রমজান সামনে রেখে ১৮টি প্রতিষ্ঠান ২৩ কোটি ৬৬ লাখ টাকায় ৩২৯ টন এলাচ আমদানি করেছে। গত তিন মাসে আমদানি করা এসব এলাচ কিনতে প্রতি কেজিতে গুনতে হয়েছে ৭১৯ টাকা। ৫৮ শতাংশ ট্যাক্স, ভ্যাট ও ডিউটি যুক্ত করলে প্রতি কেজির দাম দাঁড়ায় ১ হাজার ২৩৯ টাকা। এর সঙ্গে পরিবহন ও শ্রমিকের ব্যয় বাবদ আরও ২০০ টাকা যুক্ত করলে খরচ ১ হাজার ৪৩৯ টাকা। প্রতি কেজিতে ১০০ টাকা লাভ ধরলে তা বিক্রি হওয়ার কথা ১ হাজার ৫৩৯ টাকা। কিন্তু ভালো মানের বড় এলাচ পাইকারি মোকামেই বিক্রি হচ্ছে ৩ হাজার টাকায়। খুচরা বাজারে দাম সাড়ে ৩ হাজার টাকা।
কাস্টমসের আমদানি চিত্র অনুযায়ী, গত তিন মাসে এলাচ এনেছে ১৮টি প্রতিষ্ঠান। প্রতি কেজি এলাচ আনতে দাম পড়েছে ৬০০ থেকে ৭৯০ টাকা। গড় করলে দাঁড়ায় ৭১৯ টাকা। পাঁচটি চালানে চট্টগ্রামের এবি দাশ অ্যান্ড ট্রেডিং কোম্পানি সর্বোচ্চ ৫০ হাজার ৩৮০ কেজি এলাচ এনেছে।
বাংলাদেশ ট্যারিফ কমিশনের (বিটিসি) হিসাব অনুযায়ী, দেশে বছরে এলাচের চাহিদা ৭ হাজার টন। ভারত ও গুয়েতেমালা থেকেই বেশি আসছে এই পণ্য। দেশে প্রায় দেড় হাজার কোটি টাকার বাজার আছে এলাচের। ঈদের আগে-পরে চাহিদা বেশি থাকে। রমজান সামনে রেখে চোরাই পথেও এসেছে এলাচ। ভোক্তা অধিকার সংগঠন কনজ্যুমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) হিসাবে, ২০১৬ সালে এলাচের দাম ছিল প্রতি কেজি ১ হাজার ২৪০ থেকে ১ হাজার ৪৪০ টাকা। কিন্তু এখন দাম দ্বিগুণ।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে খাতুনগঞ্জ ট্রেড অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক ছৈয়দ ছগির আহমেদ বলেন, ‘ডলারে আমদানি মূল্য অফিসিয়ালি এক রকম হলেও বাস্তবে অন্য রকম। কম দামে কেনা হলেও প্রায় দ্বিগুণ ট্যাক্স-ভ্যাট দিতে হয়। এসব কারণে বিক্রি করতে হচ্ছে বেশি দামে। যেসব অসাধু ব্যবসায়ী অতিরিক্ত মুনাফা করছেন, তাদের আইনের আওতায় আনা হোক। কিন্তু নিরীহ ব্যবসায়ীরা যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হন।’
তবে চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক আবুল বাশার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান বলেন, ‘এলাচ নিয়ে কারা মনোপলি ব্যবসা করছে, সে তথ্য সংগ্রহ করছি। এরই মধ্যে অভিযান চালানো হয়েছে। অভিযান আরও জোরদার করা হবে।’
চিটাগং চেম্বারের প্রেসিডেন্ট ওমর হাজ্জাজ বলেন, ‘ব্যবসায়ীরা লাভের জন্য বিনিয়োগ করেন। কিন্তু সে লাভ যাতে মাত্রাতিরিক্ত না হয়, সেদিকে নজর রাখতে হবে সবাইকে।’
সূত্র : সমকাল