চলমান করোনা মহামারিতে বিশ্বজুড়ে দৈনিক মৃত্যুর সংখ্যা আরও বেড়েছে। একইসঙ্গে আগের দিনের তুলনায় উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বেড়েছে নতুন শনাক্ত রোগীর সংখ্যাও। গত ২৪ ঘণ্টায় সারা বিশ্বে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন সাড়ে ৭ হাজারের বেশি মানুষ। একই সময়ে ভাইরাসটিতে নতুন করে আক্রান্তের সংখ্যা পৌঁছেছে প্রায় ৩১ লাখে।
এদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় বিশ্বজুড়ে সবচেয়ে বেশি সংক্রমণ ও প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে যুক্তরাষ্ট্রে। অন্যদিকে দৈনিক প্রাণহানির তালিকায় দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে রাশিয়া। প্রাণহানির তালিকায় এরপরই রয়েছে পোল্যান্ড, যুক্তরাজ্য, জার্মানি, ইতালি, ফ্রান্স ও ইউক্রেন। এতে বিশ্বব্যাপী করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ৩১ কোটি ৭২ লাখের ঘর। অন্যদিকে মৃতের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ৫৫ লাখ ২৯ হাজার।
বৃহস্পতিবার (১৩ জানুয়ারি) সকালে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত, মৃত্যু ও সুস্থতার হিসাব রাখা ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডোমিটারস থেকে পাওয়া সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় সারা বিশ্বে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৭ হাজার ৭৯২ জন। অর্থাৎ আগের দিনের তুলনায় মৃত্যুর সংখ্যা বেড়েছে ৭ জন। এতে বিশ্বজুড়ে মৃতের সংখ্যা পৌঁছেছে ৫৫ লাখ ২৯ হাজার ৭৫০ জনে।
একই সময়ের মধ্যে ভাইরাসটিতে নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ৩০ লাখ ৯৫ হাজার ৩৮ জন। অর্থাৎ আগের দিনের তুলনায় নতুন শনাক্ত রোগীর সংখ্যা প্রায় ৪ লাখ। এতে মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত ভাইরাসে আক্রান্ত মোট রোগীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩১ কোটি ৭২ লাখ ৩৩ হাজার ৭৬৭ জনে।
এদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় বিশ্বে করোনায় সবচেয়ে বেশি সংক্রমণ ও প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে যুক্তরাষ্ট্রে। এই সময়ের মধ্যে দেশটিতে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৭ লাখ ৮৮ হাজার ৭৯১ জন এবং মারা গেছেন ২ হাজার ২৩৮ জন। করোনাভাইরাসে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এই দেশটিতে এখন পর্যন্ত ৬ কোটি ৪২ লাখ ৯৩ হাজার ৯৫ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এবং ৮ লাখ ৬৬ হাজার ৮৪৭ জন মারা গেছেন।
অন্যদিকে দৈনিক প্রাণহানির তালিকায় দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে রাশিয়া। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৭৪৫ জন এবং নতুন করে করোনায় সংক্রমিত হয়েছেন ১৭ হাজার ৯৪৬ জন। এছাড়া মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত দেশটিতে মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ১ কোটি ৭ লাখ ২ হাজার ১৫০ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ৩ লাখ ১৮ হাজার ৪৩২ জনের।
এছাড়া গত এক দিনে যুক্তরাজ্যে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ১ লাখ ২৯ হাজার ৫৮৭ জন এবং মারা গেছেন ৩৯৮ জন। মহামারির শুরু থেকে এই দেশটিতে এখন পর্যন্ত ১ কোটি ৪৮ লাখ ৬২ হাজার ১৩৮ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এবং ১ লাখ ৫১ হাজার ৭ জন মারা গেছেন। একই সময়ে ইতালিতে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ১ লাখ ৯৬ হাজার ২২৪ জন এবং মারা গেছেন ৩১৩ জন।
গত ২৪ ঘণ্টায় ফ্রান্সে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৩ লাখ ৬১ হাজার ৭১৯ জন এবং মারা গেছেন ২৪৬ জন। মহামারির শুরু থেকে এই দেশটিতে এখন পর্যন্ত ১ কোটি ২৯ লাখ ৩৪ হাজার ৯৮২ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এবং ১ লাখ ২৬ হাজার ৩০৫ জন মারা গেছেন। একই সময়ে স্পেনে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ১ লাখ ৭৯ হাজার ১২৫ জন এবং মারা গেছেন ১২৫ জন।
এছাড়া জার্মানিতে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৮০ হাজার ৫৪২ জন এবং মারা গেছেন ৩৩১ জন। করোনা মহামারির শুরু থেকে ইউরোপের এই দেশটিতে এখন পর্যন্ত ৭৭ লাখ ১১ হাজার ৯৯৫ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এবং ১ লাখ ১৫ হাজার ৬০৫ জন মারা গেছেন। একই সময়ের মধ্যে ইউক্রেনে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৭ হাজার ১১৭ জন এবং মারা গেছেন ১৯৩ জন।
লাতিন আমেরিকার দেশ ব্রাজিল করোনায় আক্রান্তের দিক থেকে তৃতীয় ও মৃত্যুর সংখ্যায় তালিকার দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ১৩৮ জন এবং নতুন করে করোনায় সংক্রমিত হয়েছেন ৮৮ হাজার ৪৬৪ জন। অপরদিকে মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত দেশটিতে মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ২ কোটি ২৭ লাখ ১৮ হাজার ৬০৬ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ৬ লাখ ২০ হাজার ৪১৯ জনের।
এদিকে করোনায় আক্রান্তের তালিকায় দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে প্রতিবেশী দেশ ভারত। তবে ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যার তালিকায় দেশটির অবস্থান তৃতীয়। মহামারির শুরু থেকে দেশটিতে এখন পর্যন্ত মোট আক্রান্ত ৩ কোটি ৬৩ লাখ ১২ হাজার ৪৮৬ জন এবং মারা গেছেন ৪ লাখ ৮৪ হাজার ৭৪০ জন।
এছাড়া করোনায় আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় তুরস্কে ১৪৫ জন, পোল্যান্ডে ৬৮৪ জন, দক্ষিণ আফ্রিকায় ১৮১ জন, ফিলিপাইনে ১৪৪ জন এবং কানাডায় ১২৪ জন মারা গেছেন। অন্যদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় মেক্সিকোতে মারা গেছেন ১৬২ জন। মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত উত্তর আমেরিকার এই দেশটিতে মৃত্যু হয়েছে ৩ লাখ ৫৭৪ জনের।
উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে চীনের উহানে প্রথম করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়। এরপর ২০২০ সালের ১১ মার্চ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) করোনাকে ‘বৈশ্বিক মহামারি’ হিসেবে ঘোষণা করে। এর আগে একই বছরের ২০ জানুয়ারি বিশ্বজুড়ে জরুরি পরিস্থিতি ঘোষণা করে সংস্থাটি।