হাসিনার আমলের শেষ দশ বছরে সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষীর গুলিতে কমপক্ষে ৩০৫ জন বাংলাদেশি নিহতের ঘটনা ঘটেছে। এছাড়াও অন্তত ২৮২ জন আহত হয়ছেন । সোমবার মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস সাপোর্ট সোসাইটি কর্তৃক গণমাধ্যমে পাঠানো এক জরিপে এমনটাই দেখা যায়।
দেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদ এবং হিউম্যান রাইটস সাপোর্ট সোসাইটি (এইচআরএসএস) এর সংগৃহীত তথ্যের ভিত্তিতে গত ১০ বছরের চিত্র উল্লেখ করে জরিপে বলা হয়, ২০২৪ সালে ২৬ জন নিহত হয়েছেন। তাছাড়া ২০২৩ সালে ৩০ জন ছাড়াও সবথেকে বেশি নিহতের ঘটনা ঘটেছে ২০২০, ১৯ এবং ১৫ সালে। ২০২০ সালে বিএসএফ কর্তৃক ৫১ জন, ২০১৫ সালে ৪৩ জন এবং ১৯ সালে ৪২ জন বাংলাদেশি ভারতীয় সীমান্তরক্ষীর গুলিতে নিহত হয় ।
সংস্থা জানায়, ২০১৫ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত গত ১০ বছরে সীমান্তে বিএসএফ কর্তৃক কমপক্ষে ৩০৫ জন বাংলাদেশি নিহত এবং অন্তত ২৮২ জন আহত হয়েছেন। সীমান্তে বিএসএফ কর্তৃক শুধু ২০২৪ সালে ৫৭ টি হামলার ঘটনায় ২৬ জন বাংলাদেশি নিহত, ২৫ জন আহত, ৪৭ জন গুলিবিদ্ধ এবং ১৫৮ জন গ্রেফতার হয়েছেন। একইসময়ে সীমান্তে ৯ জন বাংলাদেশির লাশ পাওয়া গেছে যারা ভারতীয় নাগরিক ও খাসিয়াদের হামলায় নিহত হওয়ার অভিযোগ রয়েছে।
এছাড়াও ২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে ৮ই মার্চ পর্যন্ত সীমান্তে বিএসএফ কর্তৃক ১৫ টি হামলার ঘটনায় ৪ জন বাংলাদেশি নিহত, ১০ জন আহত, ৫ জন গুলিবিদ্ধ ও ১৫ জন গ্রেপ্তার হয়েছেন। এসময় সীমান্তে ভারতীয় নাগরিক ও খাসিয়াদের হামলায় ৩ জন বাংলাদেশি নিহত হয়েছেন। এসকল ঘটনা সীমান্তের নিরাপত্তার ক্ষেত্রে একটি নাজুক পরিস্থিতি নির্দেশ করে। ভারতের বারবার প্রতিশ্রুতি এবং কূটনৈতিক প্রচেষ্টা সত্ত্বেও এই দুঃখজনক ঘটনাগুলি উদ্বেগজনক হারে বছরের পর বছর ধরে ঘটছে।
তাছাড়া, ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) গুলিতে পঞ্চগড় সীমান্তে মো. আল আমিন (৩৬) ও সিলেটের কানাইঘাট সীমান্তে ভারতীয় খাসিয়াদের হামলায় শাহেদ মিয়া (২৫) হত্যার ঘটনায় ‘এইচআরএসএস’ তীব্র নিন্দা, প্রতিবাদ ও সুষ্ঠু বিচারের আহ্বান জানিয়েছে মানবাধিকার এই সংস্থা।
এদিকে হিউম্যান রাইটস সাপোর্ট সোসাইটি বাংলাদেশ ও ভারত সরকারকে আল আমিন, শাহেদ মিয়া, কিশোরী স্বর্ণা দাস ও ফেলানীর হত্যাকাণ্ডের ঘটনাসহ পূর্ববর্তী সকল সীমান্ত হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্ত করে জড়িতদেরকে শাস্তির আওতায় আনার আহ্বান জানায়। পাশাপাশি সীমান্ত এলাকায় সমস্ত সীমান্ত ব্যবস্থাপনা কার্যক্রমে মানবাধিকার এবং আন্তর্জাতিক আইনের নীতিগুলিকে মেনে চলতে দুই দেশের সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করে।
খুলনা গেজেট/ টিএ