ইলিশ আহরণ ও বিপণন বন্ধের শেষ দিনে বাগেরহাটের সামুদ্রিক মাছ ক্রয়-বিক্র্য়ের পাইকারি আড়ত কেবি বাজারে উপচে পড়া ভীড় লক্ষ্য করা গেছে। মঙ্গলবার ফজরের পর থেকেই ক্রেতা-বিক্রেতা ও জেলেদের ভীড়ে সরগরম ছিল কেবি বাজার। ইলিশের দিকে আগ্রহ ছিল সবার বেশি। মাছের পরিমাণ কম থাকলেও বিক্রি হচ্ছিল চড়া দামে।তবে কাঙ্খিত মাছ না পাওয়ায় জেলেদের মুখে তেমন হাসি ছিল না। বেশির ভাগ ট্রলার মালিককেই লোকসান গুণতে হয়েছে এই সিজিনে এমনটি দাবি অনেক জেলের।
সকাল ৮টার দিকে কেবি বাজারে দেখা যায়, কেজি-কেজি মাছের পোন (৮০ পিস) বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ৯০ হাজার টাকা। ৫‘শ থেকে ৬‘শ গ্রামের মাছের পোন ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকা, ৭‘শ থেকে ৮‘শ গ্রামে মাছ ৫৫ থেকে ৬৫ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া ২‘শ থেকে ৩‘শ গ্রাম ওজনের মাছও বিক্রি হয়েছে। এসব মাছের পোন বিক্রি হয়েছে ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকায়।
ইলিশের বাইরে রুপচাঁদা, সাগরের বাইলা, লইট্যা, ঢেলা চ্যালা, কঙ্কন, মেইদ, কইয়া ভোল, জাবা ভোল, জাবা, বউ মাছ, পোয়া, টোনাসহ বিভিন্ন মাছ বিক্রি হয়েছে প্রচুর। এসব মাছ আকার, আকৃতি ও চেহারা ভেদে ১৫০ থেকে ৩শ’ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়েছে। তবে রুপচাঁদা সর্বনিম্ন ৫‘শ থেকে ৮‘শ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়েছে। এই ক্রয় বিক্রয় রাত ১২ টা পর্যন্ত চলবে বলে জানিয়েছেন কেবি বাজার ব্যবসায়ীরা।
সাগর থেকে মাছ ধরে আসা লতিফ, নজরুল, জাহিদসহ কয়েকজন জেলে বলেন, এ বছর ইলিশের মৌসুম শুরু হওয়ার পরে প্রথম কিছু দিন মাছ বেশি পেয়েছি। তবে শেষ দিকে আমরা বড় মাছ পেলেও, পরিমাণে অনেক কম পেয়েছি। কাল থেকে আমরা ২২দিন পর্যন্ত মাছ আহরণ করতে পারব না। এ সময়টা খুব কষ্টে যাবে আমাদের। কারণ এবার ট্রলার মালিকরা লোকসানে পড়েছেন। যার ফলে এই সময়ে আমরা মহাজনের কাছ থেকে কোন সহযোগিতা পাব না। আর সরকার ঘোষিত সহায়তা পাব কিনা তাও বলতে পারি না।
মাছ ব্যবসায়ী সিরাজুল ইসলাম বলেন, আমরা কেবি বাজার থেকে মাছ ক্রয় করে নিয়ে এলাকার বিভিন্ন বাজারে বিক্রি করি। আজকে ইলিশ বিক্রির শেষ দিন। তারপরও বেশি দামে তিন পোনের মত মাছ কিনেছি। শেষদিন তো অনেকেই মাছ ক্রয় করবেন। কিন্তু বাজার যদি ভাল না হয় লসে পড়তে হবে।
উপকূলীয় মৎস্যজীবী সমিতির সভাপতি ইদ্রিস আলী বলেন, এ বছর মাছের সাইজ বড় থাকলেও পরিমাণ কম ছিল। তাই জেলেরা কিছুটা বিপাকে পড়েছেন। ব্যবসায়ীরা তেমন লাভবান হতে পারবে না। তবে গেল বছরের মত শীতের মৌসুমে যদি সাগরে বেশি ইলিশ পাওয়া যায় তাহলে জেলে ও ব্যবসায়ীরা লোকসান পোষাতে পারবেন বলে আশা করেন তিনি।
মা ইলিশ রক্ষার জন্য সরকারের ঘোষণা অনুযায়ী ১৪ অক্টোবর থেকে ৪ নভেম্বর পর্যন্ত ইলিশ আহরণ ও বিপণন বন্ধ থাকবে।
খুলনা গেজেট/এনএম