বাগেরহাট থেকে মেহেরপুর করোনা সংক্রমনের হার ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে যশোর জেলা প্রশাসক পশুর হাট বন্ধ করে দিয়েছেন। বুধবার অন্যান্য হাটের ব্যাপারে মন্ত্রণালয় সিদ্ধান্ত জানাবে। খুলনা বিভাগের ৫৯ উপজেলার ১৫৪ টি হাটের ইজারাদাররা দুশ্চিন্তায় রয়েছে। বিভাগের ৮ লাখ ৭৮ হাজার পশু নিয়ে কপালে ভাঁজ পড়েছে খামারীদের। উল্লেখিত পরিমাণ পশুর মূল্য ৬ হাজার কোটি টাকা।
বাগেরহাটের শরণখোলার অধিকাংশ গ্রাম, নড়াইল ও যশোরে সংক্রমনের হার বেড়েছে। সাতক্ষীরায় প্রশাসন হিমশিম খাচ্ছে। ফলে গরুর হাট চালু করে ঝুঁকি নিতে চাচ্ছে না জেলা প্রশাসন। খামারী ও ব্যবসায়ীদের কথা চিন্তা করে মন্ত্রণালয় এ ব্যাপারে বুধবার সিদ্ধান্ত নেবে।
কোরবানীর হাট উপলক্ষে ইজারাদাররা আগে থকেই প্রস্তুতি নিয়েছেন। মূলত কোরবানীর সময় মোটা অংকের রাজস্ব আদায় হয়। বরাবরের মত এবারও খুলনায় ২৮টি, বাগেরহাটে ২৭টি, সাতক্ষীরায় ১৫টি, যশোরে ১০টি, মেহেরপুরে ৬টি, মাগুরায় ১৪টি, নড়াইলে ৯টি, কুষ্টিয়ায় ১১ টি, চুয়াডাঙ্গায় ৬টি ও ঝিনাইদহে ২৪টি হাট বসার প্রস্তুতি নেয়। নড়াইলের মাঠপাড়া ও লাখোশী এলাকায় সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ায় প্রশাসন হাট বসাতে রাজি হচ্ছে না।
প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের সূত্র জানিয়েছেন, ৫৯টি উপজেলায় খামারীরা ৮ লাখ ৭৮ হাজার ২৪২টি গবাদী পশু মোটাতাজা করেছে। এবারের চাহিদা ৭ লাখ ১১ হাজার ৯৬৭টি। প্রতিটি গরুর মূল্য ৮০ হাজার টাকা হিসেবে খামারীরা ৬ হাজার কোটি টাকার পশু লালন পালন করেছে। গ্রামীণ এ অর্থনীতি নির্ভর করছে পশুর হাট বসার উপর।
নড়াইল জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ মারুফ হোসেন জানান, এখানে বড় আকারের গরুর চাহিদা খুবই কম। এ পর্যন্ত মাত্র ১৫/২০টি গরু বিক্রি হয়েছে। জেলায় সংক্রমণের হার বৃদ্ধি পাওয়ায় জেলা প্রশাসন স্থায়ী হাটগুলো চালুর অনুমতি দিচ্ছে না। খামারীরা দুশ্চিন্তায় পড়েছে।
সাতক্ষীরা জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মোঃ শহিদুল ইসলাম বলেন, ১৫টি স্থায়ী হাটে ইজারাদাররা চালু করার জন্য বারবার সুপারিশ করছে। প্রশাসন রাজি নয়। সীমান্তবর্তী জেলায় সংক্রমণের হার বেড়েছে। চোরাইপথে ভারত থেকে যাতে গরু আসতে না পারে সে ব্যাপারে স্বরাষ্ট্র ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় নির্দেশনা দিয়েছেন।
যশোর জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মোঃ বখতিয়ার হোসেন তথ্য দিয়েছেন, জেলা প্রশাসন ১০টি স্থায়ী হাট সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করে দিয়েছে। দুই একদিনের মধ্যে পরিস্থিতি পরিবর্তন হলে হয়তো নতুন সিদ্ধান্ত আসতে পারে। খামারী এবং ফড়িয়ারা বড়ো অংকের টাকা এ খাতে বিনিয়োগ করেছে।
উল্লেখ্য, কোরবানী পশুরহাটের ওপর গ্রামীণ অর্থনীতি অনেকখানী নির্ভরশীল। গরুর খাবার, বিছলী, দানাদার, রাখালের পারিশ্রমিক, ফড়িয়াদের দাদনের পাশাপাশি চামড়া ব্যবসায়ীরা কোরবানীর পশুর উপর পরিপূর্ণ নির্ভরশীল। কোরবানী পশুর হাটের ওপর দক্ষিণের ৬ হাজার কোটি টাকার অর্থনীতি জড়িয়ে রয়েছে।
খুলনা গেজেট/এমএইচবি