ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে অবিরাম হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। টানা দুই মাস ধরে চালানো এই হামলায় এখন পর্যন্ত নিহত হয়েছেন ১৭ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি। বর্বর এই আগ্রাসনের জেরে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে বিশ্বজুড়ে বাড়ছে ক্ষোভ।
এছাড়া বেসামরিক ফিলিস্তিনিদের হতাহতের সংখ্যা কমানোর এবং স্থায়ী যুদ্ধবিরতি কার্যকরের জন্য আন্তর্জাতিক চাপও বাড়ছে। তবে ইসরায়েল বলছে, ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের আত্মসমর্পণের মাধ্যমে গাজায় চলমান যুদ্ধ শেষ হবে।
বৃহস্পতিবার (৭ ডিসেম্বর) রাতে এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা আনাদোলু।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হামাস নেতাদের আত্মসমর্পণ এবং বন্দিদের প্রত্যাবর্তনের মাধ্যমে গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের যুদ্ধ শেষ হবে বলে ইসরায়েলের একজন মুখপাত্র বৃহস্পতিবার জানিয়েছেন।
ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর মুখপাত্র ওফির গেন্ডেলম্যান এদিন সাংবাদিকদের বলেন, ‘হামাস নেতারা ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণ করার শর্তে গাজার যুদ্ধ শেষ হতে পারে এবং বন্দিদের (গাজা থেকে) ফিরিয়ে দিতে হবে।’
ইসরায়েলি এই মুখপাত্র বলেছেন, ইসরায়েলের সেনাবাহিনী দক্ষিণ গাজা উপত্যকায় অগ্রসর হচ্ছে। তার দাবি, ‘আমাদের বাহিনী (গাজার হামাস নেতা) ইয়াহিয়া সিনওয়ারের (খান ইউনিসের) বাড়ি ঘেরাও করেছে এবং আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব তাকে গ্রেপ্তার করা।’
গেন্ডেলম্যান গাজায় যুদ্ধবিরতির জন্য জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের আহ্বানও প্রত্যাখ্যান করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘এখন যুদ্ধবিরতির এই আহ্বান গাজায় হামাসকে ক্ষমতায় রাখার আহ্বানের সমতুল্য। আমরা এটিকে স্পষ্টভাবে প্রত্যাখ্যান করি।’
উল্লেখ্য, গত ৭ অক্টোবর হামাসের নজিরবিহীন আন্তঃসীমান্ত হামলার পর থেকে ইসরায়েল গাজা উপত্যকায় অবিরাম বিমান ও স্থল হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। ইসরায়েলি এই হামলায় হাসপাতাল, স্কুল, শরণার্থী শিবির, মসজিদ, গির্জাসহ হাজার হাজার ভবন ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে।
মাঝে হামাসের সাথে এক সপ্তাহব্যাপী মানবিক বিরতির পর গত শুক্রবার থেকে গাজা উপত্যকায় পুনরায় বিমান ও স্থল হামলা শুরু করে ইসরায়েল। বিরতির পর শুরু হওয়া এই অভিযানে গাজায় হামলা আরও তীব্র করেছে দখলদার সেনারা।
গাজার স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের তথ্য অনুযায়ী, গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েল গাজা উপত্যকায় ব্যাপক সামরিক অভিযান শুরু করার পর থেকে সেখানে কমপক্ষে ১৭ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত এবং আরও ৪৬ হাজার মানুষ বেশি আহত হয়েছেন।
নিহত এসব ফিলিস্তিনিদের মধ্যে কমপক্ষে ৭ হাজার ১১২ জন শিশু এবং ৪ হাজার ৮৮৫ জন নারী রয়েছেন। এছাড়া ভূখণ্ডটিতে এখনও প্রায় ৭ হাজার ৬০০ জন নিখোঁজ রয়েছেন।
খুলনা গেজেট/এনএম