খুলনা, বাংলাদেশ | ২৯ কার্তিক, ১৪৩১ | ১৪ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  চার উপদেষ্টার আশ্বাসে ভোর ৪টায় হাসপাতালে ফিরলেন আহতরা

হাসপাতালের প্রেসিডেন্সিয়াল স্যুটে ট্রাম্প, দেওয়া হচ্ছে রেমডেসিভির

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের চিকিৎসায় ওষুধ হিসেবে রেমডেসিভির দেওয়া হচ্ছে। করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হয়ে ট্রাম্প ওয়াল্টার রিড ন্যাশনাল মিলিটারি মেডিকেল সেন্টারে চিকিৎসা নিচ্ছেন। স্থানীয় সময় গতকাল শুক্রবার রাতে তাঁর চিকিৎসক এই ওষুধ দেওয়ার কথা জানান।

হোয়াইট হাউসের চিকিৎসা কর্মকর্তা সিন কনলি বলেন, প্রেসিডেন্টের চিকিৎসায় রেমডিসিভির ব্যবহার করা হচ্ছে। তিনি খুব ভালো আছেন। তাঁকে অক্সিজেন দেওয়ার প্রয়োজন নেই। তাঁকে অ্যান্টিবডির বিশেষ ককটেলও দেওয়া হয়েছে।

হোয়াইট হাউসের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, কয়েকদিন হাসপাতালে কাটাতে হবে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে। তাঁর চিকিৎসায় পরীক্ষামূলক ওষুধ ব্যবহার করছেন চিকিৎসকেরা। সিন কনলি আরও বলেন, ট্রাম্পকে রেজনারনের অ্যান্টিবডি ককটেলের একটি ডোজ দেওয়া হয়েছে। এই চিকিৎসাপদ্ধতি ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের মধ্যে রয়েছে। বিশেষজ্ঞদের একটি দল ট্রাম্পের চিকিৎসা করছেন।

সিএনএনের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হোয়াইট হাউসের প্রেস সচিব কেলেইজ ম্যাকেনি এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, চিকিৎসকেরা আগামী কয়েকদিন ওয়াল্টার রিড থেকে ট্রাম্পকে দায়িত্বপালন করার পরামর্শ দিয়েছেন। হাসপাতালের বিশেষ একটি কক্ষে ট্রাম্প থাকবেন।

হোয়াইট হাউসের চিকিৎসা কর্মকর্তা সিন কনলি বলেন, করোনায় শনাক্ত ট্রাম্পের মৃদু উপসর্গ রয়েছে। তিনি কিছুটা ক্লান্ত। তবে সুস্থসবল আছেন।

ডোনাল্ড ট্রাম্প হাসপাতাল থেকে এক টুইট করে তাঁর অবস্থার হালনাগাদ তথ্য দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘আমার মনে হচ্ছে, সবকিছু ভালোমতো চলছে।’

যুক্তরাষ্ট্রের স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ সঞ্জয় গুপ্ত সিএনএনকে বলেন, পরীক্ষামূলক অ্যান্টিবডি থেরাপি ও রেমডিসিভির ব্যবহার করায় ট্রাম্পকে নিয়ে কিছুটা উদ্বেগ রয়েছে।

গত মে মাসে যুক্তরাষ্ট্রের ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এফডিএ) দেশটিতে জরুরি ব্যবহারের জন্য রেমডেসিভিরকে অনুমোদন পায়। এ ওষুধটি দ্রæত কোভিড-১৯ রোগীদের সুস্থ হতে সাহায্য করে বলে প্রমাণ পাওয়া যায়।

সরকারি অর্থায়নে পরিচালতি একটি গবেষণায় দেখা যায়, গিলিয়াড সায়েন্সেসের রেমডিসিভির হাসপাতালে ভর্তি রোগীদের সুস্থতার সময় ৩১ শতাংশ বা গড়ে চারদিন পর্যন্ত এগিয়ে আনে। ওই সময় অবশ্য যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ অ্যান্টনি ফাউসি রেমডিসিভিরের পরীক্ষার ফল নিয়ে সতর্ক আশাবাদের কথা বলেছিলেন।

