দেশের ক্ষমতার পটপরিবর্তনের পর চাকরি ঝুলে গিয়েছিল টাইগার হেড কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহের। বিসিবি সভাপতি হিসেবে নাজমুল হাসান পাপনের স্থলাভিষিক্ত হওয়া ফারুক আহমেদ নিজের প্রথম সংবাদ সম্মেলনেই জানিয়েছিলেন হাথুরুর বিকল্প কোচ খোঁজার কথা। যদিও পাকিস্তান সিরিজে অবিশ্বাস্য ফল এবং পরপরই ভারতের মাটিতে সিরিজ। সব মিলিয়ে হাথুরু অধ্যায় অনেকটা চাপা পড়ে গিয়েছিল।
তবে ভারতের বিপক্ষে দুই ফরম্যাটের সিরিজেই ভরাডুবির পর আবারও নড়েচড়ে বসে বিসিবি। আসন্ন দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সিরিজের আগেই বরখাস্ত হলেন হাথুরুসিংহে।
আজ (মঙ্গলবার) মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদ হাথুরুকে বরখাস্তের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
আসন্ন দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজের দিন কয়েক আগেই বরখাস্ত হলেন হাথুরুসিংহে। জানা গেছে, লঙ্কান এই কোচের স্থলাভিষিক্ত হিসেবে অন্তর্বর্তীকালীন হেড কোচের দায়িত্ব পাচ্ছেন ফিল সিমন্স। আগামী বছরের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করবেন তিনি।
আগামী ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠেয় চ্যাম্পিয়নস ট্রফি পর্যন্ত কোচ হিসেবে হাথুরুসিংহের মেয়াদ ছিল। কিন্তু তার আগেই বরখাস্ত করল বিসিবি। নতুন কোচ হিসেবে ক্যারিবীয় কিংবদন্তি ফিল সিমন্সের নাম ঘোষণা করেন ফারুক। তিনি বলেন, ‘বর্তমান কোচের ব্যাপারে আমরা চেষ্টা করছিলাম। দুই-তিনটা ঘটনা ঘটেছে। এটা দলের জন্য ভালো উদাহরণ ছিল না। শোকজ ও সাসপেনশন দেওয়া হয়েছে। বরখাস্ত করার আগে আমরা তাকে নিয়ম মেনে শোকজ নোটিশ করেছি। এরপর আমরা বরখাস্ত করব। চ্যাম্পিয়নস ট্রফি পর্যন্ত কোচ ফিল সিমন্স। ’
হাথুরুর বিদায়ের ব্যাপারটি মোটামুটি নিশ্চিত ছিল। তাকে বরখাস্ত করার সিদ্ধান্ত আগেই নিয়ে ফেলেছিল বিসিবি। গতকাল রাত থেকেই চাউর হয়, হাথুরু বরখাস্ত হচ্ছেন। অবশেষে আজ তা নিশ্চিত করলেন বোর্ড সভাপতি। মূলত ২০২৩ বিশ্বকাপের সময়ের একটি ঘটনাকে কেন্দ্র করেই কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে হাথুরুকে। ৪৮ ঘণ্টা পর বরখাস্ত হয়ে যাবেন তিনি। তাকে বরখাস্ত করার পেছনে অনুমোদন ছাড়াই ছুটিতে যাওয়াকেও কারণ হিসেবে দেখিয়েছেন ফারুক।
হাথুরুকে বরখাস্ত করতে যাওয়ার কারণ জানিয়ে ফারুক বলেন, ‘দুই-তিনটা ঘটনা ঘটেছে যেগুলো মেনে নেওয়া একজন সাবেক খেলোয়াড় হিসেবে আমার কাছে খুব পীড়াদায়ক ছিল। এটা ভালো উদাহরণ ছিল না আরকি। তাই ওইদিক বিবেচনা করে আমরা আজকে একটা শোকজ নোটিশ দিয়েছি। আপনারা জানেন এই প্রক্রিয়াগুলো খুব একটা সহজ নয়। আইনি দিক থাকে এগুলোর।
টাইগারদের প্রধান কোচ হিসেবে এর আগে ২০১৪ সালের মে থেকে ২০১৭ সালের অক্টোবর পর্যন্ত প্রথম মেয়াদে দায়িত্বে ছিলেন হাথুরু। সেবার ২০১৯ বিশ্বকাপ পর্যন্ত তার চুক্তির মেয়াদ থাকলেও কিন্তু মাঝপথে দায়িত্ব ছেড়েছিলেন। আর এবার হলেন বরখাস্ত।
দ্বিতীয়বার দায়িত্ব নেওয়া পর হাথুরুর বিরুদ্ধে বেশকিছু অভিযোগ উঠতে শুরু করেছিল। বিসিবির এক রিপোর্টে উঠে এসেছিল, ২০২৩ ওয়ানডে বিশ্বকাপে জাতীয় দলের এক ক্রিকেটারের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেছিলেন হাথুরু। এছাড়া দলে সিনিয়র-জুনিয়র বিভেদ তৈরির অভিযোগও আছে তার বিরুদ্ধে। সর্বশেষ বিসিবি প্রধান জানালেন, ছুটি সংক্রান্ত ঝামেলাও ছিল তার।
খুলনা গেজেট/এমএম