প্রথম ম্যাচে দলে সুযোগ মেলেনি। দ্বিতীয় তথা পোর্ট এলিজাবেথের সেইন্ট জর্জেস পার্ক টেস্টে একাদশে ঠাঁই করেই রাঙিয়ে রাখলেন টাইগার টেস্ট স্পেশালিস্ট তাইজুল ইসলাম। দশমবারের মতো টেস্টে দশ উইকেট শিকারের পাশাপাশি টেস্ট ক্যারিয়ারে ১৫০ তম উইকেটের মাইলফলকও স্পর্শ করেছেন। তবে তার এমন অনন্য কীর্তির পরও স্বাগতিক ব্যাটারদের বেধে রাখতে ব্যর্থ হয়েছে বাংলাদেশের বোলাররা।
সব মিলিয়ে টেস্ট ম্যাচ হয়েছে ৩২টি। যেখানে প্রথম ইনিংসে গড় রান ৩১২-এর কিছু বেশি। বাংলাদেশের বিপক্ষে দক্ষিণ আফ্রিকা প্রথম ইনিংসে করেছে ৪৫৩। স্বাগতিকরা সেই হিসেবে রানের পাহাড়ই গড়েছে।
প্রথম দিনের ৫ উইকেটে ২৭৮ রান নিয়ে শনিবার (৯ এপ্রিল) খেলা শুরু করে দক্ষিণ আফ্রিকা। কাইল ভেরাইন্নে ও উইয়ান মুল্ডার দুজনে মিলে দিন শুরু করেন। তবে দলীয় ৩০০ রানে খালেদের শিকার হয়ে ফিরে যান ভেরাইন্নে।
আগের ওভারেই ওভারথ্রো করে দক্ষিণ আফ্রিকান উইকেটরক্ষক ব্যাটার কাইল ভেরাইন্নের সঙ্গে একচোট কথাকাটাকাটি হয়েছিল খালেদ আহমেদের। আম্পায়ার এসে পরে সাবধানী কিছু একটা বলছিলেন অধিনায়ক মুমিনুল হককেও। পরে দেখা যায়, ড্রেসিংরুম থেকে মাঠে নেমে মুশফিককে কিছু একটা বলছেন পেস বোলিং কোচ অ্যালান ডোনাল্ডও।
খালেদ তাতিয়ে দেওয়ার পরই মেজাজ হারিয়ে ফেলেন ভেরাইন্নে। ফিরতি ওভারে খালেদকে পেতেই একটি বাউন্ডারিও হাঁকিয়ে সতীর্থদের বাহবাও পাচ্ছিলেন। কিন্তু পরের বলেই স্টাম্প উপড়ে গেল। ফিরতে হলো খালেদের ওপর অযথা মেজাজ হারিয়ে মারতে গিয়েই। লড়াইয়ে শেষমেশ জয়ী হলেন খালেদই।
তবে এরপর বাধা হয়ে দাঁড়ান মহারাজ। মুল্ডারকে নিয়ে দারুণ জুটি গড়ে তোলেন তিনি। দুজনই ওয়ানডে মেজাজে রান তুলতে থাকেন। এতে দিশেহারা হয়ে পড়েন টাইগার বোলাররা। টেস্ট ক্যারিয়ারে চতুর্থ ফিফটি তুলে নেন মহারাজ। কিন্তু এরপরই খেই হারান মুল্ডার। ব্যক্তিগত ৩৩ রানে তাইজুল ইসলামের বলে ক্লিন বোল্ড হয়ে ফেরেন তিনি। এর খানিক পরই প্রথম সেশনের খেলা শেষ হয়।
এদিকে, দক্ষিণ আফ্রিকা পেসারদের চারণভূমি, এ কথা মানুষের মুখে মুখে ঘোরে প্রায়ই। সে বিবেচনাতেই হয়তো প্রোটিয়াদের বিপক্ষে প্রথম টেস্টের একাদশে জায়গা মেলেনি টেস্ট স্পেশালিস্ট হিসেবে পরিচিত স্পিনার তাইজুল ইসলামের। দ্বিতীয় টেস্টে তাসকিন না থাকায় কপাল খোলে তার। দলে ফিরে তিনি বুঝিয়ে দিলেন তার গুরুত্ব, নিলেন পাঁচ উইকেট।
দক্ষিণ আফ্রিকায় যে স্পিনাররাও জয়-পরাজয়ে বড় অবদান রাখতে পারেন তার প্রমাণ তো কেশব মহারাজই। প্রথম টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসে একাই টাইগারদের ৭ উইকেট শিকার করে ম্যাচসেরা হন তিনি। ওই ম্যাচের পর বাংলাদেশ টিম ম্যানেজমেন্টও হয়তো তাইজুলের অভাব উপলব্ধি করে, এদিকে তাসকিন না থাকায় একাদশে সুযোগও পেয়ে যান তিনি। তার ওপর রাখা আস্থার প্রতিদান প্রোটিয়াদের ৫ ব্যাটারকে সাজঘরে ফেরানো।
ডিন এলগারকে দিয়ে শুরু। তাইজুল এরপর আরও নিয়েছেন কিগান পিটারসেন, রায়ান রিকেলটন, উইয়ান মুল্ডার ও কেশভ মহজারাজের উইকেট। তাইজুলের শিকার হওয়া প্রত্যেক ব্যাটারই বিপজ্জনক হয়ে উঠছিলেন বাংলাদেশের জন্য। এর মধ্যে এলগার ৭০ রানে, পিটারসেন ৬৪ রানে, রিকেলটন ৪২ রানে, মুল্ডার ৩৩ রানে ও মহারাজ ৮৪ রানে আউট হয়েছেন।
সংক্ষিপ্ত স্কোর-
দক্ষিণ আফ্রিকা: ৪৫৩/১০ (১৩৬.২ ওভার)
খুলনা গেজেট/এএ