ধর্ষণ ও নির্যাতনের ঘটনায় মারা যাওয়া শিশু আছিয়ার জানাজা সম্পন্ন হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ) ইফতারের আগে সেনাবাহিনীর হেলিকপ্টারে তার লাশ মাগুরায় নেওয়া হয়। এর পর সন্ধ্যা ৭টায় স্থানীয় নোমানী ময়দানে শিশুটির জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।
জানাজার পর আছিয়ার লাশের খাটিয়া ঘাড়ে করে নিয়ে যান জাতীয় নাগরিক পার্টির মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আবদুল্লাহ ও মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলম।
এদিকে শিশুটির জানাজায় অংশ নিতে মাগুরায় পৌঁছেন বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমির মাওলানা মামুনুল হক, জাতীয় নাগরিক পার্টির মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আবদুল্লাহ ও মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলম। মাগুরায় নির্যাতনের শিকার মেয়েটির মৃত্যুর পর তারা বিকালে মাগুরায় পৌঁছান। র্যাব পুলিশের একটি হেলিকপ্টারযোগে তারা বিকাল ৫টার দিকে মাগুরায স্টেডিয়ামে অবতরণ করেন।
এর আগে বৃহস্পতিবার দুপুর ১টায় সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শিশুটি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করে।
গত ৬ মার্চ মাগুরা শহরে বোনের বাড়ি বেড়াতে গিয়ে ধর্ষণের শিকার হয় ওই শিশুটি। পরদিন তাকে মাগুরা ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে ওই দিন দুপুরেই উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখান থেকে রাতেই পাঠানো হয় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে।
এরপর গত শুক্রবার রাতে তাকে লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়। সংকটাপন্ন শিশুটিকে গত শনিবার সন্ধ্যায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পেডিয়াট্রিক ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিট (পিআইসিইউ) থেকে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। পরদিন রোববার শিশুটিকে সিএমএইচে পেডিয়াট্রিক আইসিইউতে নেওয়া হয়। আজ ১৩ মার্চ চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
শিশু আছিয়ার মৃত্যুর ঘটনায় গভীর শোক প্রকাশ করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। প্রধান উপদেষ্টার ডেপুটি প্রেস সেক্রেটারি অপূর্ব জাহাঙ্গীর জানান, প্রধান উপদেষ্টা নির্যাতনের ঘটনার সঙ্গে জড়িত আসামিদের দ্রুত বিচারের আওতায় নিয়ে আসার নির্দেশ দিয়েছেন।
এদিকে মাগুরায় আছিয়ার বাড়িসহ গোটা এলাকায় এখন শোকের মাতম। আছিয়ার মানসিক ভারসাম্যহীন বাবা ফেরদৌস শেখ কিছুই বলতে পারছেন না। বুক চাপড়ে কাঁদছেন আছিয়ার মা ও ভাই বোনসহ অন্য স্বজন।
বৃহস্পতিবার দুপুরে মাগুরার শ্রীপুরে জারিয়ায় আছিয়ার গ্রামে গিয়ে দেখা গেছে মৃত্যুর খবর শুনে সবাই ভিড় করছে ওই বাড়িতে।
স্থানীয় সব্দালপুর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান পান্না খাতুন বলেন, আমাদের একটাই দাবি হিটু শেখসহ ৪ আসামির ফাঁসি। একই ইউনিয়নের স্থানীয় ইউপি সদস্য রূপ কুমার বলেন, আমরা শুধু ফাঁসি চাই না। এটা যাতে দ্রুততম সময়ের মধ্যে হয় সেই দাবি সরকারের কাছে রাখছি।
এভাবে সবার মুখে একটাই দাবি ধর্ষকদের ফাঁসি। এছাড়া বিচার কার্যক্রম যেকোনো প্রকারেই বিলম্বিত না হয়। সেই দাবি একই সাথে সবার মুখে।
খুলনা গেজেট/এএজে