খুলনা, বাংলাদেশ | ১১ পৌষ, ১৪৩১ | ২৬ ডিসেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  সচিবালয়ের ৭ নম্বর ভবনে আগুন, নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে ফায়ার সার্ভিসের ১৮টি ইউনিট

২০০৯ থেকে ২০২৪ : কারসাজি-জালিয়াতির মাধ্যমে পুঁজিবাজার থেকে লোপাট লাখো কোটি টাকা

গেজেট ডেস্ক

আওয়ামী লীগ সরকার ২০০৯ সালে দায়িত্ব নেয়ার পর দেড় বছরে দেশের পুঁজিবাজারে বড় ধরনের উল্লম্ফন ঘটে। অস্বাভাবিক এ উল্লম্ফনের পর হঠাৎ ধস নামে ২০১১ সালের জানুয়ারিতে। লোকসানের কারণে বিনিয়োগকারীদের আত্মহত্যার মতো ঘটনাও ঘটে। এরপর সরকারের পক্ষ থেকে তদন্ত কমিটি গঠন এবং পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) সংস্কার ও পুনর্গঠনের উদ্যোগ নেয়া হয়। এরই ধারাবাহিকতায় ১০ বছর সংস্থাটির চেয়ারম্যানের দায়িত্বে ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফাইন্যান্সের অধ্যাপক ড. এম খায়রুল হোসেন। তার উত্তরসূরি হিসেবে ২০২০ সালে দায়িত্বে আসেন একই বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যাংকিং ও ইন্স্যুরেন্স বিভাগের অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম। যদিও আলোচিত এ দুই চেয়ারম্যানের বিভিন্ন ধরনের বিতর্কিত কর্মকাণ্ড ও স্বজনপ্রীতির কারণে দেশের পুঁজিবাজার আরো খাদের কিনারে চলে গেছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

দেশের পুঁজিবাজার থেকে জাল-জালিয়াতি, কারসাজি, প্লেসমেন্ট শেয়ার ও প্রতারণার মাধ্যমে গত ১৫ বছরে ১ লাখ কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন বাজারসংশ্লিষ্টরা। এর মধ্যে প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) মাধ্যমে অনেক কোম্পানি পুঁজিবাজার থেকে অর্থ সংগ্রহ করেও নিজেদের ব্যবসায়িক ও আর্থিক অবস্থার উন্নতি করতে পারেনি। উল্টো তাদের বিরুদ্ধে আইপিওর অর্থ ভিন্ন খাতে ব্যয়ের ঘটনাও দেখা গেছে। এছাড়া আইপিওতে আসার পর কৃত্রিমভাবে কোম্পানির শেয়ারের দাম বাড়িয়ে এর মাধ্যমেও পুঁজিবাজার থেকে অর্থ হাতিয়ে নিয়েছেন উদ্যোক্তারা। প্লেসমেন্ট প্রক্রিয়ায়ও বড় অংকের অর্থ হাতিয়ে নেয়া হয়েছে। অনেক ক্ষেত্রে প্রভাবশালী ব্যক্তিদের টাকা ছাড়াই উপহার হিসেবে প্লেসমেন্ট শেয়ার দেয়া হয়েছে। এসব শেয়ার কোম্পানির তালিকাভুক্তির পর বাড়তি দামে বিক্রি করেছেন তারা। আইপিও-সংক্রান্ত এসব কার্যক্রমের মাধ্যমে পুঁজিবাজার থেকে ২৫ হাজার কোটি টাকা তছরুপ করা হয়েছে।

বেক্সিমকো গ্রুপের বিভিন্ন কোম্পানির একীভূতকরণ, সুকুক ও বন্ড ইস্যু এবং প্লেসমেন্ট শেয়ারের মাধ্যমে প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ রয়েছে। এছাড়া গত ১৫ বছরে সুবিধাভোগী অনেক শেয়ার ব্যবসায়ী ও কোম্পানির উদ্যোক্তা পুঁজিবাজার কারসাজির মাধ্যমে বাজার থেকে বড় অংকের অর্থ হাতিয়েছেন। টাকার অংকে এর পরিমাণ ৫৫ হাজার কোটি টাকার মতো হতে পারে বলে মনে করছেন বাজারসংশ্লিষ্টরা।

