খুলনা, বাংলাদেশ | ১১ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ২৬ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  আইপিএল নিলামে অবিক্রিত মোস্তাফিজুর রহমান, ভিত্তিমূল্য ছিলো ২ কোটি রুপি
  ইসকন নেতা চিন্ময় দাসকে বিমান বন্দরে গ্রেপ্তার করেছে ডিবি
  কক্সবাজারের টেকনাফ সমুদ্র সৈকতে গোসলে নেমে নিখোঁজ দুই শিক্ষার্থীর মরদেহ উদ্ধার
  সাবেক আইজিপি মামুনের ফের ৩ দিনের রিমান্ড

৮ বছরেও উদঘাটন হয়নি সাতক্ষীরার রায়হান হত্যা রহস্য

নিজস্ব প্রতিবেদক, সাতক্ষীরা

সাতক্ষীরা দেবহাটা উপজেলার শহীদ আবু রায়হানের ৮ম মৃত্যুবার্ষিকী আজ। ২০১৩ সালের ২১ নভেম্বর সন্ধ্যায় পারুলিয়া বাস স্ট্যান্ডের পাশে সন্ত্রাসীরা তাকে নির্মমভাবে কুপিয়ে হত্যা করে। দেবহাটা উপজেলা আওয়ামী লীগের তৎকালীন সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন তিনি।

বিগত ২০১৩ সালে মানবতাবিরোধী যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসির রায় ঘোষণার পর সরকার বিরোধী আন্দোলনের নামে সারা দেশের ন্যায় সাতক্ষীরার দেবহাটাতেও নারকীয় তান্ডব চালায় জামায়াত-শিবিরের সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা। সে সময়ে ধর্মান্ধ জামায়াত-শিবির ক্যাডাররা একের পর এক আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের ওপর সশস্ত্র হামলা, দলীয় কার্যালয় ও নেতাকর্মীদের বাড়ীঘরে হামলা, অগ্নিসংযোগ, লুটপাট চালায়।

এর ধারাবাহিকতায় ২০১৩ সালের ২১ নভেম্বর সন্ধ্যায় দেবহাটা উপজেলার পারুলিয়া বাস স্ট্যান্ডের পাশে দলীয় নেতাকর্মীদের সাথে অবস্থানকালে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবু রায়হানকে জামায়াত-শিবিরের সন্ত্রাসী ক্যাডাররা প্রকাশ্যে জনসম্মুখে নির্মম ও নৃশংসভাবে কুপিয়ে হত্যা করে বলে দাবি তার পরিবারের।

শহীদ আবু রায়হানের স্বজনরা জানান, নির্মম ও নৃশংস এ হত্যাকান্ডের ঘটনার ৮ বছর অতিবাহিত হলেও হত্যাকান্ডের নানা বিষয় এখনও আঁধারেই রয়ে গেছে। এমনকি হত্যাকান্ড কিংবা মুল পরিকল্পনাকারী ও কিলিং মিশনে অংশ নেয়া সন্ত্রাসীদের সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট কোন ক্লু উদঘাটিত হয়নি এখনো। হত্যাকান্ডের একদিন পর আবু রায়হানের মা জাহানারা বেগম বাদী হয়ে দেবহাটা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলা নং-০৫।

হত্যাকান্ডের পর প্রায় মাসব্যাপী দেবহাটাতে চিরুনী অভিযান চালিয়ে বহু জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এসকল গ্রেপ্তারকৃত ছাড়াও হত্যাকান্ডের পর থেকে মামলার তদন্ত শেষ হওয়ার আগপর্যন্ত নাশকতায় সংশ্লিষ্ট ও কিলিং মিশনে অংশ নেয়া সন্ধিগ্ধ বহু আসামীকে রায়হান হত্যা মামলার আসামী দেখিয়ে আদালতে প্রেরণ করা হয়। ফলে গ্রেপ্তারকৃত লম্বা লিষ্টের আসামীদের কারণে চাঞ্চল্যকর এ হত্যাকান্ডের প্রকৃত মোটিভ, পরিকল্পনাকারী ও কিলিং মিশনে অংশ নেয়া হত্যাকারীদের চিহ্নিতের বিষয়টি দিনদিন ঝাপসা হয়ে ওঠে বলে ধারনা করছে নিহতের পরিবারের সদস্যরা।

এমনকি আবু রায়হান হত্যাকান্ডের অন্যতম মাস্টার মাইন্ড হিসেবে দেবহাটার কয়েক ডজন মামলার পলাতক আসামী জামায়াত নেতা জিয়াউর রহমান ওরফে আফগান জিয়ার নাম বারবার সামনে উঠে আসলেও চাঞ্চল্যকর এ মামলাটির চার্জশিটে সেই আলোচিত আফগান জিয়াসহ শীর্ষ জামায়াত-শিবির ক্যাডারদের নাম লিস্টের শেষের দিকে রেখে দায়সারা গোছের অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়েছে বলেও দাবী আবু রায়হানের পরিবারের।

এদিকে গত সাত বছর ধরে তদন্ত চলাকালে দেবহাটা থানার এক তদন্ত কর্মকর্তার হাত থেকে অপর কর্মকর্তার হাতে বদল হয় রায়হান হত্যার ফাইল। সর্বশেষ ২০১৭ সালের শেষের দিকে চাঞ্চল্যকর এ হত্যা মামলাটির তদন্ত শেষ হয়েছে দাবী করে প্রায় ১০০ জনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করে পুলিশ। এরপর থেকে অদ্যাবধি আদালতে বিচারাধীন রয়েছে রায়হান হত্যা মামলাটি।

রায়হান হত্যার পর থেকে সেই আফগান জিয়াসহ তার নিকটতম হাতে গোনা কয়েকজন শীর্ষ জামায়াত ও শিবির ক্যাডার এখনও পলাতক থাকলেও চাঞ্চল্যকর এ হত্যা মামলাটির অন্যান্য অধিকাংশ আসামীরাই বর্তমানে জামিনে থেকে বুক ফুলিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে বলেও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন শহীদ আবু রায়হানের পরিবার।

আলোচিত এ হত্যাকান্ডের মুল মোটিভ উদঘাটন করে হত্যার পরিকল্পনা ও কিলিং মিশনে অংশ নেয়া সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের দৃষ্টান্তমুলক শাস্তির দাবী জানিয়েছেন আবু রায়হানের ছেলে ছাত্রলীগ নেতা তন্ময়সহ পরিবারের সদস্যরা।

খুলনা গেজেট/ এস আই




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!