সাতক্ষীরায় কর্তৃপক্ষের অনুমোদন ছাড়াই গত তিন বছরে ৫৩২দিন অনুপস্থিত থেকেও নিয়মিত বেতন ভাতা তুলছেন কালিগঞ্জের ৭০নং শুইলপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মনিরা জাহান (৩৩)। বিয়ের পর থেকে কলেজ শিক্ষক স্বামীর সাথে ঢাকায় বসবাস করছেন তিনি। স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান উপজেলা শিক্ষা অফিসারকে বিষয়টি জানানোর পর এ ঘটনায় তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে।
শুইলপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সাকির হোসেন ও ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি রফিকুল ইসলাম জানান, কালিগঞ্জ উপজেলার মাঘুরালী গ্রামের মরহুম ওয়াজেদ আলী বিশ্বাসের মেয়ে মনিরা জাহান ২০১৭ সালের ১৮ অক্টোবর সহকারী শিক্ষক হিসেবে বিদ্যালয়ে যোগদান করেন। পরবর্তীতে উপজেলার ইউসুফপুর গ্রামের বাসিন্দা কলেজ শিক্ষক আব্দুল গফুরের সাথে বিয়ে হওয়ায় স্বামীর কর্মস্থল ঢাকায় বসবাস শুরু করেন সহকারী শিক্ষক মনিরা। ২০২০ সালের ১ জানুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত কর্তৃপক্ষের অনুমোদন ছাড়াই ৫৩২দিন বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত, অথচ নিয়মিত বেতন ভাতা তুলছেন তিনি।
বিদ্যালয়ে ৫ জন শিক্ষকের মধ্যে একজন শিক্ষক দিনের পর দিন অনুপস্থিত থাকায় শিক্ষার্থীদের পাঠদান ব্যাহত হচ্ছিল জানিয়ে প্রধান শিক্ষক বলেন, বিষয়টি আমি ক্লাস্টারের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপজেলা সহকারী শিক্ষা অফিসার ওমর ফারুককে জানিয়েছি। উপজেলা শিক্ষা অফিসেও এ ব্যাপারে লিখিতভাবে জানিয়েছি, কিন্তু সুরাহা হয়নি।
এ ঘটনা জানার পর ভাড়াশিমলা ইউপি চেয়ারম্যান নাজমুল হাসান নাঈম বিষয়টি উপজেলা শিক্ষা অফিসার আশীষ কুমার নন্দীকে অবহিত করেন। ঘটনার সত্যতা পেয়ে সহকারী শিক্ষক মনিরা জাহানের বেতন ভাতা স্থগিত এবং বিভাগীয় মামলা দায়ের করা হয়েছে বলে জানান প্রধান শিক্ষক।
এদিকে এতকিছুর পরও বৃহস্পতিবার (২৯ ফেব্রুয়ারি) পর্যন্ত বিদ্যালয়ে হাজির হননি শিক্ষক মনিরা জাহান।
এ ব্যাপারে জানার জন্য মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে সহকারী শিক্ষক মনিরা জাহান বলেন, আমি যা করেছি বিধি মোতাবেকই করেছি। কর্তৃপক্ষের অনুমোদন ছাড়া দীর্ঘ দিন অনুপস্থিত থাকার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি উত্তর না দিয়ে ফোনের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন।
কালিগঞ্জ উপজেলা শিক্ষা অফিসার আশীষ কুমার নন্দী বলেন, আমি ৭-৮ মাস আগে এই উপজেলায় যোগদান করেছি। সহকারী শিক্ষক মনিরা জাহানের বিষয়টি জানতে পেরে আমি সাথে সাথে শিক্ষা মন্ত্রণালয়সহ আমার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে জানিয়েছি। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে সহকারী শিক্ষিকা মনিরা জাহানের বিরুদ্ধে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তার দায়ের করা বিভাগীয় মামলার শুনানি শুরু হয়েছে বলে জানান তিনি।
খুলনা গেজেট/এনএম