খুলনা, বাংলাদেশ | ২৫শে জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ৮ই জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

Breaking News

  মোল্লাহাটে দু’গ্রুপের সংঘর্ষে একজন নিহত, আহত অর্ধশতাধিক
  আ. লীগের দু’নেতার আধিপত্য নিয়ে সংঘর্ষ, ওসিসহ আহত ৫০
  ত্যাগের মহিমায় সারা‌দে‌শে উদযাপিত হচ্ছে প‌বিত্র ঈদুল আজহা, ঈদের জামাতে দেশ ও জাতির কল্যাণ কামনায় মোনাজাত
দুই কর্মীকে অব্যাহতি দিয়েছে ইসি

৭০ হাজার টাকায় ভুয়া এনআইডি, গ্রেপ্তার ৫

গেজেট ডেস্ক

নির্বাচন কমিশনের দুই ডেটা এন্ট্রি অপারেটরসহ ভুয়া এনআইডি চক্রের পাঁচ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। তারা হলেন- সিদ্ধার্থ শংকর সূত্রধর (৩২), আনোয়ারুল ইসলাম (২৬), আব্দুল্লাহ আল মামুন (৪২), সুমন পারভেজ (৪০) ও মজিদ (৪২)। এর মধ্যে সিদ্ধার্থ শংকর নির্বাচন কমিশনের খিলগাঁও এবং আনোয়ারুল ইসলাম গুলশান অফিসে ডেটা এন্ট্রি অপারেটর হিসেবে কাজ করতো। শনিবার রাতে মিরপুরের চিড়িয়াখানা রোড এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়। এদের মধ্যে নিজেদের দুই কর্মীকে অব্যাহতি দিয়েছে নির্বাচন কমিশন।

ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার মাহবুব আলম বিষযটি নিশ্চিত করে জানান, যারা জালিয়াতি করে ব্যাংক ঋণ নিতো তাদের জন্য এই চক্রটি জাল জাতীয় পরিচয়পত্র তৈরি করে দিতো। প্রত্যেকটি জাতীয় পরিচয়পত্রের জন্য ৫০ থেকে ৭০ হাজার টাকা করে নিতো তারা। এখন পর্যন্ত ৩০ থেকে ৩৫টি জাতীয় পরিচয়পত্র জালিয়াতি করে বানিয়েছিল তারা। এর মধ্যে কিছু জাতীয় পরিচয়পত্র জব্দ করা হয়েছে।

গোয়েন্দা কর্মকর্তারা জানান, সম্প্রতি একই ব্যক্তির দুটি জাতীয় পরিচয়পত্র তৈরি করে ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে পলাতক থাকার বেশ কয়েকটি ঘটনা আলোচনায় আসে। এরই ধারাবাহিকতায় গোয়েন্দা লালবাগ বিভাগের একটি দল অনুসন্ধান শুরু করে।

গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে চিড়িয়াখানা রোডের ডি ব্লক এলাকায় থেকে চক্রের পাঁচ সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে সিদ্ধার্থ ও আনোয়ারুল নির্বাচন কমিশনে আউটসোর্সিয়ের মাধ্যমে ডাটা এন্ট্রি অপারেটর হিসেবে কাজ করতো। সুমন ও মজিদ হলো দালাল। আব্দুল্লাহ আল মামুন নিজের নামে একটি জাল জাতীয় পরিচয়পত্র তৈরি করে দুই ব্যাংক থেকে প্রায় বিশ লাখ টাকা ঋণ নিয়েছে। সর্বশেষ স্ত্রীর নামে আরেকটি জাল জাতীয় পরিচয়পত্র তৈরি করতে গিয়ে পুলিশের হাতে ধরা পড়ে।

গোয়েন্দা কর্মকর্তারা জানান, বিভিন্ন ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে যেসব ব্যক্তি পরিশোধ করতো না, তাদের প্রোফাইল খারাপ হওয়ার কারণে দ্বিতীয়বার অন্য কোনও ব্যাংক থেকে তারা ঋণ পেতো না। ব্যাংক কর্মকর্তারা সাধারণত ঋণ দেয়ার ক্ষেত্রে জাতীয় পরিচয়পত্র দেখে নাম-ঠিকানা যাচাই করে ঋণ দিতেন। একারণে ওইসব ব্যক্তিরা নতুন বা জাল পরিচয়পত্র ব্যবহার করে ঋণ নিতো। গোয়েন্দা পুলিশ জানায়, চক্রের সদস্যরা জাল বা দ্বৈত জাতীয় পরিচয়পত্র করে দিতে এককালীন টাকা নেয়ার পাশাপাশি ব্যাংক লোনের ১০ শতাংশ হারেও টাকা নিতো।

গোয়েন্দা কর্মকর্তারা বলেন, সিদ্ধার্থ ও আনোয়ারুল ডাটা এন্ট্রি অপারেটর হওয়ায় তারা কৌশলে একই ব্যক্তির দুটি জাতীয় পরিচয়পত্র তৈরি করতে পারতো। সাধারণত একই ব্যক্তির আঙুলের ছাপ দ্বিতীয়বার নেয়ার কথা নয়। কিন্তু সিদ্ধার্থ ও আনোয়ারুল কৌশলে আঙুলের ছাপ নেয়ার সময় সার্ভারের অফলাইনে তথ্য সংরক্ষণ করে রাখতো। তাৎক্ষণিক জাতীয় পরিচয়পত্র হলেও সেটি পরবর্তীতে আবার যাচাই-বাছাই করা হতো। কিন্তু এই যাচাই-বাছাই হতে অন্তত দুই মাস থেকে এক বছর সময় লাগতো। এর মধ্যে প্রতারকরা ব্যাংক থেকে ঋণ নেয়ার কাজটি সম্পন্ন করে ফেলতো।

ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের লালবাগ বিভাগের উপ-কমিশনার রাজীব আল মাসুদ জানান, গ্রেফতারকৃতদের দুই দিনের রিমান্ডে নেয়া হয়েছে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। এই চক্রের সঙ্গে আরো কেউ জড়িত রয়েছে কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

 

খুলনা গেজেট/এনএম




খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!