সকাল সাড়ে ১০ টা। বটিয়াঘাটা থানার ডিউটি অফিসারের মোবাইলে ফোন আসে। অপর প্রান্ত থেকে জানানো হয় জলমা ইউনিয়নের খালপাড় মসজিদ সংলগ্ন সুলতান আক্তারের খালি প্লটের মধ্যে অজ্ঞাত ব্যক্তির লাশ পড়ে রয়েছে। সাথে সাথে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। খোঁজ নিতে থাকে লাশটি কার। দু’ঘন্টা পর ভিকটিমের পরিচয় মেলে।
একব্যক্তি বলেন লাশটি তার চাচাতো ভাইয়ের। নাম তার আইয়ুব আলী মোল্লা। পেশায় একজন ইজিবাইক চালক। খুনিকে খুঁজতে পুলিশের গায়ের গাম ঝরছে। খুনি দূরের কেউ নয়, ভিকটিমের পূর্ব পরিচিত। নাম তার আলাউদ্দিন চৌধুরী ওরফে রানা। মাত্র ২৬ হাজার টাকার জন্য আইয়ুবকে খুন করে সে। এমন তথ্য জানিয়েছে পুলিশ।
পুলিশ আরও জানায়, আইয়ুবের কাছে ২৬ হাজার টাকা পেত আলাউদ্দীন রানা । টাকা দিতে বিলম্ব হওয়ায় তাকে হত্যার পরিকল্পনা করে সে। পরিকল্পনা অনুযায়ী ২৩ সেপ্টেম্বর বিকেল তিন টার দিকে আইয়ুবকে মোবাইল করে রানা। ফোন পেয়ে মল্লিকের মোড়ে উপস্থিত হয় আইয়ুব। এরপর পানখালী গ্রামের দিকে যাওয়ার উদ্দেশে দু’জন রওনা হয়। রাতে এক সঙ্গে খাওয়া দাওয়াও করে তারা।
রাত পৌনে ১১ টার দিকে ছয়ঘড়িয়া খালপাড় মসজিদ সংলগ্ন সুলতান আক্তারের খালি প্লটে নিয়ে যায় ভিকটিমকে। এরপর একটি ভারী হাতুড়ি দিয়ে তার মাথায় আঘাত করতে থাকে রানা। মৃত্যু নিশ্চিত ভেবে রানা ইজিবাইক চালিয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। পরে নিহতের ইজিবাইক মল্লিকের মোড়ে এনে ভেঙ্গে চুরে তা বিক্রি করে রানা।
বটিয়াঘাটা থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ জাহিদুর রহমান জানান, কিছুদিন আগে আইয়ুবকে ভাঙ্গারী বেচতে দেয় রানা। ভাঙ্গারী বিক্রি করে ২৫ হাজার টাকা আইয়ুব কাছে রেখে দেয়। এরপর পারিবারিক অভাব অনটনের কথা বলে আরও এক হাজার টাকা রানার কাছ থেকে ধার নেয় সে। বিভিন্ন সময় আইযুবকে টাকার জন্য চাপ দিতে থাকে। টাকা নিয়ে ঘুরোঘুরি করতে থাকে। এক সময় আইয়ুবকে খুন করার সিদ্ধান্ত নেয়। ওই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তাকে রাত পৌনে ১১ টার দিকে ঘটনাস্থলে নিয়ে মাথায় হাতুড়ি পেটা করে খুন করে।
ভিকটিমের মা শুক্রবার (২৪ সেপ্টেম্বর) আলাউদ্দিন চৌধুরী রানার নাম উল্লেখ করে বাটিয়াঘাটা থানায় মামলা দায়ের করেন। পরে তাকে ছয়ঘড়িয়া বোনের বাসা থেকে আটক করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে হত্যাকান্ডে নিজের সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করে সে। হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত হাতুড়ি উদ্ধার করেছে পুলিশ। ইজিবাইকের ব্যাপারে তদন্ত চলছে। হত্যাকান্ডের সাথে আর কেউ জড়িত আছে কি না সে বিষয়েও তদন্ত চলেছে বলে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই আবু জাফর আরও জানিয়েছেন।
খুলনা গেজেট/এএ