২০১১ সালের পুঁজিবাজার ধসের পর ইব্রাহিম খালেদের নেতৃত্বে গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে প্লেসমেন্ট বাণিজ্য, আইপিওর প্রক্রিয়ায় অনিয়ম, অমনিবাস হিসাবের আড়ালে সন্দেহজনক লেনদেন, প্রভাবশালী ব্যবসায়ী, ব্রোকার ও মার্কেট প্লেয়ারদের ভূমিকার বিষয়টি উঠে এসেছে। প্রতিবেদনে ২০০৯ ও ২০১০ সালে যেসব কোম্পানির শেয়ারদর অস্বাভাবিক হারে উল্লম্ফন হয়েছিল সেগুলোর একটি তালিকা দেয়া হয়। তাতে দেখা যায়, ২০০৯ সালে বিচ হ্যাচারির শেয়ারদর ৮২৯ শতাংশ, পূরবী জেনারেল ইন্স্যুরেন্সের শেয়ারদর ৫৬৭, আফতার অটোমোবাইলসের শেয়ারদর ৪৭৮, পদ্মা সিমেন্টের শেয়ারদর ৪৬৬, রহিম টেক্সটাইলের শেয়ারদর ৩৪২ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছিল। একইভাবে এর পরের বছর ২০১০ সালে সিটি ভেজিটেবলসের দর ৪ হাজার ১৫৮ শতাংশ, সাফকো স্পিনিংয়ের ৭৯২, তাল্লু স্পিনিংয়ের ৪৪৪, রহিমা ফুডের ৩২০ ও বিডি ওয়েল্ডিংয়ের শেয়ারদর বেড়েছিল ২৯৯ শতাংশ পর্যন্ত।

ইব্রাহিম খালেদের তদন্ত প্রতিবেদনে ১৯৯৬ সালের পুঁজিবাজার ধসের ঘটনার তদন্ত প্রতিবেদনটি আমলে না নেয়ার বিষয় উল্লেখ করে সরকারের প্রতি বেশকিছু সতর্কতা ও সুপারিশ করা হয়েছিল। এক্ষেত্রে বলা হয়, ‘১৯৯৬ সালের তদন্ত প্রতিবেদনে সন্দেহের তালিকায় ছিলেন ইমতিয়াজ হোসেন, খোরশেদ আলম, সালমান এফ রহমান, এনায়েতুর রহিম, রকিবুর রহমান, শাকিল রিজভি প্রমুখ। বর্তমান তদন্তে তাদের মধ্যে সালমান এফ রহমান ও রকিবুর রহমানের ভূমিকা নিয়ে ব্যাপক মতামত এসেছে এবং কিছু তথ্যও পরিবেশিত হয়েছে। এসইসিকে প্রভাবিত করতে দুজনেই সক্রিয় ছিলেন বলে অনেকের ধারণা। এসইসির চেয়ারম্যানের নিয়োগ ও সদস্য মনসুর আলমের পুনর্নিয়োগের ক্ষেত্রে সালমান এফ রহমান ও রকিবুর রহমানের জোরালো তদবির ও সমর্থন ছিল বলে অনেকের বিশ্বাস। বিডি থাই অ্যালুমিনিয়ামের অস্বচ্ছ কেসটির তদবিরে সালমান এফ রহমান নিজেই বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের কাছে ধরনা দিয়েছেন। জিএমজি, ইউনিক হোটেল প্রভৃতি কেসে সালমান এফ রহমান সম্পৃক্ত রয়েছেন। কেসগুলো অস্বচ্ছ। এসইসি পরিচালনায় দুজনেরই অনাকাঙ্ক্ষিত প্রভাব ছিল। এ কারণে সাধারণের মধ্যে সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়েছে।’

তদন্ত প্রতিবেদনের এ সতর্কতা ও সুপারিশ পরবর্তী সময়ে সরকার কিংবা নিয়ন্ত্রক সংস্থা সেভাবে ভ্রুক্ষেপ করেনি। কেননা ২০১১-পরবর্তী সময়েও দেশের পুঁজিবাজারে এ দুজনের প্রভাব অব্যাহত ছিল।

ধস-পরবর্তী সময়ে ২০১১ সালের ১৫ মে পুঁজিবাজার সংস্কার কার্যক্রমের অংশ হিসেবে অধ্যাপক ড. এম খায়রুল হোসেনকে বিএসইসির চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ দেয় সরকার। তার সঙ্গে কমিশনার হিসেবে নিয়োগ পান চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসাববিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক হেলাল উদ্দীন নিজামী, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সাবেক কর্মকর্তা মো. আমজাদ হোসেন, করপোরেট খাতের শীর্ষ নির্বাহী আরিফ খান ও সাবেক জেলা জজ মো. আবদুস সালাম সিকদার।

