে ও ওভার ফ্লো হয়ে নদ-নদীর পানি লোকালয়ে প্রবেশ করায় সাতক্ষীরার শ্যামনগর, আশাশুনি ও দেবহাটা উপজেলার ২৯টি ইউনিয়নের ৭ হাজার ৫৬০টি মাছের ঘের ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। এর আয়তন ৬৭৩৮ হেক্টর। এতে মৎস্য খাতে বড় ধরনের ক্ষতি হয়ে হয়েছে। এই খাতে মাছ এবং অবকাঠামোগত সব হিসাব মিলিয়ে প্রায় ৫৫ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। পূর্নিমার ভরা জোয়ারে সাতক্ষীরার শ্যামনগর, আশাশুনি ও দেবহাটা উপজেলার বিস্তীর্ণ এলাকার চিংড়ি ঘের এখন পানির নিচে তলিয়ে রয়েছে।

সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক এসএম মোস্তফা কামাল বলেন, এলাকা জুড়ে লাখো মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। ক্ষয়ক্ষতি এখনও পুরোপুরি নিরুপণ করা যায়নি। তবে, বেড়িবাঁধ এবং মৎস্য ঘেরের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।

এদিকে, ইয়াসের প্রভাবে সৃষ্ট জলোচ্ছ্বাসে বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে ও উপচে নদ-নদীর পানি ঢুকে সাতক্ষীরা জেলার অন্তত ৮০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এসব গ্রামে পানি উন্নয়ন বোর্ডের বেড়িবাঁধের ভাঙ্গন পয়েন্ট দিয়ে লোনা পানি ঢোকা অব্যহত রয়েছে। গ্রামবাসী ক্ষতিগ্রস্থ বাড়িঘর নিয়ে বিপাকে পড়েছেন। এলাকায় দেখা দিয়েছে জলাবদ্ধতা। ভেঙ্গে পড়েছে বিদ্যুৎ সংযোগ ও আভ্যন্তরিন যোগাযোগ ব্যবস্থা। গ্রামবাসী ও জনপ্রতিনিধিরা বালির বস্তা এবং মাটি ফেলে ক্ষতিগ্রস্ত বেড়িবাঁধ সংস্কারের চেষ্টা অব্যাহত রেখেছেন।

 

খুলনা গেজেট/এনএম




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!