১৯৭১ সালের ৭ মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ভাষণকে ‘জাতীয় ঐতিহাসিক দিবস’র মর্যাদা দিতে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়কে একটি প্রস্তাবনা তৈরি করতে নির্দেশনা দিয়েছে মন্ত্রিসভা।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে সোমবার (১৩ জুলাই) ভিডিও কনফারেন্সে মন্ত্রিসভার বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত হয়েছে।
বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম ব্রিফিংয়ে বলেন, ৭ মার্চ ‘জাতীয় ঐতিহাসিক দিবস’ এবং ২০২০ সালের মধ্যে সব জেলা ও উপজেলা হেডকোয়ার্টারের সম্মুখে জাতির পিতার ম্যুরাল নির্মাণের জন্য হাইকোর্টের রুল ছিল।
তিনি বলেন, এগুলো কেবিনেট মিটিংয়ে আলোচনা হয়েছে। ৭ মার্চ একটি ঐতিহাসিক দিবস এবং বঙ্গবন্ধুর এই ভাষণকে ইউনেস্কো মেমোরি অব দ্য ওয়ার্ল্ড রেজিস্ট্রার’এ অন্তুর্ভুক্ত করেছে।
আলোচনার পরে সিদ্ধান্ত হয়েছে, ৭ মার্চ জাতীয় দিবস ঘোষণার বিষয়টি মন্ত্রিসভা করবে। আর সরকার এমনিতে অনেক ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রাম নিয়েছে ৭ মার্চ কেন্দ্র করে। সেক্ষেত্রে আলাদাভাবে কোনো ম্যুরাল করার কোনো প্রয়োজন পড়বে না। কারণ, ওই প্রোগ্রামের মধ্যে অনেক জিনিস রয়েছে। সে কারণে হাইকোর্টকে অবহিত করা, যেসব প্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে সেগুলো হয়তো অবহিত না। এটা কোনো রায় না, জাস্ট একটি রুল ইস্যু করেছে। সুতরাং, সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ করা হয়েছে, তারা হাইকোর্টকে এই জিনিসটা অবহিত করবেন যে ওই আদেশের প্রয়োজন পড়বে না। কারণ, অলরেডি সরকারের যে প্রকল্প রয়েছে তার অধীনে অনেক কিছু বা তার চেয়ে আরো বেশি জিনিস হয়ে যাবে।
‘মন্ত্রিসভা সিদ্ধান্ত দিয়েছে যে হাইকোর্টে যেন জিনিসটা পয়েন্ট আউট করা হয় এবং আমাদের যে মাস্টারপ্ল্যান রয়েছে সেটা দেখালেই তাদের রুল ইস্যুর বিষয়টা বাস্তায়িত হয়ে যাবে। আর ৭ মার্চকে একটি বিশেষ দিবস হিসেবে ঘোষণা করার জন্য নতুন একটি প্রস্তাব সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় নিয়ে আসবে।’
মন্ত্রিসভার এ সংক্রান্ত নথিতে বলা হয়, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যে মঞ্চে দাঁড়িয়ে ৭ মার্চ ভাষণ দিয়েছিলেন, যেখানে স্বাধীনতার পর মুক্তিযোদ্ধারা বঙ্গবন্ধুর কাছে অস্ত্র সমর্পণ করেছিলেন এবং ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শ্রীমতি ইন্দিরা গান্ধীকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়েছিল, সেখানে মঞ্চ নির্মাণ, মঞ্চের উপর তার আঙ্গুলি উত্তোলনরত প্রতিকৃতি নির্মাণ এবং ৭ মার্চকে জাতীয় ঐতিহাসিক দিবস ঘোষণার জন্য সরকারকে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না- সে মর্মে একটি রুল জারি করা হয়।
ড. বশির আহমেদের হাইকোর্টে দায়ের করা রিট পিটিশনের পরিপ্রেক্ষিতে বিচারপতি কাজী রেজাউল হক ও বিচারপতি মোহাম্মদ উল্লাহর সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ ২০১৭ সালের ২০ নভেম্বর রুল দেন।