বিএসইসির চেয়ারম্যান হিসেবে সবচেয়ে বেশি দীর্ঘ সময় দায়িত্ব পালন করেছেন ড. খায়রুল। এমনকি আইন ভঙ্গ করে তাকে তৃতীয় মেয়াদেও নিয়োগ দেয় সরকার। দেশের পুঁজিবাজারের সংস্কারে গুরুদায়িত্ব ছিল তার ওপর। তার মেয়াদে পুঁজিবাজারে অনেক আইন-কানুন, বিধি-বিধান প্রণয়ন হলেও অনেক ক্ষেত্রেই এর প্রয়োগে ছিল বেশ ঘাটতি। বিশেষ করে খায়রুল কমিশনের মেয়াদে আইপিওর মাধ্যমে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্তির ক্ষেত্রে দুর্বল ও মানহীন কোম্পানিকে পুঁজিবাজারে নিয়ে আসার অভিযোগ রয়েছে। এ সময় প্রভাবশালী উদ্যোক্তা, ইস্যু ব্যবস্থাপক, নিরীক্ষক এবং এক শ্রেণীর বিনিয়োগকারীর সমন্বয়ে একটি বড় কারসাজি চক্র গড়ে ওঠে। অনেক ক্ষেত্রেই আইনের ফাঁক-ফোকর কিংবা ছাড় দিয়ে সহযোগীর ভূমিকায় ছিলেন খোদ নিয়ন্ত্রক সংস্থার কর্মকর্তারা।

গত দেড় দশকে ১৪৯টি কোম্পানি আইপিওর মাধ্যমে পুঁজিবাজার থেকে ১১ হাজার কোটি টাকার বেশি মূলধন সংগ্রহ করেছে, যার অধিকাংশই এসেছে খায়রুল কমিশনের মেয়াদে। এর মধ্যে অনেক কোম্পানিই বর্তমানে আর্থিকভাবে দুর্বল ও ভগ্ন অবস্থায় রয়েছে। উৎপাদন বন্ধ রয়েছে বেশকিছু কোম্পানির। এমনকি আইপিওর ক্ষেত্রে স্টক এক্সচেঞ্জের বিরূপ প্রতিবেদনও আমলে নেয়া হতো না। কপারটেক ইন্ডাস্ট্রিজের তালিকাভুক্তি নিয়ে অনিয়মের অভিযোগ উঠলেও ভ্রুক্ষেপ করেনি খায়রুল কমিশন। এমনকি প্রয়াত অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত অ্যাপোলো ইস্পাতকে তালিকাভুক্ত না করার পরামর্শ দিলেও কর্ণপাত করেননি বিএসইসির তৎকালীন চেয়ারম্যান খায়রুল হোসেন। প্লেসমেন্ট কেলেঙ্কারির ঘটনায় আলোচিত কোম্পানি রিং শাইন টেক্সটাইলের আইপিও অনুমোদন দিয়েছিল খায়রুল কমিশন।

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক কেএএম মাজেদুর রহমান বলেন, ‘পুঁজিবাজারে প্রথম মূলধন হচ্ছে আস্থা। যদি এখানে স্বচ্ছতা, সুশাসন ও ফেয়ার প্লে থাকে তাহলেই আস্থা থাকবে। বিনিয়োগ করার পরদিনই যদি লোকসান গুনতে হয় তাহলে মানুষ কেন আসবে? পুঁজিবাজারকে নিজের মতো চলতে দিতে হবে। নিয়ন্ত্রক সংস্থার কাজ না হলেও তারা অনেক ক্ষেত্রেই স্টক এক্সচেঞ্জের ওপর অভিভাবকত্ব দেখাতে চায়। এখানে বাজে কোম্পানির শেয়ারদর ইচ্ছামতো কমানো-বাড়ানো হয় এবং এর কোনো বিহিত নেই। ডিএসইরও অনেক ক্ষেত্রে করার কিছু থাকে না, কারণ নিয়ন্ত্রণটা বিএসইসির কাছেই থাকে। কারসাজি করার এক বছর পর যদি সামান্য টাকা জরিমানা করা হয় তাহলে তো হলো না। আইন ভেঙে জোর-জবরদস্তি করে সুকুকের মাধ্যমে ৩ হাজার কোটি টাকা নেয়া হয়েছে। পুঁজিবাজার গতিশীল না হওয়ার ব্যর্থতার দায় ডিএসইর পর্ষদ ও বিএসইসিকেই নিতে হবে। বিদ্যমান পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে নিয়ন্ত্রক সংস্থা ও স্টক এক্সচেঞ্জে শক্তিশালী ব্যবস্থাপনা নিয়ে আসতে হবে।’

