থেমে থেমে ভারী বৃষ্টি এবং সীমান্ত নদীতে পাহাড়ি ঢলের কারণে দেশের বিভিন্ন এলাকায় বন্যার শঙ্কা দেখা দিয়েছে। ইতোমধ্যে নদনদীর পানি বিপৎসীমার ওপরে প্রবাহিত হচ্ছে। প্লাবিত হয়েছে নিম্নাঞ্চল, দেখা দিয়েছে নদীভাঙন। এমন পরিস্থিতিতে শেরপুর, নেত্রকোনা, সিলেট ও সুনামগঞ্জে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বন্যার শঙ্কা করছেন আবহাওয়াবিদরা। এ মাসের শেষ দিকে একটি লঘুচাপ তৈরি হতে পারে বলেও জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। লঘুচাপটি ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে।
জ্যৈষ্ঠের শুরুতে দু-তিন দিন ধরে ঢাকায় দফায় দফায় বৃষ্টি হয়েছে। দেশের বিভিন্ন স্থানেও কমবেশি বৃষ্টিপাত হচ্ছে। তবে আজ বুধবার থেকে বৃষ্টিপাতের প্রবণতা কমে আসতে পারে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। এর মধ্যে গতকাল দিনভর বৃষ্টিতে বোরো ধান, আম ও লিচুর ক্ষতি হয়েছে। আবহাওয়াবিদ শাহানাজ সুলতানা বলেন, বুধবার থেকে বৃষ্টিপাতের প্রবণতা কমে আসবে; রোদের দেখা মিলবে। এর পর ২৭ বা ২৮ মে একটি লঘুচাপ সৃষ্টি হতে পারে।
গতকাল দেশের সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত নথিবদ্ধ হয়েছে সিলেটে, ১৯২ মিলিমিটার। সিলেট ছাড়াও অতি ভারী বৃষ্টিপাত হয়েছে রংপুর ও কুড়িগ্রামের রাজারহাটে; এর মধ্যে রংপুরে ১৪৬ মিলিমিটার, রাজারহাটে ১২২ মিলিমিটার বৃষ্টি ঝরেছে। এ ছাড়া মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে ৬৪ মিলিমিটার এবং ঢাকায় ২৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত নথিবদ্ধ করেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
বেসরকারি আবহাওয়াবিষয়ক ওয়েবসাইট আবহাওয়া ডটকমের প্রধান আবহাওয়াবিদ মোস্তফা কামাল পলাশ বলেন, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে শেরপুর, নেত্রকোনা, সিলেট ও সুনামগঞ্জের বিভিন্ন নদীতে পাহাড়ি ঢল শুরুর আশঙ্কা রয়েছে। আগামী ২৭ মে লঘুচাপ, ২৮ মে নিম্নচাপ ও গভীর নিম্নচাপ এবং ২৯ মে ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হওয়ার আশঙ্কা করা যাচ্ছে।
গতকাল ভারতের মেঘালয় ও আসামে টানা ভারী বর্ষণের কারণে সিলেটের সীমান্তবর্তী নদীগুলোতে ঢল নেমেছে। বিশেষ করে সীমান্তের গোয়াইনঘাট উপজেলার পিয়াইন ও ডাউকি নদীতে পানি বেড়ে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। পিয়াইনের পানি উপচে প্রবেশ করছে লোকালয়ে। সুরমা নদীর কানাইঘাট সীমান্ত এলাকার অবস্থাও একই।
আবহাওয়া অফিসের তথ্য বলছে, গতকাল সকাল ৬ থেকে ৯টা পর্যন্ত সিলেট অঞ্চলে ১০১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়। ৯ থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত ৬৮ ও ১২ থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত ১৪ দশমিক ৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে।
গোয়াইনঘাট ইউএনও রতন কুমার অধিকারী জানান, নিম্নাঞ্চলের মানুষের আগেই সতর্ক করা হচ্ছে। জানমাল রক্ষায় বন্যা আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
মঙ্গলবার সকালে পানিতে তোড়ে ভেঙে যায় আত্রাই ড্যামের ভারতীয় অংশ। উত্তরের আত্রেয়ী নদী বাংলাদেশ থেকে ভারতে প্রবেশ করে আবার বাংলাদেশে প্রবাহিত হয়েছে।
খুলনা গেজেট/এইচ