দেশের ৩১টি দুর্গম দ্বীপাঞ্চলে চলতি বছরের মধ্যে ১২০টি ভি-স্যাটের মাধ্যমে উচ্চগতির ইন্টারনেট পৌঁছে দেবে বঙ্গবন্ধু-১ কমিউনিকেশন স্যাটেলাইট। বাংলাদেশ কমিউনিকেশন স্যাটেলাইট কোম্পানি লিমিটেডের (বিসিএসসিএল) চেয়ারম্যান শাহজাহান মাহমুদ গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানিয়েছেন। তিনি জানান, মাসখানেকের মধ্যেই ২৫টি দুর্গম চরকে গাজীপুর স্টেশনের ট্রান্সপন্ডারের সঙ্গে যুক্ত করছে বিসিএসসিএল।
২০১৮ সালে ১২ মে যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডার কেনেডি স্পেস সেন্টার থেকে প্রথম বাণিজ্যিক স্যাটেলাইট বঙ্গবন্ধু-১ এর সফল উেক্ষপণের মধ্য দিয়ে ১৬ কোটি মানুষের বাংলাদেশ প্রবেশ করে মহাকাশ যুগে। স্যাটেলাইটের মাধ্যমে দ্বীপ এলাকায় নেটওয়ার্ক স্থাপন প্রকল্পের পরিচালক হামেদ হাসান মুহাম্মদ মহিউদ্দিন বলেন, ভি-স্যাট প্রযুক্তি ব্যবহার করে দ্বীপগুলোতে ইন্টারনেট সেবা দেয়ার কাজ চলছে।
এরইমধ্যে পটুয়াখালীর চর কাজল, চর বিশ্বাস, বাহের চর, চর বোরহান ও চন্দ্রদ্বীপে পৌঁছে গেছে স্যাটেলাইট ইন্টারনেট। এছাড়া ভোলার ১১টি, পটুয়াখালীর সাতটি, চাঁদপুরে আটটি এবং পিরোজপুর, বরিশাল ও নোয়াখালীতে একটি করে চর বা দ্বীপে সংযোগ দেয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন স্যাটেলাইটের মাধ্যমে দ্বীপ এলাকায় নেটওয়ার্ক স্থাপন প্রকল্পের পরিচালক।
বর্তমানে চর কুকরি মুকরি, চর খাজুরিয়া, সোনার চর, চর মিজান এবং চালিতা বুনিয়ায় কাজ চলছে। আগামী সপ্তাহের মধ্যে এখানে সংযোগ দেয়া হবে। সোলার প্যানেলের মাধ্যমে ১২০টি ভি-স্যাটের মাধ্যমে এ নেটওয়ার্ক তৈরি করা হচ্ছে। এরপর সেন্টমার্টিনেও এ নেটওয়ার্কে সংযুক্ত করা হবে।
সেইন্টমার্টিন দ্বীপে মোবাইল ইন্টারনেট সুবিধা থাকলেও জরুরি যোগাযোগের জন্য সেখানে স্যাটেলাইট ইন্টারনেট সেবা চালু করা হবে বলে জানান মহিউদ্দিন।
ইতিমধ্যে ২০টি দ্বীপে বা চরে সেবা শুরু করা হয়েছে জানিয়ে প্রকল্প পরিচালক বলেন, বাকী দ্বীপগুলোতে এ বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে সংযোগ নিশ্চিত করা যাবে। প্রতিটি চর বা দ্বীপে পাঁচটি করে ভিস্যাট স্থাপন করে এ সেবা দেওয়া হচ্ছে জানিয়ে মহিউদ্দিন বলেন, ‘দ্বীপ বা চরের আয়তন বুঝে এগুলো স্থাপন করা হচ্ছে, অনেক ক্ষেত্রে কমবেশিও হচ্ছে। স্যাটেলাইট ইন্টারনেট সেবায় ডাউনলোড স্পিড ১০ এমবিপিএস এবং আপলোড স্পিড ৪ এমবিপিএস সরবরাহ করা হবে। উচ্চগতির ইন্টারনেটের মাধ্যমে দ্বীপবাসীরা সব সুবিধাই নিতে পারবেন।’
এসব দ্বীপের স্কুল বা সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোতে ওয়াইফাইয়ের মাধ্যমে ইন্টারনেট সেবা দেওয়া হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমাদের হিসাবে প্রকল্পে শেষে এসব এলাকার তিন লাখের বেশি জনগণ এ সেবার আওতায় আসবেন।’
স্যাটেলাইট ইন্টারনেটের মাধ্যমে টেলিমেডিসিন ও শিক্ষায় গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে জানিয়ে মহিউদ্দিন বলেন, ‘ইতিমধ্যে এ বিষয়ে পরীক্ষামূলক কাজ করে সফলতাও পাওয়া গেছে।’
২০১৯ সালের মার্চে শুরু হওয়া এ প্রকল্পে প্রায় ৪০ কোটি টাকা খরচ হচ্ছে বলে জানান তিনি।বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ এ মোট ৪০টি ট্রান্সপন্ডার রয়েছে। এর মধ্যে ২৬টি কেইউ-ব্যান্ড ও ১৪টি সি-ব্যান্ডের।ইতিমধ্যে ৩৫টি বেসরকারি টিভি চ্যানেল বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের মাধ্যমে সমপ্রচার করছে।
খুলনা গেজেট/এআইএন