২০১৪ সালে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর গত দশ বছরে বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশনের চেয়ারম্যান সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভান্ডারীর বার্ষিক আয় প্রায় সাড়ে সাত গুণ বেড়েছে। একই সময়ে তার স্ত্রীর আয়ও বেড়েছে তিন গুণ।
এর পাশাপাশি ২০১৪ সালের আগে নজিবুল বাশারের স্ত্রী ও তার দুই ছেলের কোনো গাড়ি ছিল না। এখন তারা চারটি গাড়ি ব্যবহার করেন। নজিবুল নিজেও ব্যবহার করেন দুটি গাড়ি।
সৈয়দ নজিবুল বশর ২০১৪ ও ২০১৮ সালের নির্বাচনে পর পর দুইবার চট্টগ্রাম-২ (ফটিকছড়ি) আসন থেকে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোট থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এবারও দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি একই আসনে তরিকত ফেডারেশনের প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।
মনোনয়নপত্রের সঙ্গে জমা দেওয়া নির্বাচনী হলফনামা বিশ্লেষণ করে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।
২০১৪ সালের নির্বাচনী হলফনামায় নজিবুল বশর তার বার্ষিক আয় দেখিয়েছিলেন সাত লাখ ২৬ হাজার ৫৩৫ টাকা। ২০২৩ সালের হলফনামায় এই আয় দেখানো হয়েছে ৫৪ লাখ ৩৭ হাজার ৬২৭ টাকা।
নজিবুলের এই আয় তার ২০১৮ সালের হলফনামায় দেখানো আয়ের চেয়ে দেড়গুণ বেশি। সে সময় তিনি তার আয় দেখিয়েছিলেন ৩৬ লাখ ৪৯ হাজার ২৩৫ টাকা।
এছাড়া দশ বছর আগে নজিবুলের স্ত্রীর বার্ষিক আয় ছিল দুই লাখ ৮২ হাজার ৪২০ টাকা। এবার তার আয় দেখানো হয়েছে আট লাখ ৮২ হাজার ৩১৬ টাকা।
২০১৪ সালের নির্বাচনী হলফনামায় নজিবুল স্ত্রীর আয়ের উৎস দেখিয়েছিলেন কেবল ব্যবসা। এবার সেখানে বাড়ি ভাড়া ও কোম্পানি পরিচালকের ভাতাও উৎস হিসেবে দেখানো হয়েছে।
এর বাইরে দশ বছরে নজিবুলের অস্থাবর সম্পত্তির পরিমাণও বেড়েছে তিন গুণ। বেড়েছে নগদ টাকার পরিমাণও।
হলফনামায় দেওয়া তথ্য অনুসারে, ২০১৩ সালে তার মোট অস্থাবর সম্পত্তি ছিল ৭৬ লাখ ৬৮ হাজার টাকার। এবার তা দেখানো হয়েছে দুই কোটি ৪৪ লাখ টাকার।
২০১৩ সালে নজিবুলের আয়ের একমাত্র উৎস ছিল ব্যবসা। এবার এর সঙ্গে সংসদ সদস্য হিসেবে সম্মানী ভাতা ও শেয়ার ব্যবসার কথা উল্লেখ করেছেন তিনি।
২০১৩ সালে নজিবুলের কাছে নগদ ছিল চার লাখ ৩৪ হাজার টাকা। এবার তিনি তা দেখিয়েছেন ১৭ লাখ দুই হাজার ৮৬৩ টাকা।
২০১৩ সালে নজিবুলের ২৬ লাখ ২০ হাজার টাকার একটি গাড়ি ছিল। এবার তিনি মোট ৯০ লাখ ৫০ হাজার টাকার দুটি গাড়ি দেখিয়েছেন।
হলফনামা অনুসারে, ১০ বছর আগে নজিবুলের কোনো ব্যাংক এফডিআর ছিল না। এবার তিনি ৫৬ লাখ টাকার এফডিআর দেখিয়েছেন। একইভাবে আগে তার কোনো ব্যাংক আমানত না থাকলেও এবার ৫১ লাখ ৩৭ হাজার টাকার আমানত দেখিয়েছেন তিনি।
এছাড়া হলফনামায় উল্লেখ করা হয়, এখন নজিবুলের স্ত্রীর ১১ লাখ ১০ হাজার টাকা দামের একটি, বড় ছেলের সাত লাখ টাকা দামের একটি ও ছোট ছেলের ৩২ লাখ টাকা দামের দুটি গাড়ি আছে।
২০১৩ সালের হলফনামায় নজিবুল নিজেকে ‘পরামর্শক’ হিসেবে দেখালেও এবার তার সঙ্গে ব্যবসাও যুক্ত করেছেন। শিক্ষাগত যোগ্যতা দেখিয়েছেন এইচএসসি।
এলাকায় উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের ব্যাপারে নজিবুল হলনামায় লেখেন, একটি কলেজ ও একটি হাই স্কুল সরকারিকরণসহ এলাকায় ব্যাপক উন্নয়ন কর্মকাণ্ড বাস্তবায়ন করেছেন তিনি।
এসব ব্যাপারে কথা বলার জন্য নজিবুল বশরের মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি সাড়া দেননি।
সূত্র : দ্য ডেইলি স্টার
খুলনা গেজেট/ টিএ