প্রথম ধাপে অনুষ্ঠিত পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র পদে আওয়ামী লীগ মনোনীত ১৮ জন প্রার্থী নৌকা প্রতীক নিয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। দলটির দুজন বিদ্রোহী প্রার্থী স্বতন্ত্র হয়ে নির্বাচনে অংশ নিয়ে মেয়র পদে জয়ী হয়েছেন। বিএনপি মনোনীত দুজন মেয়র পদপ্রার্থী ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে জয় পেয়েছেন। মেয়র পদে জয় পেয়েছেন বিএনপির একজন বিদ্রোহী প্রার্থী।
সোমবার (২৮ ডিসেম্বর) সকাল ৮টা থেকে দেশের ২৪টি পৌরসভায় ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনের (ইভিএম) মাধ্যমে ভোটগ্রহণ করা হয়। ভোটগ্রহণ করা হয় বিকেল ৪টা পর্যন্ত। খুলনার চালনা পৌরসভার বিএনপির মেয়র পদপ্রার্থী আবুল খায়ের খান আজ বিকেলে ভোটগ্রহণ চলাকালে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। এ কারণে সেখানে মেয়র পদের নির্বাচনী ফলাফল স্থগিত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিব মো. আলমগীর। কয়েকটি স্থানে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া, ভাঙচুর ও নির্বাচন বর্জনসহ কিছু বিচ্ছিন্ন ঘটনার মধ্য দিয়ে ভোটগ্রহণ শেষ হয়।
নির্বাচনে মেয়র পদে আওয়ামী লীগের যাঁরা জয়ী হয়েছেন তাঁরা হলেন, কুষ্টিয়ার খোকশায় তরিকুল ইসলাম তারিক, চুয়াডাঙ্গায় জাহাঙ্গীর আলম মালিক, চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড পৌরসভায় বদিউল আলম, মানিকগঞ্জ পৌরসভায় মো. রমজান আলী, নেত্রকোনার মদনে সাইফুল ইসলাম, বরগুনার বেতাগীতে এ বি এম গোলাম কবির, মৌলভীবাজারের বড়লেখায় আবুল ইমাম মো. কামরান চৌধুরী, পাবনার চাটমোহরে সাখাওয়াত হোসেন সাখো, রাজশাহীর কাটাখালীতে আব্বাস আলী, ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ে এস এম ইকবাল হোসেন সুমন, কুড়িগ্রামে মো. কাজিউল ইসলাম, বরিশালের উজিরপুরে মো. গিয়াস উদ্দিন ব্যাপারী ও বাকেরগঞ্জে মো. লোকমান হোসেন ডাকুয়া, পঞ্চগড়ে জাকিয়া খাতুন, ঢাকার ধামরাইয়ে গোলাম কবির, সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে মনির আক্তার খান তরু লোদী, রংপুরের বদরগঞ্জে আহসানুল হক চৌধুরী ও সুনামগঞ্জের দিরাইয়ে বিশ্বজিৎ রায়।
নির্বাচনে মেয়র পদে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী (স্বতন্ত্র) দুজন প্রার্থী জয়লাভ করেছেন। তাঁরা হলেন পটুয়াখালীর কুয়াকাটা পৌরসভায় মো. আনোয়ার হাওলাদার ও ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জে মো. ইকবাল হক।
নির্বাচনে মেয়র পদে বিএনপির যাঁরা জয়ী হয়েছেন তাঁরা হলেন রাজশাহীর পুঠিয়া পৌরসভায় মো. আল মামুন ও হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জে ফরিদ আহমেদ অলি। বিএনপির বিদ্রোহী (স্বতন্ত্র) প্রার্থী হিসেবে দিনাজপুরের ফুলবাড়ী পৌরসভায় মাহমুদ আলম লিটন নির্বাচিত হয়েছেন।
এদিকে, আজ ভোটগ্রহণ শুরু হওয়ার পর পরই পঞ্চগড় পৌরসভার কয়েকটি কেন্দ্রের বাইরে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়ার ঘটনা ঘটে। পরে পুলিশ ও বিজিবি লাঠিপেটা করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। আর পঞ্চগড় কালেক্টরেট আদর্শ শিক্ষা নিকেতন কেন্দ্রে একদল যুবক জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তার গাড়ি ভাঙচুর করে। আহত হন এক পুলিশ সদস্য।
এ ছাড়া পাবনার চাটমোহর পৌরসভায় নির্বাচনে এজেন্টদের বের করে দেওয়াসহ নানা অনিয়মের অভিযোগ এনে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির দুই বিদ্রোহী প্রার্থী ভোট বর্জন করেন।
এদিকে, খুলনার চালনা পৌরসভা মহিলা কলেজ কেন্দ্রে জোর করে ইভিএমে অন্যের ভোট দেওয়ার অভিযোগে এক পোলিং এজেন্টকে আটক করে পুলিশ। এই পৌরসভায় নির্বাচন বর্জন করেছে বিএনপি। সেইসঙ্গে রাজশাহীর পুঠিয়া ও কাঠাখালী পৌরসভায়ও দুই-একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনার মধ্য দিয়েই সম্পন্ন হয়েছে ভোটগ্রহণ।
এ ছাড়া ঢাকার ধামরাই, চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড, কুষ্টিয়ার খোকসা, সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর ও মৌলভীবাজার জেলার বড়লেখা পৌরসভাসহ অন্য স্থানে শান্তিপূর্ণভাবে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
খুলনা গেজেট / এমএম