৫ আগস্টের ঐক্যে ফিরুন। নইলে ইতিহাস কাউকে ক্ষমা করবে না। ফ্যাসিস্ট হাসিনার পলায়নের মধ্য দিয়ে দেশবাসীর মধ্যে যে ঐক্য তৈরি হয়েছিল সেই ঐক্য ধরে রাখতে পারলে ভারত এতদিনে বাংলাদেশের কাছে সারেন্ডার করতো বলে মন্তব্য করেছেন আমার দেশ সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
শনিবার চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি এই সব কথা বলেন।
তিনি বলেন, রাজনীতিবিদ-ছাত্রজনতার মধ্যে ঐক্যের ফাটল ধরায় ভারত একের পর এক ষড়যন্ত্র কার্ড খেলে যাচ্ছে। গত দু’দিন ধরে তারা আরেকটি নতুন কার্ড খেলছে, সেটি হলো প্রফেসর ইউনুস সরকারের ‘ভুয়া’ পদত্যাগ।
ড. মাহমুদুর রহমান বলেন, ভারত ইউনুস সরকারের ভুয়া পদত্যাগ তৈরি করে, সেটি ভাইরাল করার চেষ্টা করেছে। তরুণ উপদেষ্টাদের বিষয়ে বলেছে, ‘তারা দেশ ছেড়ে পালিয়েছে’। কোনো কোনো জায়গায় ফ্যাসিবাদের ক্যাডাররা মিছিল করারও চেষ্টা করেছে। দুই-এক জায়গায় গ্রেফতারও হয়েছে। এগুলো সবই ভারতের কার্ড। কিন্তু তারা পরাজিত হচ্ছে।
৫ আগস্টের ঐক্য ধরে রাখতে পারলে ভারত এতদিন দেশের পরিবর্তন মেনে নিতো বলেও অভিমত দেন তিনি।
মাহমুদুর রহমান বলেন, অনেক ত্যাগ-তিতিক্ষার পর বাংলাদেশ দ্বিতীয়বার স্বাধীন হয়েছে। চট্টগ্রামে প্রথম শহীদ ওয়াসিমসহ সব শহীদদের শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছি। আমাদের লড়াই এখনো শেষ হয়নি। আপনারা ভাববেন না, ভারত এত বড় পরাজয় মেনে নিবে? গত ৫ মাস ধরে তারা প্রতিনিয়ত কার্ড খেলে যাচ্ছে। প্রতিনিয়ত ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে। চট্টগ্রামেও-তো ইসকন কার্ড খেলা হয়েছে। এখান থেকেই ‘সংখ্যালঘু’ কার্ড খেলা হয়েছে।
তিনি বলেন, আমার শারীরিক উপস্থিত না থাকলেও, জুলাই আন্দোলনে চিন্তার উপস্থিতি ছিল। ৫ আগস্টে আমাদের যে ঐক্য গড়ে উঠেছিল, সেই ঐক্য ফাটল ধরেছে। এই ফাটল ধরার কারণে ভারত ষড়যন্ত্র কার্ড খেলতে পারছে। সাহস করছে। আমরা যদি ৫ আগস্টের ঐক্য ধরে রাখতে পারতাম এতদিন ভারত এই দেশের পরিবর্তন মেনে নিতো। যেহেতু ঐক্য ধরে রাখতে পারিনি, সেজন্য তারা কার্ড খেলেই যাচ্ছে। তারা বাংলাদেশকে আবার ফ্যাসিবাদের উত্থান ঘটাতে চায়। এই জন্য রাজনীতিবিদ ও ছাত্রজনতার দায় রয়েছে। বিশেষ করে রাজনীতিবিদদের দায় বেশি।
তিনি বলেন, ‘আমাদের চ্যালেঞ্জ একটা, ৫ আগস্টের্ ঐক্যে ফিরে যাওয়া। না হয়, আবারো ভারতের আধিপত্যবাদ ফিরে আসছে। আমি অনুরোধ করবো, আপনারা ঐক্য গড়ুন। রাজনীতিবিদদের এক্ষেত্রে এগিয়ে আসতে হবে। মতভেদ থাকলে আলাপ আলোচনা করে সমাধান করুণ।
আমার দেশের সম্পাদক বলেন, ১/১১ পর রাজনীতিতে সম্পৃক্ত হওয়ার প্রধান কারণ ছিল, আমি বুঝতে পেরেছিলাম জেনারেল মইন যে আর্মি ক্যু-টা করেছিলেন, সেটি ভারতের নির্দেশে করা হয়েছে। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যে ভারতের কাছে বিকিয়ে দেওয়া হচ্ছে, এটি আমি বুঝতে পেরেছিলাম। সেসময় আমি রাজনীতির মাঠে আসলাম। ওই সময় আমার মনে আছে দেশের মধ্যে একমাত্র চট্টগ্রামে প্রথম প্রতিবাদ সমাবেশ হয়েছিল। ওই সমাবেশের আয়োজনে ছিলেন বর্তমান সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন। সেটিই ছিল ১/১১ সরকারের বিরুদ্ধে প্রথম প্রতিবাদ সমাবেশ। পেশাজীবী পরিষদের ব্যানারে বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য দীর্ঘ লড়াই করেছি।
চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সদস্য সচিব জাহিদুল করিম কচির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন আমার দেশ পত্রিকার নির্বাহী সম্পাদক ও জাতীয় প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আবদাল আহমদ, সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম আব্দুল্লাহ, চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি মোহাম্মদ শাহ নওয়াজ , সাধারণ সম্পাদক সালেহ নোমান, শামসুল হক হায়দারি, মুস্তফা নঈম, পেশাজীবী নেতা ডা. খুরশিদ জামিল, ইঞ্জিনিয়ার সেলিম মোহাম্মদ জানে আলম।
খুলনা গেজেট/ টিএ