খুলনা, বাংলাদেশ | ৭ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ২২ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  ডেঙ্গুতে একদিনের ৯ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ১ হাজার ২১৪

২৮ বছর পর ভেঙে দুই ভাগ গণফোরাম

গেজেট ডেস্ক

প্রতিষ্ঠার ২৮ বছর পর ভেঙে দুই ভাগ হয়ে গেছে ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বাধীন গণফোরাম। বেরিয়ে যাওয়া অংশের নেতৃত্ব দিচ্ছেন দলটির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মহসিন মন্টুসহ তিনজন নেতা। এ জন্য আগামী ২৬ ডিসেম্বর দলের কেন্দ্রীয় কাউন্সিল ঘোষণা করেছে। শনিবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে মন্টুর নেতৃত্বাধীন গণফোরামের বর্ধিত সভা থেকে কাউন্সিলের ঘোষণা দেওয়া হয়।

গত ২২ সেপ্টেম্বর এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে গণফোরামের বর্তমান আহ্বায়ক কমিটির সভাপতি ড. কামাল হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক রেজা কিবরিয়া বলেন, ২৬ সেপ্টেম্বরে বর্ধিত সভার সঙ্গে গণফোরামের কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই। সেই অনুযায়ী আজকের বর্ধিত সভায় তারা কেউ উপস্থিত ছিলেন না।

তার আগে গত ৪ মার্চ গণফোরামের কেন্দ্রীয় কমিটি ভেঙে দেন দলটির সভাপতি ড. কামাল হোসেন। একইসঙ্গে পরবর্তী কাউন্সিল না হওয়া পর্যন্ত দুই সদস্য বিশিষ্ট আহ্বায়ক কমিটি করা হয়। আহ্বায়ক কমিটির সভাপতি হিসেবে থাকছেন কামাল হোসেন নিজেই এবং সাধারণ সম্পাদক করা হয় বিলুপ্ত কমিটির সাধারণ সম্পাদক রেজা কিবরিয়াকে।

কিন্তু শনিবারের বর্ধিত সভায় উপস্থিত গণফোরামের সাবেক নির্বাহী সভাপতি আবু সাইয়িদ বলেন, ‘বর্ধিত সভায় আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি সংগঠনকে সাংগঠনিকভাবে শক্তিশালী ও গণমুখী করার লক্ষ্যে আগামী ২৬ ডিসেম্বর জাতীয় কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হবে। জাতীয় কাউন্সিলকে সফল করার লক্ষ্যে সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মহসিন মন্টুকে আহ্বায়ক করে ২০১ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে।’

শনিবারের সভার মধ্যে দিয়ে গণফোরাম নামের আরেকটি দল গঠন করতে যাচ্ছেন কিনা, এমন প্রশ্নের জবাবে মোস্তফা মহসিন মন্টু বলেন, ‘২৬ ডিসেম্বরের কাউন্সিলে উপস্থিত ডেলিগেটদের মতামত নিয়ে পরবর্তী সিদ্ধান্ত হবে নতুন দলের বিষয়ে।’

ড. কামাল হোসেনের বিষয়ে তাদের কী সিদ্ধান্ত? জানতে চাইলে মন্টু বলেন, ‘আমরা এখনও বিশ্বাস করি, ড. কামাল হোসেন আমাদের সঙ্গে আসবেন। বিতর্কিত লোকদের পরিহার করবেন। মাঠের পোড় খাওয়া লোকদের নিয়ে এগিয়ে যাবেন। আর তিনি না এলে তাঁর বহিষ্কারের বিষয়ে আমাদের সম্মেলনে সিদ্ধান্ত নেব। সম্মেলনে কাউন্সিলর ও ডেলিগেটরা আসবেন। তাদের মতামত সাপেক্ষে তাঁর বিষয়ে আমরা সিদ্ধান্ত নেব।’

গণফোরাম তো বিএনপির নেতৃত্বাধীন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টে আছে, আপনারা কি তাহলে ঐক্যফ্রন্ট থেকে বেরিয়ে যাচ্ছেন? জানতে চাইলে মন্টু বলেন, ‘ঐক্যফ্রন্টের বিষয়ে আমরা এখনও কোনো সিদ্ধান্ত নেব না। সামনে আমাদের সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির মিটিং আছে। সেখানে সিদ্ধান্ত নেব।’

ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গে জোট করে একাদশ সংসদ নির্বাচন অংশগ্রহণ এবং জোটে মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত দল জামায়াতের প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে মন্টু বলেন, ‘ঐক্যফ্রন্টে জামায়াত ছিল না। আর আমি একাদশ সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করব না বলেছিলাম কামাল হোসেনকে। কিন্তু তিনি যেহেতু দলের সভাপতি ছিলেন, সাধারণ সম্পাদক হিসেবে তাঁর নির্দেশে আমি নির্বাচনে অংশ নিয়েছি। কারণ আমি তাঁর আদেশ অমান্য করতে পারি না সাধারণ সম্পাদক হিসেবে। আর সেই নির্বাচন কীভাবে আগের রাতে হয়ে গেছে আপনারা সবাই জানেন।’ অর্থবহ পরিবর্তনের লক্ষ্যে গণফোরাম জাতীয় ঐক্য চায় বলেও মন্তব্য করেন মন্টু।

শনিবারের বর্ধিত সভায় গণফোরামের কত জেলার প্রতিনিধি আছেন? জানতে চাইলে দলটির সাবেক নির্বাহী সভাপতি অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী বলেন, ‘আমাদের সঙ্গে গণফোরামের ৫২ জেলার ২৮৩ জন প্রতিনিধি উপস্থিত আছেন। বর্ধিত সভায় আরো উপস্থিত গণফোরামের সাবেক প্রেসিডিয়াম সদস্য জগলুল হায়দার আফ্রিক, সাংগঠনিক সম্পাদক লতিফুল বারী হামিম প্রমুখ।

এদিকে অন্য করো বর্ধিত সভা ডাকার কোনো বৈধ্যতা নেই বলে মন্তব্য করেছেন গণফোরামের সভাপতি ড. কামাল হোসেন। দলটির শনিবার ব্যানারে জাতীয় প্রেস ক্লাবের আবদুস সালাম হলে একাংশের বর্ধিত সভা ও আগামী ২৬ ডিসেম্বর জাতীয় কাউন্সিল অনুষ্ঠানে বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে তিনি এ দাবি করেন।

ড. কামাল হোসেন বলেন, ‘ওদের কোনো সাংগঠনিক ক্ষমতা এবং এই ধরনের মিটিং করার বৈধতার নেই। এই মিটিংয়ের সাথে আমাদের দল গণফোরামের কোনো সম্পর্ক নেই্।’ তিনি বলেন, ‘তারা যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে সেটি আমাদের দলের কোনো সিদ্ধান্ত না। যেহেতু এটি আমাদের দলের বিষয় না সেজন্য এই বিষয়ে আমি কোনো মন্তব্য করতে চাই না।’

একাংশের আহুত বর্ধিত সভায় বলা হয়েছে আপনাকে কিছু লোক ভুল বুঝাচ্ছেন- এমন প্রশ্নের জবাবে ড. কামাল হোসেন হোসেন বলেন, ‘এসব কথা তারা বলার জন্য বলছে। এটা তাদের একটা কায়দা-কৌশল। এসব বিষয় আমি কথা বলতে চাই না। এদের সঙ্গে আমার কোনো সম্পর্ক নাই। তারা দলে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছে।’

 

খুলনা গেজেট/এনএম




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!