আওয়ামী লীগের নারী ও শিশু বিষয়ক উপকমিটি থেকে সদ্য পদ হারানো হেলেনা জাহাঙ্গীরের বাসভবনে অভিযান চালাচ্ছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) সদস্যরা।
গুলশান ২ নম্বরের ৩৬ নম্বর সড়কের ৫ নম্বর ভবনের ৫ বি ফ্ল্যাটে থাকেন হেলেনা। ভবনটির একজন দারোয়ান জানান, রাত ৮টার কিছু পরে র্যাবের ১০ থেকে ১২ জন সদস্য হেলেনা জাহাঙ্গীরের বাসায় প্রবেশ করেছেন। বাসায় কাউকে ঢুকতে দেয়া হচ্ছেনা।
র্যাবের গোয়েন্দা বিভাগের প্রধান লে. কর্নেল খায়রুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বৃহস্পতিবার রাত পৌনে ৯টার দিকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, ‘হেলেনা জাহাঙ্গীরের গুলশানের বাসায় আমাদের একটি দল কাজ করছে। অভিযান শেষ হওয়ার আগে কিছু বলা যাবে না।’
নানা কারণে বেশ কিছুদিন ধরেই আলোচনায় হেলেনা জাহাঙ্গীর। জয়যাত্রা টেলিভিশনের প্রতিষ্ঠাতা ও সিইও হেলেনা গত ১৭ জানুয়ারি আ.লীগের উপকমিটির সদস্য হয়েছিলেন। গত বছরের ডিসেম্বরে কুমিল্লা জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য হন তিনি।
গত রোববার আওয়ামী লীগের মহিলাবিষয়ক কেন্দ্রীয় উপকমিটির সদস্যপদ থেকে হেলেনা জাহাঙ্গীরকে অব্যাহতি দিয়ে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়।
আওয়ামী লীগের মহিলাবিষয়ক সম্পাদক ও মহিলাবিষয়ক উপকমিটির সদস্য সচিব মেহের আফরোজ চুমকি স্বাক্ষরিত এই সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ‘হেলেনা জাহাঙ্গীর বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মহিলাবিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য ছিলেন। কিন্তু সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচারিত তার সাম্প্রতিক কর্মকাণ্ড সংগঠনের নীতিবহির্ভূত হওয়ায় বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মহিলাবিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য পদ হতে তাকে অব্যাহতি প্রদান করা হয়েছে।’
জানা যায়, নানা বিষয়ে আলোচিত ও সমালোচিত ব্যবসায়ী হেলেনা জাহাঙ্গীর সম্প্রতি ‘বাংলাদেশ আওয়ামী চাকরিজীবী লীগ’ নামের একটি সংগঠন করেন। এতে নিজেকে সভাপতি এবং মাহবুব মনিরকে সাধারণ সম্পাদক ঘোষণা করেন। এই সংগঠনে জেলা-উপজেলা ও বিদেশ শাখায় সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক মনোনয়ন দেওয়া হচ্ছে জানিয়ে সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি পোস্টার প্রকাশ করা হয়। এ ঘটনার পর ফেসবুকে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েন তিনি।
সংগঠনটির দাবি, গত দুই-তিন বছর ধরেই আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন হিসেবে অনুমোদন পাওয়ার চেষ্টা করছিল তারা। যদিও আওয়ামী লীগ নেতারা বলেছেন, সংগঠনটির সঙ্গে আওয়ামী লীগের কোনো সম্পর্ক নেই।
বিভিন্ন সময় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া এবং জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের সঙ্গে হেলেনার তোলা ছবি পোস্ট করে তাঁর উদ্দেশ্য নিয়েও ফেসবুকে প্রশ্ন তুলেছেন অনেকে।
গত সোমবার হেলেনা জাহাঙ্গীর নিজের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের ব্যাপারে ফেসবুক লাইভে এসে একপর্যায়ে কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘পুরুষরা এত খারাপ কেন? সব পুরুষ না, কিছু কিছু কাপুরুষ, এত খারাপ। মেয়েদের পিছনে লেগে থাকে, লজ্জা করে না আপনাদের মেয়েদের পিছনে লেগে থাকতে। মেয়েরা না মায়ের জাতি। মা না থাকলে আপনারা জন্ম হতেন না। সেই মেয়েদেরকে আপনারা অপমান করেন, লেলিয়ে দেন; হেলেনা জাহাঙ্গীরের পিছনে লাগো।’