খুলনা, বাংলাদেশ | ৬ মাঘ, ১৪৩১ | ২০ জানুয়ারি, ২০২৫

Breaking News

  দৈনিক ভোরের কাগজের প্রধান কার্যালয় বন্ধ ঘোষণা
  সাজাপ্রাপ্ত আসামিকে রাষ্ট্রপতির ক্ষমার ক্ষমতা চ্যালেঞ্জ করে রিট দায়ের
তিন সমঝোতা স্মারক সই ও দুই প্রকল্পের উদ্বোধন

হাসিনা-মোদি বৈঠক আজ, দ্বিপক্ষীয় ইস্যু ছাপিয়ে আলোচনায় রাজনীতি

গেজেট ডেস্ক

বাংলাদেশের ওপর মার্কিন চাপ যখনই এসেছে, ভারতকে পাশে পেয়েছে বাংলাদেশ। জাতীয় নির্বাচনের আগেও একইভাবে ওয়াশিংটনের চাপ মোকাবিলায় দিল্লিকে পাশে চায় ঢাকা। সেই সঙ্গে বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যকার সম্পর্ক একান্তই অর্থনৈতিক। এ সম্পর্ক আঞ্চলিক স্থিতিশীলতায় কোনো প্রভাব ফেলবে না। বাংলাদেশ থেকে এমন কিছু করা হবে না, যা ভারতের জন্য হুমকির– এমন বার্তাই দেওয়া হবে ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের বৈঠকে। বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে দুই দেশের সরকারপ্রধানের বৈঠকে দ্বিপক্ষীয় বিষয় ছাপিয়ে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে রাজনীতি ও ভূরাজনৈতিক ইস্যুগুলো।

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আমন্ত্রণে দুই দিনের জি২০ শীর্ষ সম্মেলনে অংশ নিতে আজ শুক্রবার নয়াদিল্লিতে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। জি২০তে অংশ নেওয়ার পাশাপাশি নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে আজ সন্ধ্যায় দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে বসবেন তিনি। এবারের বৈঠকে ভূরাজনীতি সব আলোচনাকে ছাপিয়ে যাবে বলে ধারণা করছেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা। এর আগে র‍্যাবের ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞাসহ বিভিন্ন বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের চাপ সামলাতে ভারতের সহযোগিতা নিয়েছিল বাংলাদেশ। জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে মার্কিন চাপ মোকাবিলায় এবারও ভারতের সহযোগিতা চাওয়া হতে পারে। সেই সঙ্গে বাংলাদেশে চীনের অবাধ উপস্থিতি নিয়ে ভারতকে আশ্বস্ত করার চেষ্টা করবে ঢাকা।

এদিকে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দিল্লিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেখা হতে পারে। তবে আনুষ্ঠানিক কোনো বৈঠক হবে কিনা, তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

ঠিক এক বছর আগে বাংলাদেশ ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী পর্যায়ের দ্বিপক্ষীয় বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সেই বৈঠকে আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশে চীনের প্রভাব ও আধিপত্য নিয়ে ভারতের তরফ থেকে উদ্বেগ জানানো হয়। ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিনয় মোহন কোয়েত্রা বাংলাদেশে চীনের কার্যক্রম নিয়ে গণমাধ্যমে বলেছিলেন, সে সময় দুই প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছিল। এর মধ্যে রাজনীতি ও নিরাপত্তা নিয়ে কীভাবে দুই দেশ একে অপরকে সহযোগিতা করতে পারে এবং এ সহযোগিতা চালিয়ে যেতে পারে, তা নিয়ে আলোচনা হয়। এ প্রেক্ষাপটে দুই দেশের সম্পর্কের কৌশলগত অগ্রাধিকার বিষয়ে আগে ভুল বোঝাবুঝি ছিল, তা বৈঠকে পরিষ্কার হয়েছে। বৈঠকে দুই দেশের কৌশলগত অগ্রাধিকারে ভারতের আগ্রহ ও উদ্বেগ এবং বাংলাদেশের আগ্রহ ও অগ্রাধিকার নিয়েও আলোচনা হয়েছিল।

বাংলাদেশে চীনের উপস্থিতি প্রশ্নে বিনয় মোহন কোয়েত্রা বলেছিলেন, বৈঠকে দুই প্রধানমন্ত্রী সামরিক সুরক্ষা, দুই দেশের সামরিক ও সম্পর্কের কল্যাণ, ভারতের আগ্রহ ও উদ্বেগ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়।

