ইউরোর শেষ ষোলোয় রোমানিয়াকে হারিয়ে কোয়ার্টার ফাইনালে উঠেছে নেদারল্যান্ডস। অ্যালিয়াঞ্জ অ্যারেনায় মঙ্গলবার (২ জুলাই) রাতে রোমানিয়াকে ৩-০ গোলে উড়িয়ে দিয়েছে ডাচরা।
দলের হয়ে দুটি করেন ডনিয়েল মালেন ও বাকি গোলটি করেন কডি গোকপা। শক্তি-সামর্থ্যে বেশ পিছিয়ে থাকা রোমানিয়ানদের বিপক্ষে জয় পেতে তেমন একটা বেগ পেতে হয়নি ডাচদের। বল দখল এবং গোলে শট, সবকিছুতেই রোমানিয়ার চেয়ে ঢের এগিয়ে ছিল ডাচরা। ৬৬ শতাংশ বল দখলে রেখে গোলে মোট ২৩টি শট নিয়েছে ডাচরা। বিপরীতে রোমানিয়া গোলে শট নিয়েছে ৬টি, এর মধ্যে লক্ষ্যে ছিল কেবল একটি।
বড় দলের বিপক্ষে শুরুতে কিছুটা উজ্জীবিত ফুটবল খেলেছে রোমানিয়া। ম্যাচের চতুর্থ মিনিটে একবার সুযোগও পায় দলটি। কিন্তু বক্সের বাইরে জায়গা বানিয়ে দেনিস মানের নেওয়া শট ক্রসবার ঘেঁষে বেরিয়ে যায়। এরপরের পুরো গল্পটাই নেদারল্যান্ডসের। ২০তম মিনিটে চমৎকার এক গোলে নেদারল্যান্ডসকে এগিয়ে নেন কোডি গাকপো। সিমন্সের পাস ধরে বাম দিক দিয়ে বক্সে ঢুকে পড়েন তিনি, একজনের বাধা এড়িয়ে নিচু শটে কাছের পোস্ট দিয়ে খুঁজে নেন ঠিকানা। লিড নেয়ার পর প্রতিপক্ষকে আরও চেপে ধরে নেদারল্যান্ডস। তবে প্রথমার্ধে বেশকিছু সুযোগ পেয়েও কাজে লাগাতে পারেনি তারা।
দ্বিতীয়ার্ধেও আক্রমণের ঝড় তোলে নেদারল্যান্ডস। তবে ফলাফল পেতে সময় লেগেছে অনেক। একের পর এক আক্রমণে ব্যর্থ হওয়ার পর ৮৩তম মিনিটে দ্বিতীয় গোলের দেখা পায় ডাচরা। বক্সের ভেতর বাঁ দিকের বাইলাইনের কাছে প্রতিপক্ষের একজনের চ্যালেঞ্জ সামলে দারুণ পাস দেন গাকপো, ফাঁকা জালে বল পাঠান দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে বদলি নামা মালেন।
ম্যাচের অতিরিক্ত সময়ে নিজের দ্বিতীয় এবং দলের তৃতীয় গোলটি করেন মালেন। নিজেদের অর্ধ থেকে বল ধরে এগিয়ে বক্সে ঢুকে গোলরক্ষককে পরাস্ত করেন ২৫ বছর বয়সী ফরোয়ার্ড। বড় জয় নিয়ে মাঠ ছেড়েছে ডাচরা।
১৬ বছর পর কোয়ার্টার ফাইনালে তুরস্ক
গ্রুপ পর্বে ফ্রান্স এবং নেদারল্যান্ডসের মতো দলকে টপকে সেরা দল হিসেবে শেষ ষোলোর টিকিট কেটেছিল অস্ট্রিয়া। তুরস্কের বিপক্ষে কোয়ার্টারে ওঠার লড়াইয়েও তাদেরই ফেভারিট মানা হচ্ছিল। তবে তুরস্কের প্রতিরোধের সামনে প্রত্যাশা অনুযায়ী পারফর্ম করতে পারেনি দলটি। শেষ ষোলোতেই থামল অস্ট্রিয়ার ইউরো।
লাইপজিগের রেড বুল অ্যারেনায় রাউন্ড অব সিক্সটিনের ম্যাচে অস্ট্রিয়াকে ২-১ গোলে হারিয়েছে তুরস্ক। এই জয়ে অস্ট্রিয়াকে বিদায় করে কোয়ার্টার ফাইনালে উঠেছে তুরস্ক।
লাইপজিগ স্টেডিয়ামে ম্যাচের অর্ধ মিনিট পার না হতেই কর্নার পায় তুরস্ক। সেখান থেকে আর্দা গুলারের শট অস্ট্রিয়ার ডি-বক্সের ভেতর গিয়ে পড়লে নিজেদেরকে বিপদমুক্ত করতে পারেননি অস্ট্রিয়ার ক্রিসটপ বৌমগার্টনার। গোললাইন থেকে গোলরক্ষক বল সরিয়ে দিলে সেটি পেয়ে দুর্দান্ত শটে গোল করেন তুরস্কের মেরিহ ডেমিরাল। এতে ৫৭ সেকেন্ডে এগিয়ে যায় তুর্কিরা।
ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপের ইতিহাসে কোনো নকআউট ম্যাচে দ্রুততম গোলের রেকর্ড এটি। আর সবমিলিয়ে টুর্নামেন্টটির ইতিহাসের দ্বিতীয়। এর আগে চলতি আসরেই ইতালির বিপক্ষে ২৩ সেকেন্ডে গোল করে ইউরোর ইতিহাসে দ্রুততম গোলের রেকর্ড করেছিলেন আলবেনিয়ার নেদিম বাজরামানি।
৩ মিনিটে আক্রমণে আসে অস্ট্রিয়ার বৌমগার্টনার। মার্সেল সবিৎজালের অ্যাসিস্ট থেকে তার শটটি গোলবারের বাইরে দিয়ে চলে যায়। ৭ মিনিটে লেইহার্টের হেড অল্পের জন্য তুরস্কের গোলবার স্পর্শ করতে পারেনি।
শুরুর গোল শোধ দেওয়ার জন্য মরিয়া হয়ে ওঠে অস্ট্রিয়া। বারবার আক্রমণে আসতে থাকে তারা। মাঝেমধ্যে দুই একটি আক্রমণ ছিল তুরস্কেরও। ১৯ মিনিটে গুলারের বাঁপায়ের শট আর ২৫ মিনিটে ডেমিরালের হেড অস্ট্রিয়ার গোলবারের বাইরে দিয়ে চলে যায়। বিরতিতে যাওয়ার আগে আরও দুটি আক্রমণ করলেও লক্ষ্য অর্জিত হয়নি অস্ট্রিয়ার। ফলে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে থেকেই বিরতিতে যায় তুরস্ক।
দ্বিতীয়ার্ধে খেলতে নেমে তুরস্কের উপর চাপ বাড়াতে থাকে অস্ট্রিয়া। তবে উল্টো গোল পেয়ে যায় তুরস্ক। ৫৯ মিনিটে নিজের দ্বিতীয় গোল করেন ডেমিরাল। এতে ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে যায় তুর্কিরা। ম্যাচে ফেরার জন্য মরিয়া অস্ট্রিয়া ৭ মিনিট পরই একটি গোল শোধ করে দেয়। স্টিফেন পোচের কর্নার থেকে পাওয়া বলে ডান পায়ের শটে জাল খুঁজে নেন মাইকেল গ্রেগোরিচ। এতে ব্যবধান দাঁড়ায় ২-১।
খুলনা গেজেট/এইচ