চলতি ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরের প্রথম ১০ মাস (জুলাই-এপ্রিল) শেষে রাজস্ব ঘাটতি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭১ হাজার ৪৭৬ কোটি টাকা। প্রবৃদ্ধি মাত্র ৩.২৪ শতাংশ। দশ মাস শেষে আয়কর, ভ্যাট কিংবা শুল্ক, কোনো খাতে কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে পারিনি জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
তার ওপর এনবিআর বিলুপ্তসহ নানা ইস্যুতে বিরতিহীন টানা ১৪ দিনের সর্বাত্মক আন্দোলন এবং অর্থনৈতিক সংকটে অর্থ বছর শেষে বিশাল ঘাটতির মুখোমুখি হতে হবে বলে মনে করছেন খাত সংশ্লিষ্টরা।
এনবিআর পরিসংখ্যান বিভাগ সূত্রে পাওয়া তথ্য অনুসারে, অর্থ বছরের প্রথম ১০ মাসে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৩ লাখ ৫৮ হাজার ৭৩২ কোটি টাকা। আদায় হয়েছে ২ লাখ ৮৭ হাজার ২৫৬ কোটি টাকা। যদিও আদায় গত বছরের তুলনায় বেশি। গত অর্থবছরের ১০ মাসে রাজস্ব আদায় হয়েছিল ২ লাখ ৭৮ হাজার ২৪২ কোটি টাকা।
এনবিআরের তথ্য অনুসারে, এপ্রিল পর্যন্ত আয়করে ১ লাখ ২৭ হাজার ৬৮০ কোটি ৫ লাখ টাকা লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে ৯৪ হাজার ৯৩৮ কোটি ৮৪ লাখ টাকা আহরণ করতে পেরেছে এনবিআর। ঘাটতি ৩২ হাজার ৭৪১ কোটি টাকার বেশি। গত বছরের একই সময়ের তুলনায় প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৪ দশমিক ৪৫ শতাংশ। গত অর্থবছরে আলোচ্য সময়ে রাজস্ব আদায় হয়েছিল ৯০ হাজার ৮৯৪ কোটি টাকা।
স্থানীয় পর্যায়ে মূসক (ভ্যাট) আদায়ে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১ লাখ ২৯ হাজার ৪২২ কোটি। লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে ১ লাখ ১১ হাজার ২০২ কোটি টাকা আহরণ করতে পেরেছে এনবিআর। এ খাতে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৫.৭৯ শতাংশ। গত অর্থবছরের ১০ মাসে ভ্যাট আদায় হয়েছিল ১ লাখ ১১ হাজার ২০২ কোটি টাকা।
আমদানি ও রপ্তানি পর্যায়ে রাজস্ব আহরণেও বড় ঘাটতি। শুল্ক এপ্রিল পর্যন্ত ১ লাখ ১ হাজার ৬৩০ কোটি ৪৭ লাখ টাকা লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে ৮১ হাজার ১১৬ কোটি টাকা আহরণ করতে পেরেছে এনবিআর। এ খাতে নেতিবাচক প্রবৃদ্ধি ১.৩৬ শতাংশ। গত অর্থবছরে ১০ মাসে শুল্ক আদায় হয়েছিল ৮২ হাজার ২৩৬ কোটি টাকার।
একক মাস হিসেবে শুধু এপ্রিলে রাজস্ব আহরণের সংশোধিত লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৩৬ হাজার ৫৮০ কোটি ৫২ লাখ টাকা। আহরণ হয়েছে ৩০ হাজার ৭৭০ কোটি টাকা। অর্থাৎ গত মাসে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে কম আহরণ হয়েছে বা ঘাটতি রয়েছে ৫ হাজার ৮১০ কোটি ৫২ লাখ টাকা। গত অর্থবছরে এ মাসে আহরণ হয়েছিল ২৮ হাজার ৬৫০ কোটি ৩৮ লাখ টাকা। সে হিসাবে আহরণের প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৭. ৪০ শতাংশ।
চলতি অর্থবছরে এনবিআরকে লক্ষ্যমাত্রা দেওয়া হয়েছিল ৪ লাখ ৮০ হাজার কোটি টাকা। তবে অর্থবছরের মাঝপথে এসে লক্ষ্যমাত্রা কমিয়ে ৪ লাখ ৬৩ হাজার ৫০০ কোটি করা হয় বলে জানা গেছে।
খুলনা গেজেট/এনএম