খায়রুল কমিশনের সময়ে দেশের পুঁজিবাজারের গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ মিউচুয়াল ফান্ড খাতটিকে সুবিধাভোগীদের কব্জায় দিয়ে দেয়া হয়েছে। বিশেষ করে মেয়াদি মিউচুয়াল ফান্ড খাতের শীর্ষ দুই প্রতিষ্ঠান রেইস ম্যানেজমেন্ট পিসিএল ও এলআর গ্লোবাল বাংলাদেশ অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানির বিরুদ্ধে ইউনিট হোল্ডারদের অর্থ তছরুপের অভিযোগ থাকলেও বিএসইসির পক্ষ থেকে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। রেইসের কর্ণধার চৌধুরী নাফিজ সরাফত ও হাসান তাহের ইমাম এবং এলআর গ্লোবালের প্রধান নির্বাহী রিয়াজ ইসলামকে বিভিন্ন সময় আনুকূল্য দেখিয়েছে বিএসইসি। বিশেষ করে সব মেয়াদি মিউচুয়াল ফান্ডের মেয়াদ আরো ১০ বছরের জন্য বাড়ায় খায়রুল কমিশন। যদিও মেয়াদ শেষে আদালতের রায়ে এইমস অ্যাসেটে ম্যানেজমেন্ট পরিচালিত মিউচুয়াল ফান্ড এর আগে অবসায়নে গিয়েছিল। মূলত রেইসকে সুবিধা দেয়ার জন্যই এ মেয়াদ বাড়ানো হয়েছিল বলে মনে করেন বাজারসংশ্লিষ্টরা। এ পরিবর্তনের ফলে এ খাতের প্রতি বিনিয়োগকারীদের আস্থা তলানিতে গিয়ে ঠেকে।

বিএসইসির চেয়ারম্যান হিসেবে তৃতীয় মেয়াদে নিয়োগের বিষয়টি ড. এম খায়রুল হোসেনকে আরো বিতর্কিত করে তুলেছিল। এ সময়ে তার প্রতি ক্ষুব্ধ হয়ে বিনিয়োগকারীরা মাঝেমধ্যেই মিছিল করতেন। এর আগে কখনো বিএসইসির কোনো চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে বিনিয়োগকারীদের রাস্তায় নামতে দেখা যায়নি। দেশের শেয়ারবাজারে সবচেয়ে বড় সমালোচিত ফ্লোর প্রাইস পদ্ধতিও খায়রুল কমিশনের সময়ে চালু করা হয়েছিল। এর প্রভাবে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে পুঁজিবাজারের সুনাম ধূলিসাৎ হয়ে যায়। তাছাড়া জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) আলোচিত সাবেক কর্মকর্তা মতিউর রহমানের প্লেসমেন্ট ব্যবসা উত্থান হয়েছে খায়রুল কমিশনের সময়। আইপিওতে আসা কোম্পানিগুলোর আর্থিক দুর্বলতা ও কর ফাঁকির বিষয়টিকে পুঁজি করে তখন প্লেসমেন্ট শেয়ার হাতিয়ে নেন মতিউর। তাছাড়া প্লেসমেন্ট বাণিজ্যের সুবিধাভোগী ছিলেন পুলিশের সাবেক আইজি বেনজীর আহমেদ, দুদক ও বিভিন্ন সংস্থার কর্মকর্তাসহ আরো অনেকেই।