২০২২ সালের বৈঠকে যোগ দেওয়া একাধিক কূটনীতিক গতকাল বলেন, বাংলাদেশে চীনের কার্যক্রম নিয়ে ভারতের ভুল ধারণা ছিল। তবে ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে দুই প্রধানমন্ত্রীর দ্বিপক্ষীয় বৈঠকের পর তা পরিষ্কার হয়েছে। বাংলাদেশ এমন কোনো কার্যক্রমে অংশ নেবে না, যেখানে ভারতের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হয়– এমন বার্তা দেওয়া হয়েছিল ঢাকার পক্ষ থেকে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক কূটনীতিক বলেন, এ অঞ্চলে যেভাবে চীনের প্রভাব বাড়ছে, তা পশ্চিমাদের যত না মাথাব্যথার কারণ, তার থেকে অনেক বেশি ভারতের। সম্প্রতি চীনের মানচিত্র বিতর্ক থেকে শুরু করে ভারত-চীন সীমান্তে উত্তেজনার রসদ বেইজিং এ অঞ্চল থেকে পাচ্ছে বলে মনে করে দিল্লি। কারণ এ অঞ্চলে চীন বন্ধুর সংখ্যা যত ভারী করছে, তারা ততই আগ্রাসী হয়ে উঠছে– এটিও মনে করে ভারত। ফলে এ অঞ্চলে চীনের যে কোনো ধরনের উপস্থিতি ভারতের জন্য শঙ্কার। ঢাকা ও বেইজিংয়ের সম্পর্ক কোনোভাবেই দিল্লির জন্য হুমকি হবে না– এ বিষয়ে জোরালো বার্তা দিতে চায় বাংলাদেশ। যাতে মার্কিন চাপের সামনে বন্ধু হিসেবে দিল্লিকে পাশে পায় ঢাকা। এক্ষেত্রে চীন ইস্যু যেন কোনোভাবেই বাধা হয়ে না দাঁড়ায়।

গতকাল দুপুরে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফর নিয়ে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এতে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন সফরের বিস্তারিত তুলে ধরেন। এ সময় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অন্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগবিষয়ক উপদেষ্টা, অ্যাম্বাসাডর অ্যাট লার্জ– যিনি জি২০তে বাংলাদেশ শেরপা, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী, পররাষ্ট্র সচিব, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের কর্মকর্তা, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সচিব ও ঊর্ধ্বতন পর্যায়ের কর্মকর্তা এবং বিশিষ্ট ব্যক্তিরা ভারত সফরে থাকবেন।

ভারতের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক প্রসঙ্গে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের প্রধান বিষয়গুলোর পাশাপাশি আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা নিয়ে আলোচনা হবে। বাংলাদেশের পররাষ্ট্র নীতির তিনটি প্যাকেজ। এগুলো হচ্ছে– অর্থনৈতিক কূটনীতি, জনকূটনীতি এবং আঞ্চলিক শান্তি ও স্থিতিশীলতা। আমাদের সব আলোচনাতে স্থিতিশীলতা থাকে। তিনি বলেন, বাংলাদেশ ইন্দো-প্যাসিফিকে কোনো প্রক্সি বা ছায়া যুদ্ধ দেখতে চায় না, যেটি ইউরোপ ও মধ্যপ্রাচ্যে হচ্ছে। আমাদের অঞ্চলের শান্তির জন্য আমাদের অবস্থান সব সময় জোরালো।

তিস্তা পানি বণ্টন ও বাংলাদেশ নির্বাচন নিয়ে নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে আলোচনা প্রসঙ্গে ড. মোমেন বলেন, দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে সংশ্লিষ্ট সব বিষয় নিয়ে আলোচনা হবে। এবার ভারত সফরের মূল কারণ হচ্ছে জি২০ সম্মেলনে যোগ দেওয়া। এ সুযোগে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা হবে। বাংলাদেশ ক্রমাগতভাবে দ্বিপক্ষীয় বিষয়গুলো ভারতের কাছে তুলে ধরে। সময় স্বল্পতায় কত দূর কী আলোচনা হবে, সেটি বলা যাচ্ছে না। তবে রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে আলোচনা হবে।

বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে আলোচনা হবে কিনা– এ প্রশ্নে তিনি বলেন, আমার জানা নেই। আমরা চাই আঞ্চলিক শান্তি ও স্থিতিশীলতা। গত সাড়ে ১৪ বছরে এত ভালো কাজ করেছি, জনগণ যদি আমাদের পছন্দ করে, তবে ভোট দেবে। আমাদের দেশের জনগণের ওপর বিশ্বাস রয়েছে। আমরা চাই, একটি স্বচ্ছ ও সুন্দর এবং অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন। প্রধানমন্ত্রীসহ আমরা প্রত্যেকে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন করতে চাই।

তিনি বলেন, আমরা বিএনপি মার্কা ১ কোটি ২৩ লাখ ভুয়া ভোটার চাই না। আমরা বিএনপি মার্কা নির্বাচন কমিশন চাই না। এ জন্য আমরা খুবই শক্তিশালী স্বাধীন নির্বাচন কমিশন করেছি। আমরা স্বচ্ছ ব্যালট বাক্স করেছি, যাতে রাতের আঁধারে ভোট না হয়। যা যা করার, আমরা করেছি। আমরা স্বচ্ছ নির্বাচন চাই, সেখানে যদি কেউ সহায়তার হাত বাড়ায়, আমরা তাদের স্বাগত জানাব।

