দীর্ঘ ২৫ বছর পর অবশেষে জাতীয়তাবাদী যুবদলের পাইকগাছা উপজেলা শাখার আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। ১৯৯৭ সালের পর কমিটি ঘোষণায় নির্বাচিত কমিটি ও তাদের অনুসারীরা বিভিন্ন মাধ্যমে সন্তোষ ও সংশ্লিষ্টদের ধন্যবাদ জানালেও পদ বঞ্চিতদের একাংশ ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যাক্ত করেছেন। নতুন কমিটি ঘোষণায় পদত্যাগের ঘটনাও ঘটেছে।
দীর্ঘ দিন জাতীয়তাবাদী যুবদলের কমিটি না হওয়ায় পাইকগাছায় বিভিন্ন সময়ে সরকার বিরোধী আন্দোলন জোরদারে যুবদলকে নিষ্ক্রিয় দেখা যায়। বিষয়টি জেলা কমিটি থেকে শুরু করে কেন্দ্র পর্যন্ত অবহিত হওয়ায় সর্বশেষ গত রবিবার (২৩ জানুয়ারী) রাতে জেলা কমিটি ৩৫ সদস্য বিশিষ্ট পাইকগাছা উপজেলা কমিটি ঘোষণা দেন।
কমিটিতে তৌহিদুজ্জামান মুকুলকে আহবায়ক ও মোঃ ইমরান হোসেনকে সদস্য সচিব করে ৩৫ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি ঘোষণা দেওয়া হয়। খুলনা জেলা যুবদলের সভাপতি এস এম শামিম কবির ও সাধারণ সম্পাদক ইবাদুল হক রুবায়েদ’র যৌথ সাক্ষরিত কমিটিতে ১জন সিনিয়র যুগ্ম আহবাহক, যুগ্ম আহবাহক ১২ জন, সদস্য সচিব ১ জন ও ২০ জন সদস্যসহ মোট ৩৫ জনকে কমিটিতে অন্তর্ভূক্ত করা হয়।
কমিটির ১ জন সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক মো: আবুল হোসেন, যুগ্ম আহবাহক ১২ জন হলেন, মোঃ মোহর আলী সরদার, মীর আজিবুর রহমান বাবু, মোঃ আজারুল ইসলাম গাজী, শেখ ইকবাল হোসেন, মোঃ আজারুল ইসলাম, আকিজ উদ্দীন বিশ্বাস, মোঃ রবিউল ইসলাম, আমিনুল ইসলাম বজলু, হারুন-অর রশিদ, শেখ জাহিরুল ইসলাম, রায়হান পারভেজ টিপু, আরিফ আহমেদ হাজরা। সদস্য সচিব ১জন হলেন, ইমরান হোসেন সরদার। এছাড়া সদস্য ২০ জন হলেন, মোঃ আবু তালেব, মোঃ আকিজ উদ্দীন, আব্দুল কুদ্দুস, মোঃ সিরাজুল ইসলাম গাজী, মোঃ আনারুল ইসলাম, এস,এম মোঃ হারুন অর রশিদ, মোঃ আবু সুফিয়ান গোলদার, মাঃ শফিকুল ইসলাম, জি,এম,সিজার বাবু, মোঃ আব্দুর রাজ্জাক, বুলবুল আহমেদ, আশিক মাহমুদ, মোঃ মনিরুজ্জামান মনি, বিপ্লব কুমার দাশ, সেলিম জাহাঙ্গীর বাদশা, মোঃ আজারুল ইসলাম, শেখ আছাবুর রহমান, এস,এম সামাদ হোসেন, মোঃ আজিজুর গোলদার ও মোঃ আলতাফ হোসেন।
এদিকে নতুন কমিটি ঘোষণায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে আহবায়ক কমিটিকে প্রত্যাখ্যানপূর্বক ১নং যুগ্মআহ্বায়ক মোঃ আবুল হোসেন নিজের পদত্যাগের ঘোষণা দেন। তিনি বলেন, তৃণমূলের মতামত না নিয়ে এ কমিটি দেওয়া হয়েছে। বিশেষ করে কমিটির অধিকাংশরাই নতুন মুখ ও আহবায়কের স্বজনরা আওয়ামীলীগের রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত।
এ বিষয় পাইকগাছা উপজেলা বি এনপির আহবায়ক ডাক্তার আব্দুল মজিদ তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় বলেন, জেলা কমিটি যেহেতু আহ্বায়ক কমিটির ঘোষণা দিয়েছে সেহেতু সে কমিটিকে মেনে নেওয়া উচিত। তবে আবুল হোসেনকে আহবায়ক করা হলে দলা আরো চাঙ্গা হতো বলেও দাবি তার।
খুলনা জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক ইবাদুল হক রুবায়েদ বলেন, যাচাই বাছাই করে কমিটি দেয়া হয়েছে। এরপর কে কমিটিতে থাকবে আর কে থাকবেনা সেটি তার ব্যক্তিগত ব্যাপার।
খুলনা জেলা যুবদলের সভাপতি এস এম শামিম কবির বলেন, যিনি এ কমিটি থেকে পদত্যাগ করেছেন শুনলাম তিনি উপজেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটির সদস্য। তার পরেও কেন্দ্রের সুপারিশে তাকে ১ নং যুগ্ম আহবায়ক করা হয়েছে। সে একজন ভালো কর্মী স্বীকার করে বলেন, পদত্যাগ করা না করা তার ব্যক্তিগত ব্যাপার।
যুবদল দল কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি আলী আকবর চুর্ণ বলেন, কেন্দ্র থেকে খুলনা বিভাগে ৬ সদস্য বিশিষ্ট একটি টিম গঠন করে দেয়। তিনি ঐ টিমের প্রধান। তৃণমূলে যাচাই বাছাই করে তিনিই এ কমিটিকে সুপারিশ করেছেন। এরপর জেলা কমিটি পাইকগাছা উপজেলা যুবদলের কমিটি প্রকাশ করেছে।
প্রসঙ্গত, এরআগে সর্বশেষ ১৯৯৭ সালে সম্মেলনের মাধ্যমে মরহুম আমজাদ হোসেন গোলদারকে সভাপতি শেখ বেনজির আহম্মেদকে সম্পাদ করে উপজেলা যুবদলের কমিটি গঠিত হয়। তার পর দীর্ঘ ২৫ বছর পর এ আহ্বায়ক কমিটির ঘোষণা দেওয়া হয়। দীর্ঘদিন নের্তৃত্বহীন যুবদল রাজপথে কার্যত নিষ্ক্রীয় ছিল। ধারণা করা হচ্ছে, নতুন কমিটিতে ভর করে আগামীর সকল দলীয় কর্মসূচী বাস্তবায়নে এগিয়ে যাবে পাইকগাছা যুবদল।
খুলনা গেজেট/ এস আই