ঝিনাইদহের হরিণাকুণ্ডুতে উপবৃত্তি দেওয়ার নামে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। তালিকায় নাম অন্তর্ভুক্তি ও অনলাইনে আবেদন করার নাম করে অন্তত ১০ জন শিক্ষার্থীর কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন সোনাতনপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অফিস সহকারী লোকমান হোসেন। এমন অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকরা।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সমন্বিত শিক্ষা উপবৃত্তি কর্মসূচির আওতায় ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ষষ্ঠ থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত উপজেলার ৫৮টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের নামের তালিকা পাঠানো হয়। পরে ২০১৯ সালে অধিদপ্তরের নির্দেশনায় ফের অনলাইনে উপবৃত্তির আবেদন করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো। নীতিমালা অনুযায়ী উপবৃত্তিপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীরা টিউশন ফিসহ অন্যান্য ফি মওকুফের আওতায় থাকবে। উপবৃত্তির তালিকাপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে যে কোনো ধরনের অর্থ আদায়কে নীতিমালা পরিপন্থি হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। তবে এই নীতিমালা উপেক্ষা করে ওই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে এক হাজার থেকে দেড় হাজার টাকা পর্যন্ত হাতিয়ে নিয়েছেন বলে জানা গেছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ওই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অফিস সহকারী লোকমান হোসেন বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থীর বাড়ি বাড়ি গিয়ে উপবৃত্তি করিয়ে দেওয়ার নাম করে অভিভাবকদের কাছ থেকে টাকা আদায় করেন। দীর্ঘদিন ধরে ওইসব শিক্ষার্থী উপবৃত্তির আওতায় না আসায় তাদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।
উপজেলার সোনাতন গ্রামের নবম শ্রেণিপড়ূয়া শিক্ষার্থী অর্পা খাতুনের অভিভাবক সুবহান মণ্ডল জানান, লোকমান হোসেন বাড়িতে এসে তার মেয়েকে উপবৃত্তি করিয়ে দেওয়া হবে বলে এক হাজার টাকা নিয়েছে। কিন্তু প্রায় নয় মাস অতিবাহিত হওয়ার পরও তার মেয়ে উপবৃত্তি না পাওয়ায় তিনি বুঝতে পারেন প্রতারণা করে এই টাকা হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে।
সুবহান মণ্ডলের মতো এমন অভিযোগ ওই বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী শাবনাজসহ অন্তত আরও দশ অভিভাবকের।
তবে এ অভিযোগ অস্বীকার করে ওই অফিস সহকারী লোকমান হোসেন জানান, স্থানীয় দলাদলির কারণে তার নামে মিথ্যা অপবাদ দেওয়া হচ্ছে। ওইসব শিক্ষার্থী ২০১৯ সালের জুন মাসে অষ্টম শ্রেণিতে ভর্তি হওয়ার সময় ভর্তি ফি, রেজিস্ট্রেশন ফি ও সেশন চার্জের টাকা ছাড়া তাদের কাছ থেকে অতিরিক্ত কোনো টাকা নেওয়া হয়নি।
ওই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক শাহাবুদ্দিন আহম্মেদ বলেন, শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তির জন্য অনলাইনে আবেদন করা হয়। কর্তৃপক্ষ তালিকা যাচাই-বাছাই করে চূড়ান্ত করেন। কারা এই উপবৃত্তির জন্য তালিকাভুক্ত হবে, সেটা তাদের জানার সুযোগ নেই। তাই এমন অভিযোগ সঠিক নয়।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ফজলুল হক বলেন, এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
খুলনা গেজেট/এনএম