পশ্চিমাদের দিকে ইঙ্গিত করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, কেউ যদি মাতবরির ভূমিকা নিয়ে আসে, আমরা সেটি সহ্য করব না। আমরা স্বাধীন, সার্বভৌম দেশ। বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা কাউকে ভয় পান না। কারও কোনো পরামর্শ থাকলে দেন, আমরা তা শুনব, গ্রহণযোগ্য হলে গ্রহণ করব। নতুবা আমাদের পরামর্শ তাদের জানিয়ে দেব। বৈশ্বিক চাপের বিষয়টি নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে বৈঠকে তুলে ধরা নিয়ে তিনি বলেন, বৈশ্বিক অসুবিধা থাকবে। তবে আমাদের আত্মবিশ্বাস রয়েছে। আমরা যেহেতু স্বচ্ছ, আমরা সুন্দর নির্বাচন করব। এ ক্ষেত্রে আমরা কোনো ধরনের চাপ গ্রহণ করব না। আমরা কোনো চাপের মুখে নেই।

শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় রাখা নিয়ে ভারতের কাছে তদবির প্রসঙ্গে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আগে আমি ভারতকে বলেছি, আঞ্চলিক শান্তি ও স্থিতিশীলতা উভয় দেশ ও পুরো অঞ্চলের জন্য অপরিহার্য। আমাদের এ অঞ্চলে আমরা কোনো প্রক্সি বা ছায়াযুদ্ধ দেখতে চাই না। আসিয়ানে গিয়েও এটি বলেছি। প্রধানমন্ত্রী সারা অঞ্চলের মানুষের মঙ্গল চান। ভারতের সঙ্গে নতুন করে কোনো ঋণ চুক্তির সম্ভাবনা ও আগের ঋণের অর্থ না দেওয়া নিয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ঋণের জটিলতা নিয়ে আমরা সবসময় বৈঠকে তুলে ধরি। এগুলো সমাধানের চেষ্টা করছি। নতুন করে ঋণ চুক্তির সম্ভাবনা নেই।

তিস্তা ও গঙ্গার পানিবণ্টন চুক্তি নিয়ে জানতে চাইলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, গঙ্গা চুক্তি ২০২৬ সালে শেষ হবে। এ নিয়ে আমরা ইতোমধ্যে কাজ শুরু করেছি। ভারতকে যৌথ নদী কমিশনের বৈঠকের জন্য বলা হয়েছে। এখন নির্বাচনের কারণে সবাই ব্যস্ত। ভারত অঙ্গীকার করেছে, এ বৈঠকটি হবে। তিস্তা নিয়ে কী হবে, তা জানা নেই ড. মোমেনের। তিনি বলেন, দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে একমাত্র রাষ্ট্র হিসেবে ভারত বাংলাদেশক আমন্ত্রণ জানিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী জি২০ শীর্ষ সম্মেলনের দুটি অধিবেশনে বক্তব্য দেবেন।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, শুক্রবার বিশেষ বিমানে ভারতের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী রওনা দেবেন। বিকেলে তিনি ভারতের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করবেন, যেখানে দ্বিপক্ষীয় স্বার্থসংশ্লিষ্ট গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আলোচনা হবে বলে আশা করা যাচ্ছে। দ্বিপক্ষীয় বৈঠকের আগে তিনটি সমঝোতা স্মারক সই করা হবে। একটি হচ্ছে– কৃষি গবেষণা ও শিক্ষা সহযোগিতা। এটি দুই দেশের মধ্যে কৃষি গবেষণা খাতে জোরদার ভূমিকা পালন করবে। আরেকটি সাংস্কৃতিক চুক্তি– ২০২৩ থেকে ২০২৫ পর্যন্ত বর্ধিত করার জন্য। এ ছাড়া ভারতের এনপিসিআই ও বাংলাদেশ ব্যাংকের মধ্যে একটি সমঝোতা স্মারক সই হবে। এর মাধ্যমে দুই পক্ষের মধ্যে নেটওয়ার্ক-টু-নেটওয়ার্ক সংযোগের মাধ্যমে রুপি-টাকা পারস্পরিক লেনদেনের সম্পাদন সহজ হবে।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, শনিবার সরকারপ্রধান সম্মেলনের সাইডলাইনে একাধিক বিশ্বনেতার সঙ্গে বৈঠক করবেন। প্রাথমিকভাবে সৌদি আরবের ক্রাউন প্রিন্স ও প্রধানমন্ত্রী, আর্জেন্টিনার প্রেসিডেন্ট, কানাডার প্রধানমন্ত্রী, দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে বৈঠকের সম্ভাবনা রয়েছে প্রধানমন্ত্রীর। রোববার প্রধানমন্ত্রী অন্য দেশের নেতাদের সঙ্গে রাজঘাটে মহাত্মা গান্ধীর সমাধিসৌধে শ্রদ্ধা জানাবেন। এর পর তিনি জি২০ সম্মেলনের সমাপনী অধিবেশনে অংশ নেবেন। শনিবারই নয়াদিল্লি থেকে ঢাকায় ফেরার কথা রয়েছে প্রধানমন্ত্রীর।

 

খুলনা গেজেট/এইচ




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!