খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ মাছুদ এবং উপ-উপাচার্যের অব্যাহতির ঘোষনায় ৫৭ ঘণ্টা পর অনশন ভেঙে আনন্দ মিছিল করেছে শিক্ষার্থীরা। বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) রাত ১ টার পরে তারা অনশন ভাঙেন।
এর আগে রাতে কুয়েট জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. মামুন অর রশিদের স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে উপাচার্য এবং উপ-উপাচার্যের অব্যাহতির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
অব্যাহতির খবর ক্যাম্পাসে ছড়িয়ে পড়লে বাঁধভাঙা উচ্ছ্বাসে ফেটে পড়েন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। এ সময় অনশনরত শিক্ষার্থীদের জুস খাওয়ায়ে অনশন ভাঙার বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা।
শিক্ষার্থীরা বলেন, আলহামদুলিল্লাহ। আমাদের বিজয় হয়েছে। সত্য কখনো হারে না !ইনকিলাব জিন্দাবাদ। ভিসির পদত্যাগ নয়, পতন হয়েছে। পরে শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে একটি আনন্দ মিছিল বের করেন।
প্রসঙ্গত, ১৮ ফেব্রুয়ারি কুয়েটে ছাত্রদল-যুবদল কর্মীদের সঙ্গে শিক্ষার্থী ও স্থানীয়দের মধ্যে সংঘর্ষে অন্তত ১০০ জনের বেশি আহত হন। এরপর ২৫ ফেব্রুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভায় অনির্দিষ্টকালের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম ও হল বন্ধ ঘোষণা করা হয়।
তবে ১৩ এপ্রিল শিক্ষার্থীরা কর্তৃপক্ষের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে ক্যাম্পাসে প্রবেশ করেন। পরবর্তীতে ১৪ এপ্রিল বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০১তম জরুরি সিন্ডিকেট সভায় সংঘর্ষে জড়িত থাকার অভিযোগে ৩৭ শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়, যা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তোলে।
এই পরিস্থিতিতে কুয়েটের ৩২ জন শিক্ষার্থী উপাচার্যের অপসারণের দাবিতে ২২ এপ্রিল থেকে আমরণ অনশনে বসেন। শিক্ষামন্ত্রীর উপদেষ্টা ও মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি দল অনশন ভাঙাতে গেলেও ব্যর্থ হন। আন্দোলনে একাত্মতা প্রকাশ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ অন্যান্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরাও ভিসির পদত্যাগের আলটিমেটাম দেন।
এর আগে অধ্যাপক মাছুদ নিজে থেকে পদ ছাড়তে অস্বীকৃতি জানিয়ে বলেন, সরকার চাইলে পদ ছাড়ব, নিজে থেকে নয়। শেষ পর্যন্ত সরকারের পক্ষ থেকেই তাকে অব্যাহতির সিদ্ধান্ত জানানো হয়।
শিক্ষা মন্ত্রণালয় জানায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাভাবিক কার্যক্রম বজায় রাখার স্বার্থে জ্যেষ্ঠ অধ্যাপকদের মধ্য থেকে একজনকে সাময়িকভাবে উপাচার্যের দায়িত্ব দেওয়া হবে। একইসঙ্গে শিগগিরই স্থায়ী নিয়োগের জন্য সার্চ কমিটি গঠনের প্রস্তুতিও চলছে।