বিএসইসির সাবেক চেয়ারম্যান ফারুক আহমেদ সিদ্দিকী বলেন, ‘গত ১৫ বছর পুঁজিবাজার বেশ খারাপ ছিল। সুশাসন ছিল না, ভালো কোম্পানি তালিকাভুক্ত হয়নি, শেয়ারদরে কারসাজি হয়েছে, ফ্লোর প্রাইস দেয়ার মাধ্যমে ভালো কোম্পানির লেনদেন একপ্রকার বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। এখন পর্যন্ত বাজে শেয়ারের মাধ্যমে কারসাজি চলছে। প্রচুর আইন থাকলেও অনেক ক্ষেত্রেই এর প্রয়োগ হয়নি। এ কারণে পুঁজিবাজারের প্রতি মানুষের আস্থা চলে গেছে। নিয়ন্ত্রক সংস্থা অনেক ধরনের অনিয়ম করেছে, অনেককে সুযোগ-সুবিধা দেয়া হয়েছে, কারসাজির বিরুদ্ধে যথাযথভাবে ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। বর্তমানে দেশের অর্থনীতির প্রায় সব সূচকই খারাপ অবস্থায় আছে। তার ওপর গত এক-দেড় মাসের ঘটনা আরো বড় ধাক্কা খেয়েছে। এটির প্রভাব কতদিনে কাটিয়ে উঠতে পারবে সেটি একটি প্রশ্ন। অর্থনীতি ও পুঁজিবাজার রাতারাতি ভালো হয়ে যাবে এমন প্রত্যাশা করা উচিত নয়। এক্ষেত্রে কিছুটা সময় লাগবে। গত তিনদিনে পুঁজিবাজারে যে ঊর্ধ্বমুখিতা দেখা গেছে সেটি কতটুকু যৌক্তিক কারণে আর কতটুকু আবেগের কারণে বেড়েছে সেটি সময়ই বলে দেবে।’

খায়রুল কমিশনের প্রথম মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে কমিশনার আরিফ খান পদত্যাগ করেছিলেন। যদিও সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন খায়রুল কমিশনের দুর্নাম থেকে নিজেকে বাঁচাতেই তিনি পদত্যাগ করেন। অবশ্য খায়রুল কমিশনের দুর্বল ও বিতর্কিত আইপিও অনুমোদনের ক্ষেত্রে তিনি দায় এড়াতে পারেন না বলে মনে করেন বাজারসংশ্লিষ্টরা। কেননা বিএসইসির আইপিও অনুমোদন যে বিভাগের আওতাধীন, সেই ক্যাপিটাল ইস্যু বিভাগের কমিশনার ছিলেন আরিফ খান। খায়রুলের ওই মেয়াদে আরো দুই কমিশনার দায়িত্ব পালন করেছিলেন। এর মধ্যে একজন ছিলেন প্রয়াত অধ্যাপক ড. স্বপন কুমার বালা ও খন্দকার কামালুজ্জামান।

বিএসইসির চেয়ারম্যান হিসেবে বিদায় নেয়ার পর ড. এম খায়রুল হোসেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিরে যান। পরবর্তী সময়ে গত বছরের সেপ্টেম্বরে সরকার তাকে পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশনের (পিকেএসএফ) চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ দেয়। এ বিষয়ে তার বক্তব্য জানতে যোগাযোগের চেষ্টা করেও সাড়া পাওয়া যায়নি।

খায়রুল কমিশনের বিদায় নেয়ার আগ মুহূর্তে কভিডের প্রভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে দেশের অর্থনীতি ও পুঁজিবাজার। শেয়ারের দরপতন ঠেকাতে ফ্লোর প্রাইস আরোপের পাশাপাশি ৬৬ দিন বন্ধ রাখা হয় লেনদেন। এ অবস্থায় ২০২০ সালের ১৭ মে বিএসইসির চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম। তার সঙ্গে কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব নেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফাইন্যান্স বিভাগের অধ্যাপক ড. শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ, অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগের অধ্যাপক ড. মিজানুর রহমান ও সাবেক সচিব মো. আব্দুল হালিম। পরবর্তী সময়ে শিবলী কমিশনের সদস্য হিসেবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক রুমানা ইসলাম যোগ দেন।

শিবলী কমিশনের শুরুতেই পুঁজিবাজারে লেনদেন চালু করাসহ বেশকিছু উদ্যোগ নেয়া হয়, যা বাজারসংশ্লিষ্টদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিল। বিশেষ করে কিছু বড় কারসাজিকারীকে বড় অংকের জরিমানা করা হয়। এতে অনেকেই খায়রুল কমিশনের দুঃসহ অভিজ্ঞতা কাটিয়ে পুঁজিবাজার ঘুরে দাঁড়াবে বলে মনে করেছিলেন। কিন্তু কিছুদিন পরই আশাহত হন বিনিয়োগকারীরা।

