২০২২ বিশ্বকাপ লিওনেল মেসির ক্যারিয়ারকে অনন্য এক পূর্ণতা দিয়ে গেছে। ১৮ ডিসেম্বর লুসাইল আইকনিক স্টেডিয়ামের ওই রাতে মেসি বিশ্বকাপে চুমু এঁকে দিয়েছিলেন অবশেষে। আজীবনের আক্ষেপ ঘুচে গেছে ওই এক রাতে।
তবে আক্ষেপ কি আসলেই ঘুচেছে? এখন প্রশ্ন তোলাই যায়। আর্জেন্টিনা ভক্ত হয়ে থাকলে ২০২২ এর ডিসেম্বরের ওই ফাইনালের পরও আট বছর আগের ওই ফাইনাল নিয়ে আক্ষেপ আপনি করে থাকতেই পারেন। সে ফাইনালটা যে ছিল চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ব্রাজিলের মাটিতে!
তবে সেটা যে শুধু সমর্থক হিসেবে আপনারই হয়েছে, এমন নয়। বিষয়টা খোদ লিওনেল মেসিকেও ভাবিয়েছে অনেক বার, ২০২২ বিশ্বকাপ জয়ের পরও। সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে বিষয়টা জানালেন আর্জেন্টাইন অধিনায়ক।
প্রসঙ্গটা উঠে এসেছিল ২০২২ বিশ্বকাপ ধরেই। সেবারের মহাকাব্যিক ফাইনালের সূত্র ধরে। সে ফাইনালের বিজিত দল ফ্রান্স আর তাদের ট্র্যাজিক হিরো কিলিয়ান এমবাপ্পের কথা ভাবুন। ৮০ মিনিটে এমবাপ্পে ২ গোল করে ফ্রান্সকে ম্যাচে ফেরালেন। যোগ করা সময়ে গোল করে হ্যাটট্রিকটাও পূরণ করলেন।
বিশ্বকাপ ফাইনালে হ্যাটট্রিকের কীর্তি এর আগে ছিল জিওফ হার্স্টের। ১৯৬৬ সালের ফাইনালে ইংল্যান্ডের হয়ে হ্যাটট্রিকটা করেছিলেন তিনি। তবে একটা জায়গায় এমবাপ্পে প্রথম বনে গেলেন। হার্স্ট হ্যাটট্রিকের পর বিশ্বকাপের ট্রফিতে চুমু খেয়েছিলেন। এমবাপ্পে তা পারেননি।
সে প্রসঙ্গে মেসি বলেন, ‘২০১৮ বিশ্বকাপ জেতায় এমবাপ্পের মনের শান্তিটা ছিল। তবে ফাইনালে যা করেছে, তা পাগলাটে, চারটা গোল করল (পেনাল্টি শ্যুটআউটসহ), এরপরও চ্যাম্পিয়ন হতে পারল না।’
দলের জন্য নিজের সামর্থ্যের ১২০ ভাগ ঢেলে দিয়েও জিততে না পারা, এমন কিছু তো মেসির সঙ্গেও হয়েছে। ২০১৪ বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনার এক গোল বাদে বাকি সবকিছুতে অবদান ছিল মেসির। এরপরও আলবিসেলেস্তেরা শিরোপাটা ঘরে তুলতে পারেনি। এমবাপ্পের প্রসঙ্গ ধরে সেটাই মনে পড়ে গেল মেসির। সে সঙ্গে সে বিশ্বকাপটা নিয়ে আক্ষেপও ঝরে পড়ল তার কণ্ঠে।
তিনি বলেন, ‘একই ঘটনা তো আমার সঙ্গেও ঘটেছে ২০১৪ সালে। এটা আমার জন্যে একটা মানসিক অত্যাচার ছিল। পেছন ফিরে তাকালে এখন মনে হয়, আমি তো দুটো বিশ্বকাপ জিততে পারতাম!’
তবে এরপরই মেসি ফিরে এলেন বাস্তবতায়। তার কাছে তো এখনও একটা বিশ্বকাপ আছেই। তিনি তাতেই খুশি। তিনি বলেন, ‘আমি ফুটবলের সবকিছুই জিতেছি– এটা বলতে পারাটা আসলেই মূল্যবান কিছু। আমি সবসময়ই বলি, ঈশ্বর আমাকে যা দিয়েছেন, তার জন্যে আমি তার কাছে কৃতজ্ঞ। ঈশ্বর আমাকে সবকিছুই দিয়েছেন।’
খুলনা গেজেট/এনএম