নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে গত ২৮ মার্চ হেফাজতের হরতাল চলাকালে নাশকতার ঘটনায় পৃথক ছয়টি মামলা হয়েছে।সোমবার (২৯ মার্চ) রাতে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় পুলিশ বাদী হয়ে পাঁচটি এবং র্যাব বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করে।
প্রত্যেক মামলায় ২৫ থেকে ৩০ জনকে আসামি এবং অজ্ঞাত আরও ৪০০ থেকে ৫০০ জনকে আসামি করা হয়েছে। মঙ্গলবার (৩০ মার্চ) সকালে মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মশিউর রহমান।
তিনি জানান, সোমবার রাতে মামলাগুলো রেকর্ড করা হয়েছে। র্যাব ও পুলিশের পাঁচটি মামলা দায়ের করা হয়েছে নাশকতার অভিযোগে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে। অপর একটি মামলা হয়েছে সরকারি কাজে বাধা দিয়ে পুলিশের ওপর হামলা ও আহত করার অভিযোগে।
ওসি আরো জানান, এই ছয় মামলায় এখন পর্যন্ত কোন আসামিকে গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি। তবে র্যাব-পুলিশের কয়েকটি টিম নাশকতা সৃষ্টিকারীদের শনাক্ত করে গ্রেফতারে অভিযান চালাচ্ছে। তাদের সকলকে আইনের আওতায় আনা হবে।
উল্লেখ্য, গত ২৮ মার্চ হেফাজতের ডাকা হরতালে স্বাভাবিক ছিল নারায়ণগঞ্জ শহর ও উপজেলা এলাকাগুলো। তবে সিদ্ধিরগঞ্জ থানাধীন ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কাঁচপুর থেকে সাইনবোর্ড পর্যন্ত ছিল এলাকা ছিল হরতাল সমর্থকদের দখলে। তারা এই মহাসড়কে তাণ্ডব চালিয়ে রণক্ষেত্রে পরিণত করে। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে প্রায় ১৮টি যানবাহনে আগুন দেয়। নির্বিচারে চলে ভাঙচুর। দফায় দফায় বিজিবি-পুলিশের সাথে সংঘর্ষ, ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে।
এতে পুলিশ-সাংবাদিকসহ আহত হয়েছেন অর্ধশতাধিক ব্যক্তি। সকাল-সন্ধ্যা হরতালের পুরো সময় জুড়ে সাংবাদিকদের ওপর চড়াও ছিল পিকেটাররা। তারা অন্তত ১২ জন সাংবাদিককে মারধর ও দুইটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলের গাড়ি ভাঙচুর করেছে। মহাসড়কটি ভোর ছয়টা থেকে সন্ধ্যা পেরিয়ে রাত আটটা পর্যন্ত ছিল হরতাল সমর্থকদের দখলে।
জেলা পুলিশের তথ্যমতে, এই সময়ের মধ্যে ১৮টি ট্রাক, বাস, কাভার্ডভ্যানে আগুন, নির্বিচারে যানবাহনে ভাঙচুর, সাংবাদিকদের মারধর করেছে হেফাজতের পিকেটাররা। এই সহিংস পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে শর্ট গানের রাবার বুলেট ও চায়নিজ রাইফেলের প্রায় ৪ হাজার রাউন্ড গুলি ছুঁড়তে হয়েছে পুলিশ ও বিজিবিসহ আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর বিভিন্ন সংস্থাকে। পিকেটারদের ছত্রভঙ্গ করতে প্রায় দেড়শ’ টিয়ার শেলও নিক্ষেপ করা হয়।
খুলনা গেজেট/এনএম