কভিড-পরবর্তী সময়ে পুঁজিবাজারকে চাঙ্গা করার জন্য সূচকের উত্থানে বেশকিছু বাজার কারসাজিকারীকে শিবলী কমিশনের পক্ষ থেকে পরোক্ষ ও প্রত্যক্ষভাবে আনুকূল্য দেয়ার অভিযোগ রয়েছে। গত কয়েক বছর ধরে পুঁজিবাজারের আলোচিত বিনিয়োগকারী সমবায় অধিদপ্তরে উপ-নিবন্ধক মো. আবুল খায়ের হিরু ও তার সহযোগীরা কারসাজির মাধ্যমে হাজার হাজার কোটি টাকা কামিয়ে নিয়েছেন। অধ্যাপক শিবলীর সঙ্গে কমিশনে তার কার্যালয়ের দেখা করার পরই হিরু পুঁজিবাজারে কারসাজি শুরু করেন বলে জনশ্রুতি রয়েছে। এক্ষেত্রে হিরুকে অধ্যাপক শিবলীর সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিয়েছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের আরেক অধ্যাপক। সরকারি কর্মকর্তা হিরুর কাছে অনেক প্রভাবশালীর পোর্টফোলিও ম্যানেজের দায়িত্ব ছিল।

বেশকিছু কারসাজির ঘটনায় হিরু ও তার সহযোগীদের জরিমানা করা হলেও তারা বাজার থেকে এর চেয়ে অনেক বেশি অর্থ তুলে নিয়েছেন। আবার অন্যান্য ক্ষেত্রে একক ব্যক্তির বিরুদ্ধে জরিমানা আদেশ দেয়া হলেও হিরুর ক্ষেত্রে এককভাবে জরিমানার আদেশ দেয়া হয়নি। বরং সম্মিলিতভাবে জরিমানা করা হয়। সরকারি চাকরিজীবী হিরুর যাতে চাকরির ক্ষেত্রে কোনো সমস্যা না হয় সেজন্যই এভাবে জরিমানা করা হয় বলে অভিযোগ। এমনকি তার সঙ্গে বিএসইসির শীর্ষ কর্তাদের দহরম-মহরম সম্পর্ককেও ভালো চোখে দেখেননি বাজারসংশ্লিষ্টরা।

হিরু নিজের পাশাপাশি ক্রিকেটার সাকিব আল হাসানকেও তার কারসাজির অংশীদার করেন। হিরু ও সাকিবের প্রতিষ্ঠান মোনার্ক হোল্ডিংসকে ব্রোকারেজ লাইসেন্স দেয় বিএসইসি। এ প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে জড়িত ছিলেন আরেক বিতর্কিত বিনিয়োগকারী জাবেদ এ মতিন। তার বিরুদ্ধে জালিয়াতির অভিযোগ রয়েছে। এমনকি মিলিয়ন ডলার জালিয়াতির সঙ্গে যুক্ত একটি ব্যাংক হিসাব থেকে শিবলী রুবাইয়াতের কাছে অর্থ এসেছে বলে অর্গানাইজড ক্রাইম অ্যান্ড করাপশন রিপোর্টিং প্রজেক্টের (ওসিসিআরপি) প্রতিবেদনে উঠে এসেছে। এ অর্থ লেনদেনের সঙ্গে জাভেদ মতিনের নাম পাওয়া গেছে এবং তিনি শিবলী রুবাইয়াতের বন্ধু বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।

মতিন-হিরু ছাড়াও পুঁজিবাজারের এক শ্রেণীর বড় বিনিয়োগকারী শিবলী কমিশনের প্রশ্রয়ের কারণে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন কোম্পানিতে বিনিয়োগ করে বড় অংকের অর্থ হাতিয়েছেন। শিবলী দায়িত্ব নেয়ার পরের বছর ২০২১ সালে যে পাঁচটি কোম্পানির শেয়ারদর সবচেয়ে বেশি বেড়েছে তার মধ্যে ছিল সোনালী পেপার ৩২১ শতাংশ, ফরচুন সুজ ৩১৭, এমারাল্ড অয়েল ২৮৪, সালভো কেমিক্যাল ২৫৩ ও জেনেক্স ইনফোসিস ২৩১ শতাংশ। ২০২২ সালে সবচেয়ে দর বাড়া শেয়ারের তালিকায় ছিল ওরিয়ন ইনফিউশনস ৫০৭ শতাংশ, ইমাম বাটন ইন্ডাস্ট্রিজ ৪০০, সি পার্ল বিচ রিসোর্টস অ্যান্ড স্পা ৩১৭, মেঘনা কনডেন্সড মিল্ক ইন্ডাস্ট্রিজ ১৮৩ ও জুট স্পিনার্স ১৭৪ শতাংশ। ২০২৩ সালে যেসব শেয়ারের দর সবচেয়ে বেশি বেড়েছিল তার মধ্যে খান ব্রাদার্স পিপি ওভেন ইন্ডাস্ট্রিজ ৬৮৬ শতাংশ, লিগ্যাসি ফুটওয়্যার ৩৩৮, খুলনা পিন্টিং অ্যান্ড প্যাকেজিং ২২৩, আরএন স্পিনিং মিলস ১৬১ ও ফাইন ফুডস ১৩৪ শতাংশ।