এদিকে ওয়াল্টার রিড ন্যাশনাল মেডিকেল সেন্টারে প্রেসিডেন্সিয়াল স্যুটে করোনার চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পকে, এই হাসপাতালে আছেন ৭ হাজার ১০০ স্টাফ। এর মধ্যে রয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ চিকিৎসকরাও। সেখানে প্রেসিডেন্সিয়াল স্যুট অত্যন্ত বিলাসবহুল। এটি ওয়ার্ড ৭১ নামে পরিচিত। যুক্তরাষ্ট্রের উচ্চ পদস্থ সামরিক কর্মকর্তা ও হোয়াইট হাউজের মন্ত্রীপরিষদের সদস্যদের জন্য এই হাসপাতালে এমন বিশেষ ৬টি রুমকে সংরক্ষণ করা হয়েছে। তার একটি প্রেসিডেন্সিয়াল স্যুট। এর ভিতর আছে সব রকম নিরাপত্তামুলক ডিভাইস, যোগাযোগ রক্ষা করার জন্য সরঞ্জাম।

এ কথা লিখেছেন রিয়ার এডমিরাল কোনি মারিয়ানো। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট জর্জ এইচ ডব্লিউ বুশ এবং বিল ক্লিনটনকে চিকিৎসক হিসেবে সেবা দিয়েছেন। এ সময় তিনি হোয়াইট হাউজের মেডিকেল ইউনিটের পরিচালক ছিলেন।

এ খবর দিয়েছে লন্ডনের অনলাইন ডেইলি মেইল। ওয়াল্টার রিড হাসপাতালের সুনাম যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে। সিলভার স্প্রিংয়ে রয়েছে এর একটি গবেষণা প্রতিষ্ঠান ইনস্টিটিউট অব রিসার্স। এটি মেরিল্যান্ডে হাসপাতালের কাছেই। ওই গবেষণা প্রতিষ্ঠানে বিজ্ঞানীরা টিকা উদ্ভাবন নিয়ে কাজ করেন এবং করোনা ভাইরাসের মতো সংক্রামক রোগের চিকিৎসা নিয়ে কাজ করেন।

আবার এই হাসপাতালের বিরুদ্ধে অবহেলার অভিযোগও আছে। ২০০৭ সালে সেখানে বেশ কিছু সেনা সদস্যকে চিকিৎসা দেয়া হয়। এ সময়ে তাদের অনেকে মারা যান। ফলে চিকিৎসায় অবহেলার অভিযোগ ওঠে। তা সত্তে¡ও এটাকে যুক্তরাষ্ট্রের ‘দ্য নেশনস মেডিকেল সেন্টার’ হিসেবে আখ্যায়িত করা হয় এবং সেনাবাহিনীর প্রধানদের চিকিৎসা দেয়া হয় এখানে। আছে ৭১০০ স্টাফ।

এর রয়েছে শতাধিক ক্লিনিক। এখানকার মেডিকেল ইভ্যালুয়েশন এন্ড ট্রিটমেন্ট ইউনিটে (এমইটিইউ) চিকিৎসা নিয়ে থাকেন প্রেসিডেন্ট ও ভাইস প্রেসিডেন্ট। এমইটিইউ অত্যন্ত নিরাপদ, প্রাইভেট ও হাসপাতালের বিস্তৃত অন্যান্য ওয়ার্ড থেকে আলাদা। এর ভিতর আছে একটি ডাইনিং রুম। তাতে আছে ক্রিস্টাল ক্যান্ডেলিয়ার। বেড থেকে কয়েক পা দূরে আছে একটি ডেস্ক বা টেবিল।

রুমগুলোকে সাজানো হয়েছে এমনভাবে যাতে সেখানে অতিথিরা যেতে পারেন। আছে নিরাপত্তা প্রযুক্তি। এ ছাড়া ট্রাম্প যাতে সেখানে অবস্থান করে তার প্রেসিডেন্সিয়াল সব দায়িত্ব পালন করতে পারেন, এমন সব সরঞ্জাম রয়েছে এর মধ্যে। হোয়াইট হাউজ থেকে প্রায় ৯ মাইল দূরে এই হাসপাতাল। এতে আছে ২৪৪টি বেড। আর আছে ৫০টি আইসিইউ।

এই হাসপাতালে আছে ১৬৫টি স্মার্ট স্যুট। এতে আছে ‘টু-ওয়ে’ যোগাযোগ বিষয় বিষয়ক ডিভাইস। আছে অডিও ভিজুয়াল, ওয়ারলেস সুবিধা। আছে বিছানার পাশে বিনোদনের ব্যবস্থা। সবই স্থানান্তরযোগ্য কিবোর্ড দিয়ে নিয়ন্ত্রণ করা যায়। এ সুবিধা রোগীরা সব সময় ভোগ করতে পারেন। অনলাইন মেইল লিখেছে, প্রেসিডেন্সিয়াল স্যুট এসব উচ্চ প্রযুক্তির কোনো স্যুট কিনা তা পরিষ্কার নয়।

খুলনা গেজেট/ এমএম




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!