পাঠদান কার্যক্রম স্বাভাবিক করতে ১২ থেকে ১৭ বছর বয়সী শিক্ষার্থীদের করোনাভাইরাস প্রতিরোধী টিকা দেয়া শুরু হয়েছে। তাদের দেয়া হচ্ছে ফাইজারের টিকা। রাজধানীর মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজে সোমবার সকাল সাড়ে ৯টায় স্কুল শিক্ষার্থীদের টিকা দেয়ার কার্যক্রম উদ্বোধন করেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক ও শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি।
অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তেরর মহাপরিচালক অধ্যাপক আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম, অতিরিক্ত মহাপরিচালক (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) অধ্যাপক মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা, মার্কিন রাষ্ট্রদূত আর্ল মিলার, শিক্ষা সচিব মাহবুবুর রহমানসহ আরও অনেকে।
মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর থেকে জানা যায়, প্রথমদিন শুধু মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজে টিকা দেয়া হলেও মঙ্গলবার থেকে রাজধানীর ৮টি কেন্দ্রে একযোগে টিকা কার্যক্রম শুরু হবে। পরর্বতীতে ঢাকার বাইরে ২২টি জেলায় এই টিকা কর্মসূচি সম্প্রসারণ করা হবে।
এ বিষয়ে স্বাস্থ্য বুলেটিনে রোববার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ভ্যাকসিন ডেপ্লয়মেন্ট কমিটির সদস্যসচিব শামসুল হক জানান, প্রাথমিক পর্যায়ে ঢাকায় দিনে চার থেকে পাঁচ হাজারের মতো শিশুকে টিকা দেয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। পরে সেটি দেশব্যাপী দৈনিক ৪০ হাজার পর্যন্ত বাড়ানো হবে।
যেসব কেন্দ্রে টিকা দেয়া হবে
রাজধানীর ৮টি কেন্দ্রে মঙ্গলবার থেকে স্কুল শিক্ষার্থীদের টিকা দেয়া শুরু হবে। কেন্দ্রগুলো হলো হার্ডকো ইন্টারন্যাশনাল স্কুল, সাউথপয়েন্ট স্কুল অ্যান্ড কলেজ, চিটাগং গ্রামার স্কুল, আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ, ঢাকা কমার্স কলেজ, কাকলি হাই স্কুল অ্যান্ড কলেজ, সাউথ ব্রিজ স্কুল ও স্কলাসটিকা স্কুল।
স্কুলশিক্ষার্থীদের এরই মধ্যে পরীক্ষামূলক করোনা প্রতিরোধী টিকা দেয়া হয়েছে। এর অংশ হিসেবে ১৪ অক্টোবর মানিকগঞ্জে ১২০ শিক্ষার্থীকে টিকা দেয়া হয়।
সেই অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, ‘আমাদের দেশে এক কোটির বেশি ছেলে-মেয়ে আছে, যাদের আমরা টিকা দেব। প্রথম পর্যায়ে ৩০ লাখ শিক্ষার্থীকে টিকা দেব এবং পর্যায়ক্রমে বাকিদের টিকা দেয়া হবে।’
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘ফাইজারের টিকা ভালো ও নিরাপদ। এই টিকা আমেরিকা, ইউরোপসহ অন্য দেশে দেয়া হচ্ছে। এ কারণে এই টিকা আমরা ছাত্র-ছাত্রীদের দিচ্ছি। আমরা চাই আমাদের শিশুরা নিরাপদে থাকুক।
১২ থেকে ১৭ বছর বয়সের শিক্ষার্থীর সংখ্যা কত
মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি) থেকে জানা যায়, ঢাকা মহানগরীর ৭৮৩টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৬ লাখ ১৫ হাজার। আর সারা দেশে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ে শিক্ষার্থী আছে ১ কোটি ২৫ লাখ ২ হাজার ১২৬ জন।
করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের পর ২০২০ সালের ১৭ মার্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেয়া হয়। এর প্রায় দেড় বছর পর গত ১২ সেপ্টেম্বর স্কুল-কলেজে ক্লাস শুরু হয়। তবে প্রতিদিন সব শ্রেণিতে ক্লাস হচ্ছে না।
শুধু চলতি বছরের ও আগামী বছরের এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার্থী এবং পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের প্রতিদিন ক্লাস নেয়া হচ্ছে। আর অন্যান্য শ্রেণির মধ্যে তৃতীয়, চতুর্থ, অষ্টম, নবম শ্রেণিতে দুই দিন এবং অন্যান্য শ্রেণির শিক্ষার্থীদের এক দিন ক্লাসে আসতে বলা হয়েছে।
খুলনা গেজেট/এনএম