সর্বশেষ এ বছরের জানুয়ারি থেকে জুন সময়ে বাংলাদেশ মনোস্পুল পেপার ম্যানুফ্যাকচারিংয়ের ১৪৬ শতাংশ, তাওফিকা ফুডসের ১২৮, পেপার প্রসেসিং অ্যান্ড প্যাকেজিংয়ের ১১৮ শতাংশ শেয়ারদর বেড়েছে। এগুলোর অধিকাংশই দুর্বল ও রুগ্‌ণ কোম্পানি। অথচ কোম্পানিগুলোর অস্বাভাবিক শেয়ারদর বৃদ্ধির বিষয়ে অনেক ক্ষেত্রেই বিএসইসির পক্ষ থেকে দৃশ্যমান কোনো পদক্ষেপ দেখা যায়নি। ক্ষেত্রবিশেষে তদন্ত করা হলেও কারসাজিতে যুক্ত কাউকে কাউকে বাঁচিয়ে দেয়া হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে।

জাপানি বিনিয়োগের কথা বলে এমারাল্ড অয়েলের শেয়ারদর বাড়ানোর কারিগর ছিলেন মিয়া মামুন। যদিও এখন পর্যন্ত কোম্পানিটিতে কোনো জাপানি বিনিয়োগ আসেনি। অথচ বিভিন্ন সময়ে এ কোম্পানিটিকে কারসাজি করতে পরোক্ষভাবে বিএসইসির পক্ষ থেকে সহায়তা করা হয়েছে। এছাড়া শিবলী কমিশনের সঙ্গে সখ্যের সুযোগে কিছু উদ্যোক্তা তাদের লোকসানি কোম্পানিকে ওভার দ্য কাউন্টার (ওটিসি) মার্কেট থেকে মূল বাজারে নিয়ে আসার মাধ্যমে বড় অংকের অর্থ হাতিয়ে নিয়েছেন।

শিবলী কমিশনের সময়ে দেশের পুঁজিবাজারে শেয়ারদর কারসাজির ঘটনার ব্যাপকতা অনেক বেড়ে যায়। অনেক সময় পুঁজিবাজারে সূচক ও লেনদেন সামনের দিনে বাড়বে কিংবা কোনো খাতের শেয়ারে বিদেশী বিনিয়োগ আসছে এমন ধরনের বক্তব্যের মাধ্যমে শিবলী রুবাইয়াত নিজেই শেয়ারদর ও পুঁজিবাজারকে প্রভাবিত করতে ভূমিকা রেখেছেন। তার সময়ে গ্যাম্বলিং শেয়ার এতটাই আকর্ষণীয় ছিল যে বিনিয়োগকারীদেরও মৌল ভিত্তির ও বড় মূলধনি কোম্পানির পরিবর্তে দুর্বল কোম্পানির শেয়ারের দিকে ঝুঁকতে দেখা গেছে। তাছাড়া শেয়ার কারসাজির ঘটনা তদন্তে কোনো কমিটি হলেও অনেক সময় এ তথ্য গণমাধ্যমের কাছে গোপন রাখা কিংবা আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করা হতো না। যদিও বিএসইসির দীর্ঘদিনের রেওয়াজ অনুসারে এসব তথ্য বরাবরই গণমাধ্যমকে আনুষ্ঠানিকভাবে জানানো হতো। এমনকি অনেক সময় স্পর্শকাতর তথ্য থাকলেও কমিশন সভার সিদ্ধান্ত প্রকাশ করা হতো না। তাছাড়া বিএসইসিতে সাংবাদিকদের প্রবেশে সরাসরি প্রতিবন্ধকতা তৈরি না করলেও তিনি কিছু ফ্লোরের ক্ষেত্রে তা করেছিলেন।

