হাড়কাঁপানো শীতে কাঁপছে যশোর। মঙ্গলবার সকাল থেকে বিকেলে পর্যন্ত সূর্যের দেখা মেলেনি। শৈত্য প্রবাহ ও ঘনকুয়াশা এ পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছে বলে আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে। মঙ্গলবার (৩ জানুয়ারি) দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল শ্রীমঙ্গলে ৮ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস আর যশোরে তাপমাত্রা ছিল ১২ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তীব্র শীতে জনজীবন জবুথবু হয়ে পড়েছে।
গোটা যশোর শহর এদিন সকাল থেকেই কুয়াশার চাঁদরে ঢাকা ছিল। সড়কে যানবাহন চলাচল করেছে হেডলাইট জ্বালিয়ে। ভীষণ প্রয়োজন ছাড়া কেউ ঘর থেকে বের হয়নি। এতে সমস্যায় পড়েছে শ্রমজীবী মানুষ। কণকণে শীতে তারা রাস্তায় নেমে ঠিকমত কাজ করতে পারেনি। একরকম খালি হাতেই তাদের সন্ধ্যায় ঘরে ফিরতে হয়েছে। হাড়কাঁপানো শীতের কারণে বিকেল থেকেই শহরে মানুষের চলাচল কমে গেছে। ফাঁকা হয়েছে শহর। সন্ধ্যার পরই ব্যবসায়ীরা দোকানপাট বন্ধ করে বাড়ি চলে যান।
রিকশাচালক আলাউদ্দীন বলেন, যশোরে খুব ঠাণ্ডা পড়ছে। দুপুর পর্যন্ত সূর্য দেখা যায়নি। ঠাণ্ডা বাতাসে রিকশা চালাতে খুব কষ্ট হয়েছে। শহরে লোকজন কম, তাই আয় কম হয়েছে। বিকেলে তাই বাড়ি ফিরে যাচ্ছি।
দড়াটানা এলাকার বৃদ্ধা আয়শা বেগম বলেন, খুব ঠাণ্ডা লাগছে। এ কারণে জ্বর সর্দি কাশি শুরু হয়েছে। ঘরে শুয়ে থাকার উপায় নেই। পেটের দায়ে রাস্তায় নেমেছি।
তিনি বলেন, দুপুর পর্যন্তও সূর্য দেখা যায়নি। এখন কি করবো, খাবো কি বুঝতে পারছি না।
পথচারী আব্দুর রাজ্জাক বলেন, সকাল থেকেই কুয়াশায় চারপাশ ঢাকা পড়েছে। তারপরও কাজ থেমে নেই। পেটের তাগিদে বাধ্য হয়েই কর্মস্থলে যেতে হচ্ছে। তিনি বলেন, এদিনের শীতের সকালে সবচেয়ে বেশি কষ্ট পেয়েছে শিশুরা। প্রচন্ড শীতে তাদের স্কুলে যেতে হচ্ছে।
এদিকে, শীতের তীব্রতা বৃদ্ধির কারণে ঠাণ্ডাজনিত রোগের প্রকোপও বৃদ্ধি পাচ্ছে। হাঁচি-কাশিসহ কোল্ড ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছে মানুষ। হাসপাতালেও বাড়ছে রোগীর চাপ। চিকিৎসকরা শীতকালীন রোগবালাই থেকে রক্ষা পেতে গরম পানি পানসহ গরম কাপড় ব্যবহারের জন্য পরামর্শ দিয়েছেন।
এ বিষয়ে যশোর জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা রিজিবুল ইসলাম বলেন, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে বরাদ্দ পাওয়া ৪৯ হাজার পিস কম্বল ইতোমধ্যে জেলার ৮টি উপজেলায় বিতরণ করা হয়েছে। আরও কম্বলের চাহিদা পাঠানো হয়েছে মন্ত্রণালয়ে। বরাদ্দ পেলেই আবারও বিতরণ করা হবে।
যশোর জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. আবদুস সামাদ বলেন, শীতজনিত রোগে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। শিশু ও বৃদ্ধরা শীতজনিত রোগে বেশি আক্রান্ত হচ্ছে। মঙ্গলবার হাসপাতালে রোগীর চাপ থাকলেও চিকিৎসা দিতে কোনো সমস্যা হয়নি। তিনি কণকণে এ শীত থেকে শিশু ও বৃদ্ধদের সাবধান রাখতে পরামর্শ দেন। তাদেরকে গরম পানি খাওয়াতে ও গরম পোশাক পরাতে বলেন।
খুলনা গেজেট/ এসজেড