তাছাড়া শিবলী কমিশনের সময়ে সম্পদ ব্যবস্থাপনা প্রতিষ্ঠান ইউএফএস অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট ও অ্যালায়েন্স ক্যাপিটালের বিরুদ্ধেও ইউনিট হোল্ডারদের অর্থ তছরুপের অভিযোগ রয়েছে। যদিও এখন পর্যন্ত এসব অর্থ ফেরত আনতে পারেনি বিএসইসি। রিংশাইন টেক্সটাইলের প্লেসমেন্ট জালিয়াতির ঘটনা উদঘাটিত হলেও এ বিষয়ে কোনো শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। এছাড়া রুগ্‌ণ ও দুর্বল কোম্পানিগুলোর পর্ষদ পুনর্গঠনের মাধ্যমে সেখানে শিবলী রুবাইয়াতের ঘনিষ্ঠ সহকর্মী শিক্ষকসহ অন্যদের নিয়োগ দেয়ার অভিযোগ রয়েছে। পর্ষদ পুনর্গঠনের পরও এসব কোম্পানির বেশির ভাগেরই আর্থিক ও ব্যবসায়িক অবস্থার উন্নতি হয়নি।

আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর থেকে অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম আর অফিসে যাননি। আত্মগোপনে থেকেই গত শনিবার বিএসইসির চেয়ারম্যান পদ থেকে ই-মেইল পাঠিয়ে পদত্যাগ করেছেন তিনি। ফলে এ বিষয়ে তার বক্তব্য জানতে যোগাযোগ করেও সাড়া পাওয়া যায়নি।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফাইন্যান্স বিভাগের অধ্যাপক ড. মাহমুদ ওসমান ইমাম বলেন, ‘সূচক বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মার্জিন ঋণের অনুপাত বাড়ানোর মতো বিধান করা হয়েছে। এতে করে পরোক্ষভাবে পুঁজিবাজারে উল্লম্ফনকে উসকে দেয়া হয়েছে। নিয়ন্ত্রক সংস্থার মধ্যে সূচককে ধরে রাখার প্রবণতাও দেখা গেছে। এক্ষেত্রে সূচক ঊর্ধ্বমুখী থাকাকালীন কোনো শেয়ারের দাম অস্বাভাবিকভাবে বাড়লেও সেটি ভ্রুক্ষেপ করা হতো না। শেয়ারদর কমতে শুরু করলে তখন নিয়ন্ত্রক সংস্থার সক্রিয়তা শুরু হতো। এর মাধ্যমে পরোক্ষভাবে যারা কারসাজির সঙ্গে যুক্ত তাদেরই প্রশ্রয় দেয়া হয়েছে। তাছাড়া কারসাজির মাধ্যমে যে পরিমাণ মুনাফা করেছে, জরিমানা হয়েছে তার চেয়ে অনেক কম। এতেও কারসাজি উৎসাহিত হয়েছে।’

আইপিও নিয়ে অনেক ব্যত্যয় হয়েছে জানিয়ে ড. মাহমুদ ওসমান ইমাম বলেন, ‘আইপিওর মাধ্যমে অর্থ সংগ্রহ করে সেটি দিয়ে ঋণ পরিশোধের সুযোগ দেয়া হয়েছিল, যা মোটেও উচিত হয়নি। পরবর্তী সময়ে আইন পরিবর্তন করে আইপিও তহবিলের এক-তৃতীয়াংশ ঋণ পরিশোধের সুযোগ দেয়া হয়, এটিও উচিত নয়। কারণ পুঁজিবাজার থেকে নেয়া অর্থ শুধু ব্যবসা সম্প্রসারণের জন্য ব্যয় করা উচিত। বুকবিল্ডিং পদ্ধতিকে এমন জায়গায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে যে এটি আর কোম্পানির শেয়ারের প্রকৃত ভ্যালুয়েশন নির্ধারণের ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখতে পারছে না। দেশের মিউচুয়াল ফান্ড খাতটিকেও গত ১৫ বছরে ধ্বংস করে দেয়া হয়েছে। বিশেষ করে মেয়াদি মিউচুয়াল ফান্ডের মেয়াদ আরো ১০ বছর বাড়ানোর মাধ্যমে এ খাতের প্রতি বিনিয়োগকারীদের বীতশ্রদ্ধ করে তোলা হয়েছে। তাছাড়া পুঁজিবাজারে এ সময়ে এত বেশি আইন-কানুন করা হয়েছে যে প্রকৃতপক্ষে কোনটি কার্যকর আছে সেটি খুঁজে বের করতে গলদঘর্ম হতে হয়।’

সূত্র: বণিক বার্তা।

 

খুলনা গেজেট/এনএম




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!